টাংকে নিয়ে বাজি, ১৪ বছর অপেক্ষার পর মিলল ৫০ হাজার পাউন্ড
লর্ডসে জেমস অ্যান্ডারসনের কাছ থেকে আজ ইংল্যান্ডের ৭১১ নম্বর টেস্ট ক্যাপটি পেয়েছেন জশ টাং। বাবা, মা, সঙ্গিনী, পুত্র—সবাই সাক্ষী হয়েছেন বিশেষ মুহূর্তটির। টিম পাইপার গ্যালারিতে ছিলেন কি না, ঠিক নিশ্চিত নয়। না থাকলেও হয়তো টেলিভিশনে দেখে থাকবেন টাংয়ের টেস্ট অভিষেকের মুহূর্তটি। এ মুহূর্ত যে পাইপারের কাছে একই সঙ্গে আবেগের এবং অর্থপ্রাপ্তির আনন্দেরও!
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ টাংয়ের টেস্ট অভিষেক পাইপারকে এনে দিয়েছে ৫০ হাজার পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৬৬ লাখ ৬৯ হাজার! সেটির জন্য অবশ্য ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে।
১৪ বছর আগে ১১ বছর বয়সী টাংকে খেলতে দেখে বাজি ধরেছিলেন পাইপার। তাঁর বাজির বিষয় ছিল, একদিন টাং ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলবেন। ৫০০-১ দরে তিনি বাজি ধরেছিলেন ১০০ পাউন্ড।
টাংয়ের বাবা ফিলের ক্লাব-সতীর্থ ছিলেন পাইপার। তিনি নিজেও স্পিনার ছিলেন, টাং-ও তখন লেগ স্পিন করতেন। নিজের অভিজ্ঞতায় ভর করেই অমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন পাইপার। বিবিসি স্পোর্টকে তিনি বলেছেন, ‘ছোট বাচ্চাটা লেগ স্পিন করত, গুগলি ও টপ স্পিন করতে পারত শেন ওয়ার্নের মতো!’
টাং অবশ্য লেগ স্পিনচর্চা বাদ দিয়ে দেন উস্টারশায়ার একাডেমিতে এসে। তবে পাইপার ঠিকই নজর রাখেন তাঁর ওপর। আর করেন অপেক্ষা, ‘আমি ওই রসিদ এত বছর ধরে আমার আলমারিতে রেখে দিয়েছি। ভেবেছি, “১০০ পাউন্ড খরচ করাটা ভুল হয়নি”। যদি শেষ পর্যন্ত সে না-ই পারে, তবু আমরা গর্বিত তাকে নিয়ে। টেস্ট দলে তার সুযোগ পাওয়াটা আসলে একটা বোনাস।’
উস্টারশায়ার পেসারের এভাবে টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়াটা একরকম আচমকাই। কাঁধের চোটে বছরখানেক আগেও খেলা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করেছিলেন তিনি। তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর অবশেষে আবার খেলায় ফিরতে পারেন, এরপর ডাক পান ইংল্যান্ড লায়নস দলে।
টেস্ট দলে ডাক পেলেও অভিষেক হয়ে যাবে, সেটিও সেভাবে ভাবতে পারেননি কেউ। তবে অনুশীলনে তাঁকে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। জেমস অ্যান্ডারসন, ওলি রবিনসনের চোটের সঙ্গে তাঁর বাড়তি পেস জায়গা করে দিয়েছে দলে।
টাং যেমন হাল ছাড়েননি, তেমনি তাঁকে নিয়ে এত দিন আশা ছাড়েননি পাইপারও, ‘সে কত চোট পেল, আমি কিন্তু তাকে নিয়ে আশা ছাড়িনি। ভেবেছি—“হতেও তো পারে”। তবে গত দুই সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহে যেভাবে সবকিছু বদলে গেল, সেগুলো আসলেই খ্যাপাটে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এ টেস্ট দিয়ে এবারের গ্রীষ্ম শুরু করছে ইংল্যান্ড। আগামী ১৬ জুন থেকে শুরু হবে অ্যাশেজ। এ টেস্টে ভালো কিছু করে দেখাতে পারলে টাং অ্যাশেজে ইংল্যান্ড দল থাকার আশা করতেই পারেন।