তৃতীয় দিন শেষে তিন শ’র ওপারে বাংলাদেশ

ষষ্ঠ উইকেটে লিটন ও মুশফিক মিলে ৯৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেন। দুজনেই করেছেন ফিফটিএএফপি

রাওয়ালপিন্ডির পরিষ্কার আকাশে বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা ছিল না। ঘাসের উইকেটও কিছুটা ধূসর হতে শুরু করেছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের তৃতীয় দিনটা যে ব্যাটসম্যানদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে, সেটা আগে থেকেই মনে হচ্ছিল।

পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর ১২ ওভারে ২৭ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করা বাংলাদেশ দলের সামনে ছিল বড় রান যোগ করার সুযোগ। সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হকের পর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের ফিফটির সৌজন্যে বাংলাদেশ তা করেছেও। ৯২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ১৩২ রান পিছিয়ে নাজমুল হোসেনের দল।

আরও পড়ুন
ফিফটি করেছেন মুমিনুল ও সাদমান ইসলাম
এএফপি

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনটা বাংলাদেশেরই। তবে এমন দিনেও আক্ষেপ আছে। মাহমুদুল হাসানের চোটের কারণে আড়াই বছর পর টেস্ট দলে ফেরা ওপেনার সাদমান সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে আউট হয়েছেন। ১৮৩ বলে ১২টি চারে ৯৩ রান করে থামে সাদমানের ইনিংস। ফিফটি করে আউট হয়েছেন মুমিনুলও। ৭৬ বলে ৫০ রানে আউট হন এই বাঁহাতি। আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকও ফিফটি করেছেন, ১২২ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তৃতীয় দিনের শেষ বেলায় ফিফটি স্পর্শ করেন লিটন, ৫৮ বলে ৫২ রান নিয়ে উইকেটে আছেন তিনি।

দিনের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। নাসিম শাহর করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে লেট কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তোলেন জাকির হাসান। মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত ক্যাচে ৫৮ বল খেলে ১ বাউন্ডারিতে ১২ রানে থামে জাকিরের ইনিংস। ক্রিজে সময় কাটিয়ে আউট হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও। ২৭তম ওভারে খুররম শেহজাদের রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ভেতরে আসা বলে বোল্ড হন নাজমুল। তাঁর ১৬ রান এসেছে ৪২ বলে।

আরও পড়ুন
৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাদমান
এএফপি

দলের রান তখন ২ উইকেটে ৫৩। নতুন বলের ধারও তেমন ছিল না। মুমিনুল সেই সুবিধা কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে। ইনিংসের শুরু থেকেই তিনি রানের খোঁজে ছিলেন। সাদমান খেলেছেন দেখেশুনে, তাঁর সহজাত গতিতে। মুমিনুলকে নিয়ে ৯৭ রান যোগ করে পাকিস্তানের বোলারদের হতাশা বাড়াতে থাকেন তিনি। ৫২তম ওভারে খুররম এসে জুটি ভাঙেন। নাজমুলের মতোই রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ভেতরে আসা বলে মুমিনুলের স্টাম্প ভাঙেন তিনি। ৫ বাউন্ডারিতে ৭৬ বলে ৫০ রানে থামে তাঁর ইনিংস। একই ভুল করেছেন সাদমানও। আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকের সঙ্গে আরও ৫২ রান যোগ করে মোহাম্মদ আলীর বলে বোল্ড হন এই ওপেনার।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। ১৬ বলে ১৫ রান করে সাইম আইয়ুবের বলে কাভারে আলগা শট খেলে ক্যাচ তোলেন তিনি। ইনিংসের ৭৩তম ওভারের ঘটনা এটি। তখন দলের রান ৫ উইকেটে ২১৮। দিনের বাকি সময়টা দাপট দেখিয়েছে মুশফিক-লিটন জুটি। দুজন মিলে ৯৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেন। মুশফিকের ফিফটি এসেছে ১০৪ বলে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ১৫ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন মুশফিক। ৫২ বলে ফিফটি করেছেন লিটন, এর মধ্যে নাসিমের করা এক ওভারেই তিনটি চার ও এক ছক্কায় ১৮ রান নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১১৩ ওভারে ৪৪৮/৬ (ডি.)

(রিজওয়ান ১৭১*, শাকিল ১৪১, আইয়ুব ৫৬; হাসান ২৩–৪–৭০–২, শরীফুল ২৩–৪–৭৭–২)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯২ ওভারে ৩১৬/৫

(সাদমান ৯৩, মুশফিক ৫৫*, লিটন ৫২*, মুমিনুল ৫০, নাজমুল ১৬, সাকিব ১৫, জাকির ১২; শেহজাদ ১৯–৩–৪৭–২, আইয়ুব ৫–১–২৩–১, আলী ১৫–২–৪২–১, নাসিম ২০–৪–৭৭–১, সালমান ১৫–১–৫৩–০, আফ্রিদি ১৮–৩–৫৫–০)।

* ৩য় দিন শেষে বাংলাদেশ ১৩২ রানে পিছিয়ে।

আরও পড়ুন