তাহলে ওয়ানডে কি সূর্যকুমারের জন্য নয়
একেই বলে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখা!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উড়তে থাকা সূর্যকুমার যাদবকে মাটিতে নামিয়ে আনল অস্ট্রেলিয়া। মিচেল স্টার্কদের বিপক্ষে সিরিজের তিন ম্যাচেই শূন্য রানেই আউট হয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। শুধু কী শূন্য, সব ম্যাচেই আউট হয়েছেন প্রথম বলে!
দ্বিপক্ষীয় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সব কটিতেই শূন্য রানে আউট—ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম। সূর্যর টানা তিন ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নেরও। ওয়ানডে ক্রিকেটটা কী তবে সূর্যকুমারের জন্য নয়?
পরিসংখ্যান কিন্তু সূর্যর পক্ষে কথা বলছে না। শুধু এই সিরিজে নয় ওয়ানডে ক্রিকেটেই কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না সূর্যকুমার। এই সংস্করণে খেলা সর্বশেষ ১৫ ইনিংসে তাঁর সর্বোচ্চ রান ৩৪। সব মিলিয়ে ২১ ইনিংসে করেছেন মাত্র দুটি ফিফটি, গড় ২৪.০৫। যেখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলা ৪৬ ইনিংসের মধ্যে তাঁর ফিফটি ১৩টি, গড় ৪৬.৫২।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেমনটা হয়েছে, সামনে হয়তো এমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটে সূর্যর পরিসংখ্যান তাঁর কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। যে কারণে এই জায়গা সঞ্জু স্যামসনকে দেখতে চাইছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর, ‘১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের সঙ্গেও এমনটা হয় না। আশা করছি এমনটা আর তার সঙ্গে হবে না। আমার মনে হয় ভারতের সঞ্জু স্যামসন বা অন্য কাউকে এ জায়গায় দেখা উচিত। আইপিএলে ভালো খেললে ভারত হয়তো আবার তাঁকে খেলাতে চাইবে। তবে আমার মনে হয় ভারতের স্যামসনের দিকেও চোখ দেওয়া উচিত।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ভারতীয় সমর্থক কড়া ভাষায় সূর্যর সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও যে শেষ ওয়ানডেতে সূর্যর এমন আউট হওয়ায় হতাশ, সেটা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট।
তবে রোহিতের মতে এমনটা হতে পারে যে কারও সঙ্গেই, ‘এই ঘটনা যে কারও সঙ্গে ঘটতে পারে। ও মাত্র তিন বল খেলেছে। আজ(গতকাল) সূর্যকুমার ভালো বলে আউট হয়নি। ও ভুল শট খেলেছে। ওর সামনে গিয়ে খেলা উচিত ছিল। সূর্য যদিও এটা জানে। ও স্পিন খুব ভালো খেলে। সে কারণেই আমরা ওকে শেষ ১৫-২০ ওভারে খেলার ভূমিকাটা দিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম সূর্য ওর সহজাত খেলাটা যেন খেলতে পারে।’
টানা তিন ম্যাচে শূন্য রানে আউট কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন নয়। একাধিক সিরিজ ও টুর্নামেন্ট মিলিয়ে টানা তিনটি ডাক আছে আরও পাঁচ ভারতীয়র। যাঁদের মধ্যে একজনই ব্যাটসম্যান—শচীন টেন্ডুলকার (১৯৯৪)।
অন্যরা হচ্ছেন অনিল কুম্বলে (১৯৯৬), জহির খান (২০০৩-০৪), ইশান্ত শর্মা (২০১০-১১), যশপ্রীত বুমরা (২০১৭-১৯)। অন্তত তাঁদের মধ্যে একটা নাম শচীন থাকায় অনুপ্রেরণাও নিতে পারেন সূর্যকুমার। কারণ, শচীন টানা তিন শূন্যর পরের ৮ ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরিসহ পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন ৬টি। আর কদিন বাদেই তো আইপিএল। তিন শূন্যর আক্ষেপ ‘নিজের মঞ্চে’ জ্বলে উঠেই হয়তো ভুলিয়ে দিতে চাইবেন সূর্যকুমার।