টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে শেষটা কেমন হবে বাংলাদেশের
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের তৃতীয় চক্রের শুরু জয় দিয়ে। সেটিও সিলেটে পূর্ণ শক্তির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে; কিন্তু পরে মিরপুরে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেরে যায় বাংলাদেশ।
মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে ধবলধোলাই, তবে পরের সিরিজেই আবার অবিশ্বাস্য কীর্তি। পাকিস্তানের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে স্বাগতিকদের প্রথমবারের মতো ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ।
উড়তে থাকা সেই দলটাই পরের পাঁচ টেস্টে জয়ের দেখা পায়নি। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ধবলধোলাইয়ের পর অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজও শুরু হার দিয়ে।
আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২৩-২৫ চক্রে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ এটি। কাজটা কঠিন হলেও জয় দিয়ে শুরু চক্রের শেষটাও নিশ্চয়ই জয়েই রাঙাতে চাইবে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
২০১৯-২১ সালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম চক্রে ৭ ম্যাচ খেলে একটিও জয় পায়নি বাংলাদেশ, হেরেছিল ৬টিতে। এক ড্রয়ে বাংলাদেশ সেবার ৯ নম্বরে থেকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করে।
২০২১-২৩ সালের দ্বিতীয় চক্রে বাংলাদেশ ১২টি টেস্ট খেলে এক জয় ও এক ড্র নিয়ে বাংলাদেশ ছিল পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। চলমান চক্রেও ১১টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। জয় ৩টি ও হার ৮টি।
পাকিস্তান সিরিজের পর পয়েন্ট তালিকার ৪-এ উঠে আসা বাংলাদেশ এখন আবার ৯ নম্বরে। ৮-এ থাকা ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জ্যামাইকা টেস্টে জিতলেও পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান বদলানোর সম্ভাবনা কমই। এই সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের চক্র শেষ হলেও জানুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও দুটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলবে।
আগের দুই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তুলনায় এবার অবশ্য বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে উন্নতির ছাপ ছিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হারানোর বাইরে অন্য ম্যাচগুলোতেও দলের পেস বোলিং প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে নতুন বলে ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করেছেন বাংলাদেশ দলের পেসাররা। তবু বারবারই পিছিয়ে পড়তে হয়েছে নতুন বলের ব্যাটিং আর পুরোনো বলের বোলিংয়ের কারণে।
উদাহরণ—গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেট টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ৫৭ রানে ৫ উইকেট তুলে নিলেও শেষ পর্যন্ত তারা রান করে ফেলেছিল ২৮০। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও করেছে ৪১৮ রান। উদাহরণ আরও।
গত সেপ্টেম্বরে চেন্নাই টেস্টে ১৪৪ রানে ভারতের ৬ উইকেট তুলে নিলেও রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টেও ১০৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিল বাংলাদেশ; কিন্তু এরপর কাইল ভেরেইনা এবং ওয়েইন মুল্ডার গড়েন ১১৯ রানের জুটি। সর্বশেষ অ্যান্টিগা টেস্টেও ২৬১ রানে ৭ উইকেট হারানো ক্যারিবীয়রা শেষ পর্যন্ত করেছে ৪৫০ রান।
পুরোনো বলে বোলিংয়ের এই দুর্বলতার সঙ্গে আছে নতুন বলের সামনে ব্যাটসম্যানদের অসহায়ত্ব। এই চক্রের ১১ টেস্ট বাংলাদেশের সেঞ্চুরি মাত্র ৪টি, যার ৩টিই এনে দিয়েছে জয়। বড় জুটির অভাবও একটা সমস্যা। এখন পর্যন্ত মাত্র ৫টি এক শ ছাড়ানো জুটি হয়েছে, যার একটিতেও প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানের অবদান নেই। স্যাবাইনা পার্কে বছরের শেষ টেস্ট এই দুই সমস্যার সমাধান পাবে তো বাংলাদেশ?