ক্যারির স্মরণীয় টেস্ট, হেনরির আক্ষেপ, অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড জয়
ক্রাইস্টচার্চের ম্যাচটি রং বদলেছে বারবার। প্রথম ইনিংসে ১০৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড, অথচ সম্ভাব্য শেষ দিনটি তারাই শুরু করেছিল ফেবারিট হিসেবে। ২৭৯ রানের লক্ষ্যে আজ একসময় ৮০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল মার্শ ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বীরত্বে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে দারুণ এক জয়।
হ্যাগলি ওভালের ম্যাচটি রেকর্ড বইয়ের যেসব জায়গায় ছাপ রাখল—
রান তাড়ায় ৮০ বা এর কম রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও টেস্টে জয়ের ঘটনা আছে ২৬টি। তবে এর কোনোটিতেই অস্ট্রেলিয়ার এ ম্যাচের মতো (২৭৯ রান) লক্ষ্য ছিল না। আগের রেকর্ডটি ইংল্যান্ডের—১৯০২ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেবার ২৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও গিলবার্ট জেসপের সেঞ্চুরি ও জর্জ হার্স্টের ফিফটিতে ১ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড। টেস্ট ইতিহাসে ১ উইকেটে জেতার প্রথম ঘটনাও ছিল সেটি।
২০তম বার চতুর্থ ইনিংসে কমপক্ষে ২৫০ রান তাড়া করে জিতল অস্ট্রেলিয়া, যা অন্য যেকোনো দলের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ বার এত বেশি রানের লক্ষ্যে জেতার রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ১২ বার।
দ্বিতীয়বার উইকেটের হিসাবে এত কম ব্যবধানে হারল নিউজিল্যান্ড। এর আগে একবারই ৩ উইকেটে হেরেছিল তারা, সেটিও অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ২০১৫ সালে অ্যাডিলেডে ১৮৭ রানের লক্ষ্যে শেষ দিকে গিয়ে দ্রুত উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এবারের হারটি তাই একটু বেশিই পোড়ানোর কথা কিউইদের।
সফল রান তাড়ায় স্বীকৃত উইকেটকিপার হিসেবে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস অ্যালেক্স ক্যারির। সর্বোচ্চ ১৪৯* রানের ইনিংসটি অ্যাডাম গিলক্রিস্টের। ১৯৯৯ সালে হোবার্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৬৯ রানের লক্ষ্যে ১২৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৬৩ বলে ১৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পথে গিলক্রিস্ট তিনে নামা জাস্টিন ল্যাঙ্গারের সঙ্গে গড়েছিলেন ২৩৮ রানের জুটি।
ষষ্ঠ উইকেটে ক্যারি ও মিচেল মার্শের জুটির রান। সফল রান তাড়ায় ৮০ বা এর কম রানে ৫ উইকেট হারানোর পর যা সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে চতুর্থ ইনিংসে ৮০ বা এর কম রানে ৫ উইকেট হারানোর পর যা ষষ্ঠ উইকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংসের পাশাপাশি ১০টি ডিসমিসালের সৌজন্যে ক্যারিই হয়েছেন ম্যাচসেরা। এক ম্যাচে স্বীকৃত উইকেটকিপার হিসেবে কমপক্ষে একটি ফিফটি ও কমপক্ষে ১০টি ডিসমিসালের এমন ‘ডাবল’-এর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান উইকেটকিপার তিনি। ২০০০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ১০টি ডিসমিসালের সঙ্গে প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন গিলক্রিস্ট। এ দুই অস্ট্রেলিয়ান ছাড়া এমন কীর্তি আছে আর দুজনের—দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স (প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, জোহানেসবার্গ ২০১৩) ও পাকিস্তানের সরফরাজ আহমেদের (প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, জোহানেসবার্গ ২০১৯)।
হারা ম্যাচে কোনো কিউই বোলারের চতুর্থ সেরা বোলিং ফিগার এখন ম্যাট হেনরির। প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি, সিরিজে ২ ম্যাচে কিউই পেসার নিয়েছেন ১৭টি উইকেট। নিউজিল্যান্ড হেরেছে, এমন ২ ম্যাচের সিরিজে যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ (২০২১ সালে এজাজ প্যাটেলের সঙ্গে)। ১৭ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১০০ রান করে হেনরিই হয়েছেন সিরিজসেরা, তবে তা হয়ে থেকেছে সান্ত্বনা পুরস্কার হয়েই।