ক্লাসেন-ইয়ানসেন ঝড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রানের পাহাড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা
দিল্লিতে ৪২৮ রান, মুম্বাইয়ে ৩৯৯। এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষকে আরও একবার রান বন্যায় ভাসাল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার তাদের প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-স্বর্গে আজ ইংল্যান্ড টসে জিতে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায়। আর সে সুযোগটা দুই হাতে লুফে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
৭ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রান করেছে তারা। রিজা হেনড্রিকস (৮৫), রেসি ফন ডার ডুসেনের (৬০) অর্ধশতকের পর হাইনরিখ ক্লাসেন (১০৯) ও মার্কো ইয়ানসেনের (৭৫) বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অথচ প্রোটিয়াদের ইনিংসের শুরুটা প্রত্যাশামতো হয়নি। তিন ম্যাচ খেলে শতক করেছেন দুটিতে। কুইন্টন ডি ককের বিশ্বকাপটা ভালোই কাটছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালো করতে হলে ডি কককে দ্রুত বিদায় করতেই হতো।
খেলা যেহেতু ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে, উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলেও নতুন বলে থাকে বাউন্স, কিছুটা সুইংও। ইংল্যান্ড রিচ টপলি ও ডেভিড উইলিকে দলে নিয়েছে সেটি কাজে লাগানোর জন্য। ভাগ্য ভালো, সে পরিকল্পনায় ইংলিশরা সফল হয় এবং সেটা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারার পর সুইং মেশানো দ্বিতীয় বলেও মারতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন ডি কক (৪)।
তবে শুরুতেই ফর্মে থাকা ওপেনারের বিদায়ের পরও প্রোটিয়াদের পাওয়ার প্লে খারাপ হয়নি। শুরুতে একটু দেখেশুনে খেলে থিতু হওয়ার পর রেসি ফন ডার ডুসেন ও রিজা হেনড্রিকস পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান তুলে নেন।
দুজনের জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়ে এগোতে থাকে শতকের দিকে। ওদিকে উইকেটের অপেক্ষা বাড়ে ইংলিশদের। সে অপেক্ষার অবসান হয় ২০তম ওভারে আদিল রশিদের সৌজন্যে। ফ্লাইট মেশানো বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ফন ডার ডুসেন আউট হয়ে ফেরেন জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে। ৬১ বলে ৮টি চারে ৬০ রান করে আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকার তিন নম্বর ব্যাটসম্যান।
হেনড্রিকসও থিতু হয়ে আউট হয়েছেন। এবার বোলার রশিদ। অর্ধশতক করে শতকের পথে এগোতে থাকা এই প্রোটিয়া ওপেনারকে ২৬তম ওভারে দারুণ এক গুগলিতে বোল্ড করেন রশিদ। ৭৫ বল খেলে ৮৫ রান করেন হেনড্রিকস, ১১৩ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল।
দুই ব্যাটসম্যানকে হারালেও দক্ষিণ আফ্রিকার রান রেট কমতে দেননি ক্লাসেন ও এইডেন মার্করাম। দুজন মিলে ৬৯ রান যোগ করেন ৫৮ বলে। টপলির বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে মার্করাম ক্যাচ দিয়ে আউট হলে দুজনের জুটি ভাঙে। আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৪২ রান করেন মার্করাম। টপলি টিকতে দেননি ডেভিড মিলারকেও (৫)।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ৩৬.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২৪৩। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের এর পরের গল্পটা পুরোটাই ক্লাসেন ও মার্কো ইয়ানসেনের। দুজন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৭৭ বলে ১৫১ রান যোগ করেন।
ক্লাসেন ৬১ বলে শতক করেন। ইনিংসের শেষ ওভারে গাস অ্যাটকিনসনের বলে আউট হওয়ার আগে ক্লাসেনের ব্যাট থেকে আসে ৬৭ বলে ১০৯ রান। ১৬২ স্ট্রাইক রেটের দুর্দান্ত ইনিংসে ১২টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিল। তাঁর সঙ্গী ইয়ানসেন অর্ধশতক করেন ৩৫ বলে।
তবে তাঁর ইনিংস শেষে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৪২ বলে ৭৫ রানে। ৩টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন টপলি, ২টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যাটকিনসন ও রশিদ।