মাশরাফিদের ১ রানের স্বস্তি, জিতেও ২ রানের আক্ষেপ হৃদয়ের

১ রানে জয়ের পর লেপার্ডসের পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উমর আমিনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাছবি: শামসুল হক
তাওহিদ হৃদয়ের অপরাজিত ৯৮ রান জিতিয়েছে শেখ জামালকে। টানা পঞ্চম ফিফটি পেয়েছেন শীর্ষে থাকা আবাহনীর মোহাম্মদ নাঈম। মিরপুরে শেষ বলের নাটকে লেপার্ডসকে ১ রানে হারিয়েছে মাশরাফির লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

হৃদয়ের কাছে মুশফিকদের হার

জাতীয় দলের ব্যস্ততায় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামাল ধানমন্ডির প্রথম পাঁচ ম্যাচে খেলতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়। এ মাসের প্রথম দিনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে মোহামেডানের বিপক্ষে হৃদয় করতে পেরেছিলেন মাত্র ২ রান। এরপর থেকে অবশ্য শুধু ওপরেই উঠছে তাঁর ব্যাটিং গ্রাফ। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স, রূপগঞ্জ টাইগার্স ও আবাহনীর বিপক্ষে পরের তিন ম্যাচে হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ৪৬, ৪৩ ও ৭২ রানের ইনিংস। বিকেএসপিতে আজ সেই হৃদয় মাত্র ২ রানের জন্য লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পাননি।

সেঞ্চুরি না পেলেও জয়ের হাসি নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন হৃদয়। তাঁর অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংসের সৌজন্যেই যে প্রাইম ব্যাংককে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। মুশফিকুর রহিমের ৭৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ভর করে প্রাইম ব্যাংক অলআউট হওয়ার আগে করতে পারে ২৪৪ রান। শেখ জামাল ধানমন্ডি লক্ষ্যটা পেরিয়ে গেছে ২০ বল হাতে রেখেই।

ম্যাচেসেরার পুরস্কার হাতে তাওহিদ হৃদয়
সৌজন্য ছবি

রান তাড়ায় ইনিংসের ৪৭তম ওভারের চতুর্থ বলে যখন স্ট্রাইক পান হৃদয়, ম্যাচ জিততে মাত্র ১ রান দরকার ছিল শেখ জামালের। ৯৪ রানে দাঁড়ানো হৃদয়ের সেঞ্চুরি পেতে মারতে হতো ছক্কা। পেসার রেজাউর রহমানের বলে পুল করে মিডউইকেট দিয়ে শুধু চারই মারতে পেরেছেন হৃদয়।

হৃদয়ের ১১৮ বলের ইনিংস সাজানো ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায়। সতীর্থ ওপেনার সাইফ হাসান ৮০ বলে করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০ রান। ১৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটিতে হৃদয়ের সঙ্গী নুরুল হাসান ৫৯ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে প্রাইম ব্যাংকের ২৪৪ রানের ইনিংসে মুশফিক ছাড়া আর কেউ ৪০ রানও করতে পারেননি। শেখ জামালের পেসার ইবাদত হোসেন ৪১ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

দশম ম্যাচে পাওয়া নবম জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটের হিসাবে আবাহনী পেছনে থেকে দুইয়ে আছে শেখ জামাল।

আরও পড়ুন

রান করেই চলছেন নাঈম

টানা পঞ্চম ফিফটি পেয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম
সৌজন্য ছবি

ফতুল্লায় অগ্রণী ব্যাংককে ৯ রানে হারিয়ে নবম জয় পেয়েছে আবাহনী। ৫০তম ওভারের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে ২৬৭ রান করে ঢাকার ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটি। ফর্মে থাকা এনামুল হক আজ করতে পেরেছেন ২৮ রান। তবে উদ্বোধনী জুটিতে তাঁর সঙ্গী মোহাম্মদ নাঈম ফিফটি করেই চলেছেন। টানা পঞ্চম ফিফটি পাওয়া নাঈম ৭৫ বলে করেছেন ৭৯ রান। এবারের লিগে ১০ ম্যাচে এটি তাঁর অষ্টম ৫০ ছাড়ানো ইনিংস। ১০২.৭১ গড় ও ৯৫.৪৮ স্ট্রাইক রেটে ৭১৯ রান করে লিগের শীর্ষ রান সংগ্রাহক নাঈমই।

আবাহনী ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া আফিফ হোসেন আজ ৩০ বলে করেছেন ৩১ রান।

রান তাড়ায় শেষ দিকে খেই হারানো অগ্রণী ব্যাংক পুরো ৫০ ওভার খেলে ৬ উইকেটে করতে পারে ২৫৮ রান। ওপেনার আজমির আহমেদ ৬৩ বলে ৬০, ইলিয়াস সানি ৮০ বলে ৫৭ ও অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব ৭১ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

রূপগঞ্জের ১ রানে জয়

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জয়ের নায়ক চিরাগ জানি
ছবি: প্রথম আলো


মিরপুরে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে ঢাকা লেপার্ডসকে ১ রানে হারিয়ে অষ্টম জয় পেয়েছে মাশরাফির লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। পারভেজ হোসেন, সাব্বির রহমান ও চিরাগ জানির ফিফটিতে রূপগঞ্জ করে ৮ উইকেটে ২৬৮ রান।

রান তাড়ায় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উমর আমিনের সেঞ্চুরিতে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল লেপার্ডস। শেষ ওভারে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৭ রান দরকার ছিল নবাগত দলটির। ক্রিজে ছিলেন উমর আমিন ও সোহরাওয়ার্দী শুভ। তবে ভারতীয় অলরাউন্ডার চিরাগ জানি প্রথম ৫ বলে দিলেন মাত্র ৫ রান। ১ বলে ২ রান, এমন সমীকরণে দাঁড়িয়ে স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটসম্যান সোহরাওয়ার্দী মিডউইকেটের দিকে ঠেলেই পড়িমরি দৌড় দেন। কিন্তু শর্ট মিডউইকেট ফিল্ডার পারভেজ হোসেন বল হাতে দৌড়ে এসে ভেঙে দেন ননস্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট। উমর আমিন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৩৩ বলে ১২৮ রান করে।

আরও পড়ুন