টাকার জন্য টি-টোয়েন্টি খেলছেন স্মিথ, দাবি জনসনের
ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে তাঁকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে তোলপাড় লাগিয়ে দিয়েছিলেন মিচেল জনসন। ফর্মহীন এবং ‘স্যান্ডপেপারগেট কেলেঙ্কারি’তে জড়িত ওয়ার্নারকে কেন নায়কোচিত বিদায় দেওয়া হচ্ছে, এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জনসন।
এর জেরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি, ওয়ার্নারের উদ্বোধনী সঙ্গী উসমান খাজা, ওয়ার্নারের পরিবার ও ব্যবস্থাপক, এমনকি সাবেক দুই অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও মাইকেল ক্লার্কও মন্তব্য করেছিলেন।
সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি তির্যক মন্তব্য করলেন জনসন। ৪২ বছর বয়সী সাবেক ফাস্ট বোলার এবার সমালোচনার তির ছুড়েছেন স্টিভেন স্মিথের দিকে। জনসন মনে করেন, স্মিথ টাকার জন্য টি-টোয়েন্টি খেলে যাচ্ছেন। এই সংস্করণ বাদ দিয়ে তাঁর টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনোযোগী হওয়া উচিত।
সন্দেহাতীতভাবে টেস্ট ও ওয়ানডেতে সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্মিথ। কিন্তু তাঁর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫৫ ইনিংসে ২৪.৮৬ গড় ও ১২৫.৪৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১০৯৪ রান। সর্বশেষ ১৮ ইনিংসে ফিফটি মাত্র একটি। সেটাও গত নভেম্বরে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে বিশাখাপট্টনমের ব্যাটিং–স্বর্গে। নিউজিল্যান্ড সফরে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন স্মিথ। ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়েও দুই ইনিংসে করেছেন ১১ ও ৪ রান।
স্মিথের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য নিয়েই তাই প্রশ্ন তুলেছেন জনসন। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নাইটলি’র এক কলামে একসময়ের সতীর্থ স্মিথকে নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ভাবছি, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সত্যিই সে খেলতে চায় কি না। টেস্ট ক্যারিয়ার শেষে অবশ্যই সে বিশ্বের বিভিন্ন লিগে খেলবে। এখন সম্ভবত একটা মুলা ঝুলিয়ে রাখছে, যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও বিশ্বকাপে ওর খেলার সম্ভাবনা বাড়ে। (ফ্র্যাঞ্চাইজি) লিগগুলোতে খেলে সে মোটা অঙ্কের চেকও পেয়ে থাকে।’
সর্বশেষ দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারেননি স্মিথ। ২০২১ সালের আসরে ৪ ইনিংসে মাত্র ৯৭.১৮ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৬৯ রান। তবে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাঁর ব্যর্থতা ঢাকা পড়ে যায়। পরের বছর ঘরের মাঠে আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন। সেবারও এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে ব্যাট হাতে হতাশ করেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ রান করে আউট হন।
এরপরও আগামী ১ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অস্ট্রেলিয়া দলে স্মিথ যদি জায়গা করে নেন, তাহলে ওপেনিং ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটিং পজিশন খালি দেখছেন না জনসন, ‘এটা (স্মিথ ওপেন করলে) ওকে উইকেটে থিতু হতে যথেষ্ট সময় দেবে। যদি টিকে যায়, তাহলে মাঠের সবদিকেই মারতে পারবে। যেহেতু অস্ট্রেলিয়ার বিস্ফোরক ব্যাটিং লাইনআপ আছে, তাই ওপেনিংই স্মিথের জন্য মানানসই হতে পারে। তবে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিতে হলে ওকে ধারাবাহিকভাবে রান করতে হবে।’
টি–টোয়েন্টি বাদ দিয়ে স্মিথের এখন টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনোযোগী হওয়া উচিত, কলামে এ কথাও লিখেছেন জনসন।
নিউজিল্যান্ড সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পর স্মিথ অবশ্য নিজেই স্বীকার করেছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়তো মিস করতে যাচ্ছেন। দুই ম্যাচে আউট হওয়া বল নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সত্যি বলতে আমি দুটি ভালো বলে আউট হয়েছি। এটা আমার জন্য আদর্শ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের দলের টপ অর্ডার ঠিক হয়ে গেছে। (ট্রাভিস) হেড, ওয়ার্নার ও (মিচেল) মার্শ শীর্ষ তিনে ব্যাট করবে। নির্বাচকেরা কী চান, আমি নিশ্চিত নই। এ (বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া) নিয়ে আমি একদমই বিচলিত নই। দলে নিলে থাকব, না নিলে থাকব না।’