‘আশা করছি আজকে আমাদের ব্যাটিংয়ের ধরন আপনারা উপভোগ করেছেন’-ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে টুইট করে এমনটাই বলেছেন পাকিস্তান অলরাউন্ডার শাদাব খান।
শাদাব খান ব্যাটিংয়ে ধরন নিয়ে আজ কথা বলতেই পারেন, কারণ নিউজিল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে ক্যারিয়ারে প্রথমবার চার নম্বরে নেমে ২২ বলে ৩৪ রান করেছেন শাদাব। পাকিস্তান মিডল অর্ডার সমস্যার আপাতত সমাধান এসেছে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান শাদাবের হাত ধরেই।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের জয়ের রেসিপিটা সবার মুখস্থ-বোলারদের দারুণ বোলিং, সঙ্গে বাবর-রিজওয়ানের দুর্দান্ত ব্যাটিং। দু-একটা সিরিজ জুড়ে নয়, পাকিস্তান এই রেসিপিতে চলছে লম্বা একটা সময় ধরে। তাই প্রতি সিরিজের আগেই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা কান পাতলেই শোনা যায়। একে একে ইফতিখার আহমেদ, খুশদিল শাহ, আসিফ আলী; সবাইকেই বাজিয়ে দেখেছে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট, তবে সফলতা আসেনি।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মে থাকা শান মাসুদকে সুযোগ দেয় পাকিস্তান। ইংল্যান্ড সিরিজে ৬ ইনিংসে ১৫৭ রান করলেও তাঁর ১৩০ এর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। কারণ বাবর ও রিজওয়ান দুজনেই খেলেন অনেকটা দেখেশুনে। এর সঙ্গে শান মাসুদ একই স্ট্রাইক রেটে রান করলে ভুগতে হতেই পারে পাকিস্তানকে। ইংল্যান্ড সিরিজে ব্যর্থ হন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হায়দার আলীও।
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডে নিয়ে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষেও ব্যর্থ হয় বাবরদের মিডল অর্ডার। ব্যস, তাতেই ধৈর্যচ্যুতি হয়েছে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাই তারা চার নম্বরে খেলায় অলরাউন্ডার শাদাব খানকে। এ ম্যাচে ১৪৮ রানের তাড়া করতে নেমে শুরুতেই রিজওয়ান ও শান মাসুদকে হারানোর পর অধিনায়ক বাবরের সঙ্গে ৪২ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন শাদাব, যেখানে বাবরের অবদান ২০ বলে ২৫, আর শাদাবের ২২ বলে ৩৪!
২ ছক্কা ও ২ চারে সাজানো শাদাবের ইনিংসটি যখন পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়, জয়ের জন্য পাকিস্তানের তখন ৪৬ বলে ৫০ রান দরকার। অর্থাৎ কাজের কাজটা ৩৪ রানের ইনিংসেই করে ফেলেছেন শাদাব। আর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে এমন ইনিংসে অনেকটা স্বস্তির নিশ্বাসই ফেলেছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের অনেকেই শাদাবে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও এখানে আরও বড় সমস্যা দেখছেন পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ। তাঁর মতে শাদাবকে চারে খেলালে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস আরও কমে যাবে, ‘শাদাব খানকে চার নম্বরে এবং মোহাম্মদ নওয়াজকে পাঁচে পাঠিয়ে অল্প সময়ের জন্য সফলতা মিলতে পারে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ওপর আরও চাপ বাড়বে, তাদের মনে নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন জাগবে। এমন প্রশ্ন উঠবে-তারা কেন দলে আছে? তাদের প্রতি দল যদি ভরসা না করে, তাহলে তারা একাদশে কী করছে?’
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই মিডল অর্ডারে ব্যাট করেন শাদাব। ইফতিখার, খুশদিলদের ব্যর্থতায় পাকিস্তান সেই শাদাবে দীর্ঘমেয়াদে মিডল অর্ডারের সমাধান খুঁজবে কি না তাঁর উত্তর অবশ্য মিলবে সামনের দিনগুলোয়।