ডারবানে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। একটি বলও হতে দেয়নি। পোর্ট এলিজাবেথে আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও বেরসিক বৃষ্টি হানা দিয়েছিল। আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের স্কোর যখন ১৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮০, আর জেরাল্ড কোয়েটজি পাচ্ছিলেন হ্যাটট্রিকের সুবাস, তখনই বৃষ্টির বাগড়া!
ভারত এরপর আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে ওভারও কমিয়ে আনা হয়। জিততে হলে ১৫ ওভারে করতে হবে ১৫২। রিজা হেনড্রিকস এবং এইডেন মার্করামের ৩০ বলে ৫৪ রানের জুটিতে রান তাড়ার সিংহভাগ কাজটুকু সেরে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭.৫ ওভারে এই জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ৪৩ বলে দরকার ছিল ৫৬ রান। এই পথে আরও ৩টি উইকেট পড়লেও শেষ পর্যন্ত ডি/এল নিয়মে ৭ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতেছে মার্করামের দল।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃহষ্পতিবার জোহানেসবার্গে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।
ওভারপ্রতি ১০ রানের বেশি তোলার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম ২ ওভারেই ৩৮ তুলেছেন দুই ওপেনার হেনড্রিকস ও ম্যাথু ব্রিৎজ। ৭ বলে ১৬ করা ব্রিৎজ তৃতীয় ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার বলে আউট হওয়ার পর জুটি বাঁধেন হেনড্রিকস ও মার্করাম। ১ ছক্কা ও ৮ চারে ২৭ বলে ৪৯ করে আউট হন হেনড্রিকস। মার্করামের ব্যাট থেকে এসেছে ১ ছক্কা ও ৪ চারে ১৭ বলে ৩০।
দুজনের জুটি ভেঙে পরের দুই ওভারে আরও দুটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে সূর্যকুমার যাদবের ভারত। কিন্তু ডেভিড মিলার ও ত্রিস্তান স্তাবসের ২২ বলে ৩১ রানের জুটি তা হতে দেয়নি। ১২ বলে ১৭ করা মিলার ১৩তম ওভারে যখন আউট হন, জয়ের জন্য ১৩ বলে ১২ রানের সহজ সমীকরণে দাঁড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। আন্দিলে ফিকোয়াকে (১০) বাকি পথটা পাড়ি দেন ১২ বলে ১৪ রান করা স্তাবস।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম দুই ওভারে দু্ই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ও শুবমান গিলকে হারায় ভারত। দুজনেই ০ রানে আউট। গিলকে তুলে নেন লিজাড উইলিয়ামস, জয়সোয়ালকে মার্কো ইয়ানসেন। ৩৬ বলে ৫৬ রান করা সূর্যকুমার দুটি জুটিতে ভারতের ইনিংসকে পথে ফেরান। তিলক ভার্মার সঙ্গে ২৪ বলে ৪৯ এবং রিংকু সিংয়ের সঙ্গে ৪৮ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন।
এই ইনিংসটি খেলার পথে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০০০ রানের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলেন সূর্যকুমার। ৫৬তম ইনিংসে মাইলফলকটি ছুঁয়ে বিরাট কোহলির গড়া রেকর্ডে্ও ভাগ বসালেন। এতদিন টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে ইনিংসের হিসাবে দ্রুততম ২০০০ রানের রেকর্ডটি কোহলির একার দখলে ছিল।
৩৯ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন রিংকু। ২ ছক্কা ও ৯ চারে সাজানো ইনিংসটিতে রিংকু আরও একবার নিজের সামর্থ্য দেখালেও শেষ ওভারে স্ট্রাইক পাননি। কোয়েটজির প্রথম বলে ২ রান নেওয়া জাদেজা পরের বলে আউট হন। তৃতীয় বলে অর্শদীপ সিংকেও তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুবাস পাচ্ছিলেন এই পেসার। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টি হানা দেওয়ায় কোয়েটজি হ্যাটট্রিক পেতেন কি না, তা যেমন জানা গেল না, তেমনি রিংকুর ইনিংসটি কোথায় শেষ হতো সেটাও অজানা রইল।
৩২ রানে ৩ উইকেট নেন কোয়েটজি। ভারতের হয়ে ৩৪ রানে ২ উইকেট মুকেশ কুমারের।