- স্বাগত!
- টস
- অভিষেক হৃদয়ের, নেই মিরাজ
- তিন পেসারের বাংলাদেশ
- আয়ারল্যান্ড একাদশ
- তামিম আউট
- নিয়ন্ত্রণহীন লিটন এবং আউট
- নাজমুল বোল্ড
- মাইলফলক
- ফিফটি জুটি
- সাকিবের ৫০, বাংলাদেশের ১৫০
- সাকিবের আরেকটি কীর্তি
- টেক্টরের ওভারে সাকিবের ৫ চার
- হৃদয়ের ফিফটি
- সেঞ্চুরির আগেই থামলেন সাকিব
- হৃদয়ের হৃদয়ভঙ্গ, ফিরলেন মুশফিকও
- নড়বড়ে নব্বই (দুই)
- ৩৩৮ পর্যন্ত গেল বাংলাদেশ
- নিজেদের রেকর্ড ভাঙতে হবে আয়ারল্যান্ডকেও
- ধীরলয়ে শুরু আইরিশদের
- ওপেনিং জুটি ভাঙলেন সাকিব
- ইবাদতের শিকার স্টার্লিং
- আয়ারল্যান্ড ইনিংসে ধস
- তাসকিনের দ্বিতীয়
- আক্রমণাত্মক বাংলাদেশ
- ফিল্ডিংয়ে আফিফ ও রনি
- নাসুমে ব্রেকথ্রু
- নাসুমের জোড়া আঘাত
- বড় জয়?
- প্রসঙ্গ দর্শক
- ১ উইকেট দূরে বাংলাদেশ
- ১৮৩ রানের রেকর্ড জয় বাংলাদেশের
আয়ারল্যান্ডকে পাত্তা দিল না বাংলাদেশ
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩৩৮/৮ (সাকিব ৯৩, হৃদয় ৯২, মুশফিক ৪৪, লিটন ২৬; হিউম ৪/৬০, ম্যাকব্রাইন ১/৪৭)
আয়ারল্যান্ড: ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ (ডকরেল ৪৫, ডোহেনি ৩৪; ইবাদত ৪/৪২, নাসুম ৩/৪৩, তাসকিন ২/১৫)
ফল: বাংলাদেশ ১৮৩ রানে জয়ী
যেভাবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড-গড়া জয় পেল বাংলাদেশ, পড়ুন এখানে—
স্বাগত!
সিলেট স্টেডিয়ামে আজ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ দল। তিন ম্যাচের এই সিরিজের পর আরও তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি এবং একটি টেস্টও খেলবে আয়ারল্যান্ড।
আয়ারল্যান্ড আসার আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজ ২–১ ব্যবধানে হারলেও টি–টোয়েন্টি সিরিজ ৩–০ ব্যবধানে জিতে ফুরফুরে মেজাজে আছে বাংলাদেশ দল।
এই সংস্করণে এ পর্যন্ত ১০ বার আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে ৭ বারই জিতেছে বাংলাদেশ। হার ২টিতে, একটি ফলহীন। ২০১০ থেকে হিসেব করলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ৪ ওয়ানডেতেই জিতেছে বাংলাদেশ।
টস
মুদ্রা নিক্ষেপ করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টস নামের ভাগ্যপরীক্ষায় জিতলেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ডি বলবার্নি। টস জিতে আগে বোলিং করবে আয়ারল্যান্ড। অর্থাৎ আগে ব্যাটিংয়ে নামতে হবে বাংলাদেশ দলকে।
অভিষেক হৃদয়ের, নেই মিরাজ
এবার ওয়ানডে অভিষেক হচ্ছে তৌহিদ হৃদয়ের। দলে ফিরেছেন ইয়াসির আলী। গতকাল ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজও নেই।
বাংলাদেশ একাদশ
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয়, ইয়াসির আলী, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন ও নাসুম আহমেদ।
তিন পেসারের বাংলাদেশ
গত ৬ মার্চ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে দলে ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সে ম্যাচে দুই পেসার হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান ও ইবাদত হোসেনকে খেলায় বাংলাদেশ। আজ চোট পড়া মিরাজের জায়গায় ফিরলেন তাসকিন।
বাদ পড়েছেন আফিফ হোসেনও, যিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টির দলেও ছিলেন না। তাঁর জায়গায় দলে ফিরেছেন ইয়াসির আলী। এ ছাড়া মাহমুদউল্লাহ প্রথম দুই ওয়ানডের দলেই নেই, একই অবস্থা তাইজুল ইসলামেরও।
আয়ারল্যান্ড একাদশ
অ্যান্ড্রু বলবার্নি (অধিনায়ক), মার্ক এডেয়ার, কার্টিস ক্যাম্ফার, গ্যারেথ ডিলানি, জর্জ ডকরেল, স্টিফেন ডোহেনি, গ্রাহাম হিউম, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার
ছেলেদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১৪০তম ক্রিকেটার হলেন তৌহিদ হৃদয়। এ সংস্করণে সর্বশেষ অভিষেক হয়েছিল ইবাদত হোসেনের, গত বছরের আগস্টে।
আজ তাঁকে অভিষেক ক্যাপ পরিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
প্রথম ওভারে ৭ রান
মার্ক এডেয়ারের লেগ সাইডের বল মিস করেছিলেন তামিম, তবে মিস করেছেন উইকেটকিপার লরকান টাকারও। আম্পায়ার রড টাকারও দিয়েছেন ওয়াইড। এ মাঠে বাংলাদেশ পুরুষ দল সর্বশেষ যে ওয়ানডে খেলেছিল, সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তামিম ও লিটন দুজনই। প্রথম ওভারে আজ উঠেছে ৭ রান।
তামিম আউট
মার্ক এডেয়ারের করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তামিম ইকবাল। ফুল লেংথের বলটি ঢিলেঢালা ড্রাইভে খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে পল স্টার্লিংকে ক্যাচ দেন তামিম। ৯ বলে ৩ রান করে আউট হলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বাংলাদেশ ৩ ওভার শেষে ১ উইকেটে ১৯। ক্রিজে লিটনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নাজমুল হোসেন।
ছক্কা!
৫৯ মিটার দূরত্বের ছক্কা! পঞ্চম ওভারে এডেয়ারের দ্বিতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে উঠে এসেছিল। লিটন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ওপর দিয়ে দর্শনীয় শটে ছক্কা মারেন।
বাংলাদেশ ৫ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৩১।
জুটি গড়ার চেষ্টায় লিটন–নাজমুল
উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করছেন নাজমুল হোসেন। ১৩ বলে ১০ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। লিটন অন্য প্রান্তে ২৩ বলে ১৮ রানে অপরাজিত। ৩২ বলে ২৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন দুই ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ ৮ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৪০।
নিয়ন্ত্রণহীন লিটন এবং আউট
১০ম ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে আউট লিটন দাস। ৩১ বলে ২৬ রান করা লিটন বড় ইনিংসের আশা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্যাম্ফারের লেংথ বলটি পুশ করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে স্টার্লিংকে ক্যাচ শিখিয়ে ফিরলেন লিটন। এর মধ্য দিয়ে ভেঙে গেল লিটন–নাজমুলের ৪২ বলে ৩৪ রানের জুটি।
উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
দুই ওভার, দুই কাট, দুই চার
কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে প্রথম কাট করে চার মারলেন সাকিব। পরের ওভারে স্পিনার অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের বলেও একই শট খেলেছেন সাকিব, ফল হয়েছে একই। দুই ওপেনার তামিম ও লিটন ফিরেছেন প্রথম পাওয়ারপ্লের মধ্যেই, আবার ইনিংস পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন নাজমুল ও সাকিব।
নাজমুল বোল্ড
রাউন্ড দা উইকেট থেকে করা অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের বলটি টার্নের জন্য খেলেছিলেন নাজমুল হোসেন, তবে বল ধরে রেখেছে লাইন। তাতেই ব্যাট ও প্যাডের মাঝে বিশাল ফাঁক ছিল নাজমুলের, পুরো মিস করে হারিয়েছেন স্টাম্প। হতভম্ব নাজমুল ফিরলেন ৩৪ বলে ২৫ রান করে, আরেকটি জুটি গড়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েও থামলেন আগেই। ৮১ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
মাইলফলক
এ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন মাইলফলক থেকে ২৪ রান দূরে থেকে। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে মিড অফে সিঙ্গেল নিয়ে ওয়ানডেতে ৭ হাজার রান পূর্ণ করলেন সাকিব। তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৭ হাজার রান হলো তাঁর।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেই ৩০০ ওয়ানডে উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব। ৭ হাজার রান ও ৩০০ উইকেট—সাকিবের আগে ওয়ানডেতে এমন ‘ডাবল ছিল আর দুজনের—সনাৎ জয়াসুরিয়া ও শহীদ আফ্রিদির।
ফিফটি জুটি
১৫, ৩৪, ৩২—আগের তিনটি জুটি থেমেছিল আগেভাগেই। তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের জুটিতে অবশেষে ৫০ রান এলো। ৫৭ বলে চতুর্থ উইকেট জুটি দেখা পেয়েছে ৫০ রানের। ফিফটির পথে এগোচ্ছেন সাকিব, ক্রিজে বেশ থিতু তিনি। ভালো সঙ্গ দিচ্ছেন অভিষিক্ত হৃদয়ও। অফ স্পিনার ম্যাকব্রাইনকে দিয়ে এরই মধ্যে ৯ ওভার করিয়ে ফেলেছেন বলবার্নি।
বাংলাদেশ ২৬ ওভারে ১৩১/৩।
সাকিবের ৫০, বাংলাদেশের ১৫০
আজই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৭ হাজার পূর্ণ করেছেন। এবার ফিফটি পেয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের ফিফটি এলো ক্যাম্ফারের বলে সিঙ্গেল নিয়ে। সাকিবের মাইলফলকের আগেই ১৫০ ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। এ ওভারে দারুণ পুল শটে চার মেরেছেন হৃদয়, এখন পর্যন্ত দারুণ স্বচ্ছন্দ তিনি। ৩০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে বাংলাদেশের স্কোর ১৫৫ রান, ৩০০ রান নাগালে আছে ভালোভাবেই। তবে প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ সেটি করতে পারবে কি না, এবং এ উইকেটে কত রান জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে।
সাকিবের আরেকটি কীর্তি
রেহান আহমেদকে আউট করে ৩০০তম উইকেট নেওয়ার মধ্য দিয়ে আফ্রিদি-জয়াসুরিয়ার পাশে বসেছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার। ঠিক তার পরের ওয়ানডেতে মানে আজ সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আরেকটি মাইলফলকের দেখা পেলেন সাকিব।
ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের মাইলফলক। তাতে ওয়ানডেতে ৭ হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের ‘ডাবল’ও হয়ে গেছে সাকিবের। আর এই ডাবলে সাকিবই দ্রুততম।
টেক্টরের ওভারে সাকিবের ৫ চার
মাঝে যে ডাবলসটি এসেছে, সেটিও হতে পারত চার। ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে গেলেও আউটফিল্ডে আটকে যাওয়াতে সেটি হয়নি। তবে হ্যারি টেক্টরের বাকি ৫ বলে সাকিব মেরেছেন ৫ চার। বাঁহাতি সাকিব ক্রিজে থাকায় পার্ট-টাইমার টেক্টরকে দিয়ে করাচ্ছিলেন বলবার্নি, সাকিব চড়াও হলেন তাঁর ওপর। এ ওভারেই ২০০ পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ, সাকিব চলে গেছেন ৮৯ রান।
হৃদয়ের ফিফটি
টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে—হৃদয় যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে চেনেন ভীষণ ভালোভাবেই। সিলেটে অভিষেক ওয়ানডেতে ফিফটি পেয়ে গেলেন তিনি। গ্রাহাম হিউমের বলে সিঙ্গেল নিয়ে মাইলফলকে গেলেন হৃদয়, ফিফটি করতে তাঁর লেগেছে ৫৫ বল।
সেঞ্চুরির আগেই থামলেন সাকিব
দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে ছিলেন, সাকিব থামলেন সেখানেই। আউট হওয়ার ধরনে অবশ্য নিজেই নিজের ওপর হতাশ হবেন তিনি। গ্রাহাম হিউমের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে, প্রায় ওয়াইড-ঘেঁষা লাইনে আলগাভাবে ব্যাট চালিয়েছিলেন সাকিব। এজড হয়েছেন তাতেই, উইকেটকিপার লরকান টাকার নিয়েছেন সহজ ক্যাচ। ২১৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, হৃদয়ের সঙ্গে সাকিবের জুটিতে উঠেছে ১২৫ বলে ১৩৫ রান।
৪২তম ওভারে ২৫০ পূর্ণ হলো বাংলাদশের। হৃদয় ৭০ রানে অপরাজিত, ২০ রানে ব্যাটিং করছেন মুশফিকুর রহিম।
ছুটছেন মুশফিক-হৃদয়
মুশফিকের দ্বিতীয় স্কোরিং শট ছিল গ্যারেথ ডিলানিকে স্লগ সুইপে ছয়। ডিলানিকে স্লগ সুইপে মুশফিক মারলেন আরেকটি ছক্কা। স্লগ সুইপ ও মুশফিক—ভালোবাসার কাহিনী যেন ফিরে ফিরে আসছে আবার। ডিলানির করা ৪৩তম ওভারে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরেছেন হৃদয়ও, অভিষিক্ত এ ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি থেকে ২১ রান দূরে। ৪৩ ওভারে শেষে ৪ উইকেটে ২৭২ রান বাংলাদেশের, মুশফিক ১৮ বলে অপরাজিত ৩৩ রানে। বগুড়ার দুই ছেলের জুটিতে এরই মধ্যে উঠে গেছে ৫০ রান।
হৃদয়ের হৃদয়ভঙ্গ, ফিরলেন মুশফিকও
যাওয়ার পথে হৃদয়ের সঙ্গে গ্লাভসে টোকা দিলেন, মাথায় হাত রেখে যেন শুভকামনাও জানিয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। ৪৯ বলে হৃদয়ের সঙ্গে মুশফিকের জুটি ভাঙল তাঁর আউটেই। আগের বলেই গ্রাহাম হিউমকে ইনসাইড-আউটে দারুণ এক চার মেরেছিলেন, এবার স্লো বাউন্সারে টাইমিং ঠিকঠাক করতে না পেরে ফাইন লেগে ক্যাচ দিলেন। তবে এর আগে মুশফিক খেলেছেন ২৬ বলে ৪৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস, তিনটি করে চার ও ছক্কায়। হৃদয়ের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ৪৯ বলে উঠেছে ৮০ রান… এবং আউট হৃদয়ও! ভেতরের দিকে ঢোকা ক্রস সিমের বলটা লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বেসামাল হয়েছিলেন একটু, লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি থেকে ৮ রান দূরেই থামলেন হৃদয়, নড়বড়ে নব্বইয়ে আজ কাটা পড়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান তিনি! সেঞ্চুরি না পেলেও হৃদয়ের ইনিংসটি দুর্দান্তই, ৮৫ বলের ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছক্কা।
ওয়ানডে অভিষেকে নড়বড়ে নব্বইয়ে আউট
নড়বড়ে নব্বই (দুই)
হৃদয়ভঙ্গ
৩৩৮ পর্যন্ত গেল বাংলাদেশ
একটি ছক্কা মারার পর ফিরেছেন তাসকিন, ১০ বলে ১৭ রান করার পর ডাবলস নিতে গিয়ে রানআউট ইয়াসির আলীও। তবে বাংলাদেশ গড়েছে নিজেদের রেকর্ড ৩৩৮ রানের স্কোর। সিলেটে টসে জিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে বাংলাদেশের এ সংগ্রহ।
এমন সংগ্রহে মূল অবদান সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়ের। দুজনই ৯০ পেরিয়েছিলেন, কিন্তু একজনও সেঞ্চুরির দেখা পাননি। প্রথম ৩ উইকেটে বাংলাদেশের জুটি বড় হয়নি, সাকিব-হৃদয়ের চতুর্থ উইকেট জুটিতে সেখানে ওঠে ১২৫ বলে ১৩৫ রান। সাকিব ফিরলেও সে ভিতে দাঁড়িয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করেন মুশফিক ও হৃদয়। মুশফিক ফিফটির আগেই থামেন, অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি হৃদয়েরও।
প্রথম ৩০ ওভারে ১৫৫ রান তুলেছিল বাংলাদেশ, পরের ২০ ওভারে উঠেছে ১৮৩ রান। শেষ ১০ ওভারে স্বাগতিকেরা যোগ করেছে ৯৬ রান।
সাকিব, মুশফিকের পর হৃদয়ের উইকেটও নেন পেসার গ্রাহাম হিউম, পরে ফেরান তাসকিনকেও। ৬০ রান দেন তিনি। ইকোনমি রেটের দিক দিয়ে আয়ারল্যান্ডের সেরা অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন, ১০ ওভারে এ অফস্পিনার দেন ৪৭ রান।
নিজেদের রেকর্ড ভাঙতে হবে আয়ারল্যান্ডকেও
রেকর্ড স্কোরকার্ড
ধীরলয়ে শুরু আইরিশদের
পঞ্চম ওভারেই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে এনেছেন তামিম ইকবাল। এরপর অন্য প্রান্তে তাসকিনকে সরিয়ে এনেছেন সাকিব আল হাসানকেও। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনের প্রথম বলেই পল স্টার্লিং এলবিডব্লুর হাত থেকে বেঁচে গেছেন রিভিউ নিয়ে, বল যাচ্ছিল স্টাম্পের ওপর দিয়ে। স্টার্লিং একটু স্বচ্ছন্দ, তবে আরেক দিকে স্টিফেন ডোহেনি রান তুলতে ভুগছেন। এখন পর্যন্ত অবশ্য অবিচ্ছিন্ন আইরিশ ওপেনিং জুটি, ৮ ওভারে উঠেছে ৩৪ রান।
ওপেনিং জুটি ভাঙলেন সাকিব
প্রথম ২৫ বলে ডোহেনির ছিল ১০ রান, সেই ডোহেনি পরের ১১ বলে করেছিলেন ২৬ রান। সাকিবের এক ওভারেই দারুণ এক ইনসাইড-আউটে ছক্কার পর মেরেছিলেন দুই চার। তবে সাকিবের বলেই ফিরতে হয়েছে আইরিশ ওপেনারকে। অফ স্টাম্পের বাইরে বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন, যতটা চেয়েছিলেন বল ততটা ওঠেনি। তাতেই হয়েছে আউটসাইড-এজ, ডোহেনি রিভিউ করারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ১২তম ওভারে ভেঙেছে ৬০ রানের ওপেনিং জুটি।
ইবাদতের শিকার স্টার্লিং
শর্ট বল, বেরিয়ে যাচ্ছিল সেটি। পল স্টার্লিং সেটি খেলেই ভুল করেছেন। বাঁদিকে ডাইভ দিয়ে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। ঘরের ছেলে ইবাদত ছুটেছেন, এরপর থেমে দিয়েছেন ট্রেডমার্ক স্যালুট! ভালো শুরু পেলেও পরপর দুই ওভারে ফিরে গেলেন দুই আইরিশ ওপেনার—৭ বল ও ২ রানের মধ্যে।
আয়ারল্যান্ড ইনিংসে ধস
চাইলে ড্রাইভ করতে পারতেন, চাইলে হয়তো ছেড়েও দিতে পারতেন। ইবাদতের অফ স্টাম্পের বাইরের নিরীহ গোছের বলটায় হ্যারি টেক্টর ব্যাট চালালেন বড্ড দেরি করে। উইকেটের পেছনে এবারও ভুল করেননি মুশফিকুর রহিম, নিয়েছেন ইনিংসে তৃতীয় ক্যাচ, আয়ারল্যান্ডের সেটি ছিল তৃতীয় উইকেট।
বলবার্নির আউটের ডেলিভারিটি অবশ্য ছিল দারুণ। ওভার দা উইকেট থেকে ভেতরের দিকে ঢুকিয়েছিলেন তাসকিন, লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। উদ্যাপনের সময় ইশারায় তাসকিন বুঝিয়েছেন, তাঁর ইনসুইং ছিল ‘ষাঁড়ের চোখ’!
৬০ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড, ৭৩ রানে হারাল চতুর্থটি। সিলেটে এলোমেলো সফরকারী দলটি।
তাসকিনের দ্বিতীয়
তাসকিনের আরেকটি ওভার, আয়ারল্যান্ডের আরেকটি উইকেট। এবার গেলেন লরকান টাকার। সোজা ব্যাট চালানোর বদলে আড়াআড়ি খেলতে চেয়েছিলেন লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলটা, ক্যাচ গেছে একমাত্র স্লিপে থাকা ইয়াসির আলীর কাছে। ডানদিকে লাফিয়ে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। ১৬ রানের মধ্যে পঞ্চম উইকেট হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড, ১৮তম ওভারেই ফিরে গেছেন অর্ধেক ব্যাটসম্যান।
আক্রমণাত্মক বাংলাদেশ
ডিপ থার্ডম্যান ও ডিপ ফাইন লেগ—বৃত্তের বাইরে আপাতত মাত্র দুজন ফিল্ডার। সিলেটে চাপে আয়ারল্যান্ড, আক্রমণাত্মক অধিনায়ক তামিম। শেষ বলে অবশ্য বাইরে নেওয়া হয়েছিল আরেকজনকে।
১৮ ওভারে ৭৬/৫, আয়ারল্যান্ড।
ফিল্ডিংয়ে আফিফ ও রনি
১৭তম ওভারে ইবাদত হোসেনের বলে পয়েন্টে কার্টিস ক্যাম্ফারের শট আটকাতে গিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙুলিতে চোট পেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন। আপাতত মাঠে নেই তিনি। উঠে গেছেন তাসকিন আহমেদও। দুজনের বদলি হিসেবে ফিল্ডিং করছেন আফিফ হোসেন ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা রনি তালুকদার। এ ম্যাচের আগে থেকেই চোটের সমস্যা আছে বাংলাদেশ দলে। গতকাল অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে চোখে আঘাত পাওয়ার পর আজ খেলছেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। সিরিজ শুরুর আগেই ছিটকে গেছেন প্রথমবারের মতো দলে ডাক পাওয়া জাকির হাসানও।
নাসুমে ব্রেকথ্রু
১৬ রানের মধ্যে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন জর্জ ডকরেল ও কার্টিস ক্যাম্ফার। প্রয়োজনীয় রানরেট ৮-এর ওপরে, তবে দুজন নিজেদের ব্যস্ত রেখেছিলেন স্ট্রাইক বদলে। নাসুমের বলে ভাঙল দুজনের ৩৩ রানের জুটি। আগবাড়িয়ে ডিফেন্ড করতে গিয়ে মিস করে যান ক্যাম্ফার, আম্পায়ার রড টাকার দেন এলবিডব্লু। টেলিভিশন আম্পায়ার শরফউদ্দৌলা অবশ্য ইনসাইড-এজ হয়েছে কি না দেখতে বেশ খানিকটা সময় নিয়েছেন, এরপর সন্তুষ্ট হয়েছেন প্যাডের আগে ব্যাটে লাগেনি বল। বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে তিন লাল, ফিরেছেন ক্যাম্ফার। ১০০ পেরোনোর কিছুক্ষণ পরই ফিরলেন ক্যাম্ফার, আয়ারল্যান্ড হারাল ষষ্ঠ উইকেট।
নাসুমের জোড়া আঘাত
জর্জ ডকরেলের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলাপ করে রিভিউ না করার সিদ্ধান্তই নিলেন গ্যারেথ ডিলানি। করলেও তেমন একটা লাভ হওয়ার কথাও ছিল না। ক্যাম্ফারের পর এবার ডিলানিকেও এলবিডব্লু করলেন নাসুম। রড টাকার এবার বেশ খানিকটা সময় নিয়েই দিয়েছেন আউটের সিদ্ধান্ত। ৫৮ রানের মধ্যে আইরিশরা হারিয়েছে সপ্তম উইকেট।
ঠিক পরের বলে বাংলাদেশ নেয় রিভিউ। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ব্যাট চালিয়েছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। টাকার এবার আউট দেননি, যদিও মুশফিক-নাসুমরা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে, গ্লাভসে লেগেছিল ম্যাকব্রাইনের। ৫৮ রানের মধ্যেই তাই অষ্টম উইকেট হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড, পরের ওভারের প্রথম বলে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন নাসুম।
বড় জয়?
২৭তম ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের এখনো প্রয়োজন ২১৩ রান। এবং সেটি করতে হবে ২ উইকেট হারানোর আগেই।
প্রসঙ্গ দর্শক
বিপিএলে সিলেটের ম্যাচে এ মাঠে ছিলেন মাঠভর্তি দর্শক। স্বাভাবিকভাবেই ‘স্বাগতিক’ দলের দিকে একপক্ষীয় সমর্থন দিয়ে গিয়েছিলেন তারা। তিন বছরেরও বেশি সময় পর ছেলেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে, তবে দর্শকদের উপস্থিতি সেভাবে চোখে পড়ল না। দিন গড়ানোর সঙ্গে অবশ্য দর্শক বেড়েছিল, ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ভর্তিই ছিল। তবে ১৬ রানের মধ্যে আয়ারল্যান্ড ৫ উইকেট হারানোর পর ফাঁকা হতে শুরু করে সেটি, এ মুহূর্তে সে গ্যালারির বেশিরভাগ দর্শকই মাঠ ছেড়েছেন। হয়তো বাংলাদেশের নিশ্চিত জয় ভেবেই ম্যাড়মেড়ে ম্যাচ দেখার চেয়ে ঘরে ফিরতে চেয়েছেন তারা। যদিও ইস্টার্ন গ্যালারি, গ্রিন হিল এরিয়া, ক্লাব হাউস বা গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের অনেকটাই ফাঁকা ছিল শুরু থেকেই। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হয়েছিল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে, সে ম্যাচেও দর্শকখরা ছিল চোখে পড়ার মতো।
১ উইকেট দূরে বাংলাদেশ
মুশফিক সর্বশেষ নিয়েছেন মার্ক এডেয়ারের ক্যাচ, ইবাদত হোসেনের বলে। জয় থেকে ১ উইকেট দূরে বাংলাদেশ।
১৮৩ রানের রেকর্ড জয় বাংলাদেশের
ঘরের মাঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে ৪ উইকেট নিলেন ইবাদত হোসেন। তাঁর সর্বশেষ শিকার গ্রাহাম হিউম। আয়ারল্যান্ড থামল ১৫৫ রানেই। তাতেই রেকর্ড জয় পেল বাংলাদেশ। সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকেরা হারাল ১৮৩ রানে। রানের হিসেবে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় এখন এটিই। এর আগে বাংলাদেশ ভেঙেছিল নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড।