যে আক্ষেপ ঘোচাতে চান স্মিথ
২০০১ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে সর্বশেষ অ্যাশেজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বাধীন শক্তিশালী সেই দলটির পর আরও পাঁচবার ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু জেতা হয়নি। সর্বশেষ ২০১৯ সালে টিম পেইনের নেতৃত্বে গৌরবময় ‘ছাইদানি’ (অ্যাশেজ) নিয়ে ফিরতে পারলেও সিরিজ শেষ হয়েছে ২–২ সমতায়।
ইংল্যান্ডে তিনবার অ্যাশেজ খেলেছেন স্টিভেন স্মিথও। সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ওই তিন অ্যাশেজ মিলিয়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেও সিরিজ জিততে না পারার আক্ষেপ রয়েই গেছে। এবার আর হতাশ হয়ে ফিরতে চান না।
ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজের চতুর্থ (খুব সম্ভবত শেষ) অ্যাশেজকে ‘বাকেট লিস্টে’ রেখেছেন স্মিথ। বাকেট লিস্ট বলতে বোঝানো হয় এমন তালিকা, যা মানুষ মৃত্যুর আগে অবশ্যই পূরণ করতে চায়। স্মিথও তাঁর ক্রিকেটীয় জীবদ্দশায় অ্যাশেজের এই অপ্রাপ্তি ঘোচাতে চান।
আইপিএলে কেইন উইলিয়ামসন চোটে ছিটকে যাওয়ায় গুজরাটের হয়ে খেলার সুযোগ ছিল স্মিথের। তবে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ও অ্যাশেজের সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি নিতে ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেট খেলার সিদ্ধান্ত নেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান।
এ মৌসুমে নাম লিখিয়েছেন সাসেক্সে। দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর পরশু প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন স্মিথ। সেখানেই জানিয়েছেন তাঁর ইচ্ছার কথা, ‘শেষ ইচ্ছা পূরণের তালিকাগুলোর মধ্যে এটায় (ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ জয়) টিক চিহ্ন দিতে পারা বিশাল ব্যাপার হবে। আগেরবার আমরা খুব কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু সীমানা অতিক্রম করতে পারিনি।’
ইংল্যান্ডে ২০২৭ সালের আগে আর অ্যাশেজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তত দিনে স্মিথের বয়স হবে ৩৮ বছর। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে এটাই যে তাঁর শেষ অ্যাশেজ, সে আভাসও দিয়ে রেখেছেন স্মিথ, ‘ইংল্যান্ডে এটা আমার চতুর্থ সফর। হতে পারে এটাই শেষ। এক মাসের কম সময় পর আমার বয়স ৩৪ হবে। মনে হয় না, পরের সিরিজে এখানে থাকব। আমাকে ভেবে দেখতে হবে।’
সাসেক্সের হয়ে শুধু এ মাসেই খেলবেন স্মিথ। এরপর অস্ট্রেলিয়া দলে যোগ দেবেন জুনের শুরুতে। লন্ডনের ওভালে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল শুরু হবে ৭ জুন। আর বার্মিংহামের এজবাস্টনে অ্যাশেজের প্রথম ম্যাচ ১৬ জুন।
২২ বছর পর ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ জয়ের অভিযানে অস্ট্রেলিয়া দল স্মিথের কাছেই বড় কিছুরই প্রত্যাশা করবে। ইংল্যান্ডে খেলা অ্যাশেজের ১৪ ম্যাচে স্মিথের ব্যাটিং গড়ও আশার পালে হাওয়া দিচ্ছে। এখানে তাঁর গড় ৬৫.০৮, যা তাঁর টেস্ট ব্যাটিং গড়ের চেয়েও বেশি। দেশটিতে সর্বশেষ দুই অ্যাশেজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি।
২০১৩ ও ২০১৫ অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ছিলেন মাইকেল ক্লার্ক। ২০১৯ সালে হয়তো স্মিথই নেতৃত্ব দিতেন। কিন্তু আগের বছর কেপটাউন টেস্টে বল বিকৃতির দায়ে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পান, সঙ্গে তাঁর অধিনায়কত্বও কেড়ে নেওয়া হয়। শাস্তি শেষে ২০১৯ অ্যাশেজ দিয়েই জাতীয় দলে ফেরেন। ৪ টেস্টেই (মাথায় আঘাত পাওয়ায় একটি ম্যাচ খেলতে পারেননি) ৭৭৪ রান করে প্রত্যাবর্তন সিরিজ রাঙিয়ে তোলেন। প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে এবার ২২ বছরের আক্ষেপ ঘোচানোর অপেক্ষায় স্মিথ।