দক্ষিণ আফ্রিকাও চাপে আছে, জানেন সাকিব
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে ভালো শুরু পেয়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসকে প্রথম ম্যাচে ৯ রানে হারায় সাকিব আল হাসানের দল। এ ম্যাচে দারুণ বোলিং করেন বাংলাদেশের পেসাররা।
ডাচদের অলআউট করায় ৭ উইকেটই পেসারদের। সিডনিতে কাল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। কঠিন এই ম্যাচ সামনে রেখে বাংলাদেশের পেসারদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব।
ডাচদের বিপক্ষে ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং করেন তাসকিন আহমেদ। ২ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। সংবাদ সম্মেলনে তাসকিনের প্রশংসাটা আলাদাভাবেই করলেন সাকিব, ‘সে এখন (পেস বিভাগে) অন্যতম এক নেতা। মাশরাফি যাওয়ার পর গত দু–তিন বছরে বাংলাদেশের হয়ে সে অসামান্য উন্নতি করেছে। উদাহরণ তৈরি করছে। তিন সংস্করণেই আমাদের খুব ভালো ফাস্ট বোলার আছে আর তারা খুব ভালোও করছে। ফলটা এখন দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, বিশ্বকাপে তারা এভাবেই পারফর্ম করে যাবে।’
সিডনিতে কাল বাংলাদেশ সময় সকাল নয়টায় দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ডাচদের বিপক্ষে চার বিশেষজ্ঞ বোলারের পাশাপাশি খণ্ডকালীন বোলার মোসাদ্দেক হোসেন ও সৌম্য সরকারকে দিয়ে বল করান সাকিব।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পঞ্চম বোলার নিয়ে বাংলাদেশ মাঠে নামবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষ আমাদের সহজেই আমাদের সম্বন্ধে ধারণা পাক, সেটা আমরা চাই না। আমরা প্রতিপক্ষ ও কন্ডিশন মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুত করেছি। প্রতিটি ভেন্যুর আবহাওয়া থেকে প্রায় সবকিছুই তো আলাদা। আমরা এসব মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করেছি।’
হোবার্টে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে খেলে ডাচদের হারায় বাংলাদেশ। সে তুলনায় সিডনিতে ঠান্ডা কম। সিডনিতে এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশের মধ্যে টস হেরে আগে ব্যাট করে ২০০ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। আগের ম্যাচের ফল এবং কন্ডিশন দেখে টসের বিষয়টি মাথায় থাকবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেছেন, ‘টস তো আমাদের হাতে নেই। ম্যাচটা যেহেতু জেতার জন্য খেলতে নামব, আগে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যা–ই করি, ভালো করার চেষ্টা করব। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যও ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় বাঁচা-মরার ম্যাচ। তাই ওরা একটু হলেও চাপে থাকবে। আর আমরা এমন একটা মাঠে এসেছি, যেখানে আমরা যেকোনো দলের সঙ্গে খেলতে পছন্দ করব। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো উইকেটের চেয়ে এখানে (সিডনি) সাধারণত স্পিনারদের জন্য সুবিধাটা বেশি থাকে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় পয়েন্ট ভাগ করতে হয়। ৭ ওভারে ৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ ম্যাচটা হলে দক্ষিণ আফ্রিকাই জিতত। কিন্তু প্রোটিয়াদের কপাল খারাপ, পূর্ণ ২ পয়েন্ট তুলে নিতে পারেনি। সুপার টুয়েলভে একটি পয়েন্টও গুরুত্বপূর্ণ, তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় ছাড়া আর কিছুই ভাববে না দক্ষিণ আফ্রিকা। এসব দিক বিচারে চাপটা দক্ষিণ আফ্রিকার ওপরও আছে।
ওপেনিং জুটি নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যা নতুন কিছু নয়। গত ম্যাচে তবু কিছুটা ভালো হয়েছে ওপেনিং জুটি। ৫.১ ওভার পর্যন্ত ৪৩ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন। কালকের ম্যাচে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার পেস আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা।
কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নর্কিয়া ও লুঙ্গি এনগিডিদের বিপক্ষে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের লড়াই কেমন হবে, কী পরিকল্পনা, এসব নিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘অবশ্যই (গত ম্যাচের ওপেনিং জুটি) এটা আত্মবিশ্বাস দেবে। প্রথম ম্যাচে তো এক নার্ভাসনেস থাকেই। সেটি কেটে যাওয়ার পর জড়তা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। খোলা মনে খেলা উচিত। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি খেলেছি, যদিও ওয়ানডে। আইসিসি ইভেন্টেও যখন খেলেছি, আমরা জানি ওরা আমাদের কীভাবে আক্রমণ করতে পারে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সফল ছিলাম। সব ব্যাটসম্যান জানে কী করতে হবে।’