কোহলির উইকেট তাইজুলের ‘ক্যারিয়ার হাইলাইট’ নয়
‘নো রান!’ ক্রিজে এসেই প্রথমে খালেদ আহমেদের বলটি স্কয়ারে ঠেলে দিয়ে চিৎকার করে ওঠেন বিরাট কোহলি। কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস। শরীরী ভাষাও দাপুটে। ৪৫ রানে ২ উইকেট হারানো ভারত যে চাপে আছে, তা যেন কোহলিকে স্পর্শই করছিল না!
খালেদের পরের বলটিতেই দেখা গেল ট্রেডমার্ক কোহলি ড্রাইভ। কাভারে থাকা লিটন দাস ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি বাউন্ডারি হতে দিলেন না। কিন্তু ওদিকে দৌড়ে ঠিকই এক রান নিয়েছেন কোহলি।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তখন কোহলির উপস্থিতিই যেন বার্তা দিচ্ছিল আজ বড় কিছু হতে যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ-ভারত কলকাতা টেস্টের পর টেস্ট সেঞ্চুরির খরা হয়তো চট্টগ্রামেই কাটাবেন কোহলি।
কিন্তু পরের ওভারে বোলিংয়ে আসা তাইজুল ইসলাম সেটি হতে দিলেন না। দুর্দান্ত বাঁহাতি স্পিনে সে ওভারের তৃতীয় বলেই কোহলিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।
এরপর তাইজুলকে আর পায় কে! আম্পায়ারের আঙুল খাড়া হতে দেখেই তিনি দৌড় দিলেন ভারতীয় ড্রেসিংরুমের দিকে। এরপর বিশাল এক লাফে কিছুক্ষণ শূন্যে ভাসলেন। তাইজুলের পেছনে ছুটল পুরো বাংলাদেশ দল। কোহলির উইকেট বলে কথা, বুনো উদ্যাপন তো হবেই!
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তাইজুলের উড়ন্ত সে ছবিটি অনেকের মনে গেঁথে যাওয়ার কথা। তাইজুলের ক্যারিয়ারেরই সেরা মুহূর্তগুলোর একটি বললেও ভুল হবে না। যদিও তাইজুল কোহলিকে আউট করাকে এত বড় করতে দেখছেন না।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তাইজুল বলেছেন, ‘আমি কোহলির উইকেট এর আগেও পেয়েছি, তাই না? এটাই আমার ক্যারিয়ারের হাইলাইট হতে হবে, এমন তো কিছু নয়।’
২০১৭ সালে দুই দলের হায়দরাবাদ টেস্টে তাইজুলের বলেই আউট হয়েছিলেন কোহলি। সেদিন তাইজুলের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে কোহলির ব্যাট থেকে এসেছিল ২০৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস।
শুধু কোহলি নন, আজ ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের আরেক স্তম্ভ চেতেশ্বর পূজারাকেও আউট করেছেন তাইজুল। শেষ বেলায় এসে আরও একটি চোখধাঁধানো ডেলিভারিতে পূজারাকে আউট করেন তিনি।
প্রথম দিন ৩০ ওভারে ৮৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া তাইজুলই ছিলেন সেরা বোলার। ভারতীয় দলের প্রতিনিধি হয়ে দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা পূজারা নিজেই বলেছেন সে কথা, ‘সে খুবই ভালো বোলিং করেছে। সে লাইন-লেংথের ক্ষেত্রে খুবই ধারাবাহিক ছিল। আজ তাঁকে খেলাই সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে।’