পিসিবি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ‘দ্বিধাহীনভাবে বিভিন্ন অপকর্মে’র অভিযোগ
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সভাপতি জাকা আশরাফের বিরুদ্ধে ‘দ্বিধাহীনভাবে বিভিন্ন অপকর্ম ও অসাংবিধানিক কিছু সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তাঁর নিজের ব্যবস্থাপনা কমিটিরই এক সদস্য। জাকা আশরাফকে চার মাসের জন্য পিসিবি প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আগামী রোববার তাঁর এই মেয়াদ শেষ হবে।
তবে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো জানিয়েছে, ৫ নভেম্বরই যে আশরাফের পিসিবি প্রধান হিসেবে থাকার শেষ দিন হবে, সে নিশ্চয়তা নেই। পিসিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির সেই সদস্যের অভিযোগনামা অনুযায়ী, আশরাফের সময়েই বোর্ডে অসন্তোষ ছড়িয়েছে সবচেয়ে বেশি। সেটি প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই।
আশরাফ ও ব্যবস্থাপনা কমিটিকে পাঠানো ই-মেইলে অভিযোগগুলো করেছেন জুলফিকার মালিক। ক্রিকইনফো এই ই-মেইল দেখেছে। মেইলের একটি কপি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং আন্তপ্রাদেশিক সমন্বয় (আইপিসি) মন্ত্রণালয়েও। পাকিস্তানে ক্রীড়াঙ্গনের দেখভাল করে এই মন্ত্রণালয়।
আশরাফ ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে জুলফিকার মালিক ই–মেইলে যেসব অভিযোগ করেছেন সেগুলো নিম্নরূপ—
* দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত না নিয়ে বোর্ডের প্রতিদিনের কার্যক্রম পরিচালনা করার যে বৈধ ও প্রস্তাবিত ইশতেহার, তা মানতে ব্যর্থ।
* অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা যাতে শেষ হয় এবং চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন, সে লক্ষ্যে বোর্ড নির্বাচন আয়োজনের আইপিসির নির্দেশনা উপেক্ষা করা।
* লেখাপড়াসম্পর্কিত ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদানে ব্যর্থ, যেটা পিসিবি চেয়ারম্যান হওয়ার পূর্বশর্ত।
* বোর্ডের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ছেলে চৌধুরী খান মোহাম্মদের হস্তক্ষেপের পথ তৈরি করে দেওয়া।
* পিসিবির নির্বাচন কমিশনের অফিসকে অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা এবং কারসাজির নির্বাচন আয়োজন করা।
ই-মেইলে পাঠানো চিঠিতে জুলফিকার মালিক বলেন, ‘দ্বিধাহীনভাবে বিভিন্ন অপকর্ম এবং অসাংবিধানিক কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেগুলো আমি সামনে নিয়ে আসতে চাই।’
তাঁর দাবি, এই ই-মেইল পাঠানোর মাধ্যমে ‘বেশির ভাগ সদস্যের সম্মতি ছাড়াই যেসব অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত ও অপকর্ম করা হয়েছে, সেসব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চান নিজেকে।’ চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘মাসে আড়াই মিলিয়ন রুপিতে তিন বছরের জন্য প্রধান নির্বাচককে (ইনজামাম–উল–হক, পদত্যাগও করেছেন) নিয়োগ, কিছু পরিচালক নিয়োগ, কনসালট্যান্ট নিয়োগ, বড় বড় বাজেট পাস করা, অনেক খরচে আইনি সাহায্য নেওয়া এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ অফিশিয়ালকে সরিয়ে দেওয়া দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তের মধ্যে পড়ে, যেগুলো সরাসরি ইশতেহারবিরোধী। আইপিসি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত কোনো খবর পৌঁছাতে না দেওয়া আর চেয়ারম্যান নির্বাচন না দেওয়া সর্বোচ্চ শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ, যা করেছে জাকা আশরাফের ব্যবস্থাপনা কমিটি।’
পিসিবি এর উত্তরে বলেছে, ‘সাংবিধানিকভাবেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিসিবির প্রাত্যহিক কাজগুলোর জন্যই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ গত ৩ অক্টোবর এই ই-মেইল পাঠানো হয়। এক সপ্তাহ পর পিসিবির সব কাজকর্মের প্রতিবেদন চেয়ে পাঠায় আইপিসি। প্রতিবেদন ‘খুব দ্রুত’ জমা দিতে বলা হলেও পিসিবি সাড়া দেয়নি এখনো।