২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হার্টলি যেভাবে সোহাগ গাজী, ডু প্লেসিকে মনে করালেন

প্রথম বলে ছক্কা খেলেও পরে ৭ উইকেট পেয়েছেন টম হার্টলিবিসিসিআই

টম হার্টলি কি বাংলাদেশের সোহাগ গাজীকে চেনেন?

বছর দেড়েকের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১০টি ম্যাচ খেলেছিলেন বাংলাদেশের এই অফ স্পিনার। শেষ টেস্টটি ২০১৪ সালে। গাজী যখন সর্বশেষ টেস্ট খেলেন, হার্টলি তখন ১৪ বছরের কিশোর। বয়স, গাজীর পরবর্তী ক্যারিয়ার আর ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাঙ্গনে বাংলাদেশের যে অবস্থান, সব মিলিয়ে না চেনার সম্ভাবনাই বেশি। অথবা কে জানে, নামটা হয়তো শুনেছেন সোহাগ গাজীর অমর এক কীর্তির কারণে। টেস্ট ক্রিকেটে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি আর হ্যাটট্রিকের বিশ্ব রেকর্ডের কীর্তি।

আগে নাম শুনুন বা না শুনুন, টম হার্টলি এখন ব্র্যাকেটবন্দী গাজীর সঙ্গেই। সেখানে অবশ্য গাজী আর হার্টলিই নন, ফাফ ডু প্লেসিও আছেন। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম বলেই ছক্কা খাওয়ার তিক্ত স্বাদ শুধু এই তিনজনই পেয়েছেন।

আরও পড়ুন

২৪ বছর বয়সী হার্টলির বাজে শুরু এখন বহুল আলোচিত। কাল শেষ হওয়া হায়দরাবাদ টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ২৮ রানের জয়ের অন্যতম নায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ রানে তুলে নিয়েছেন ৭ উইকেট। কিন্তু এর আগে, প্রথম ইনিংসে? পিচের কন্ডিশন বুঝে ইংল্যান্ড একাদশে রেখেছিল মাত্র এক পেসার। স্বাভাবিকভাবে শুরুতেই বল হাতে নেওয়ার কথা একজন স্পিনারের। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস বোলিং শুরু করানোর জন্য সেই স্পিনার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন অভিষিক্ত হার্টলিকে, যদিও দলে ছিলেন জ্যাক লিচ আর রেহান আহমেদের মতো আগেই টেস্ট খেলা স্পিনারও।

টেস্ট অভিষেকে প্রথম বলে ছক্কা খেয়েছিলেন সোহাগ গাজী
সংগৃহীত

হার্টলির প্রথম বলেই স্লগ সুইপে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছয় মেরে দেন যশস্বী জয়সোয়াল, যা টেলিভিশনে দেখে থাকলে সোহাগ গাজীর নির্ঘাত মনে পড়েছে নিজের সেই অভিজ্ঞতা। টেস্টে প্রথম বলেই ছক্কা খাওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা তো তাঁরই। ২০১২ সালের ১৩ নভেম্বর মিরপুরে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম দিন ছিল সেটি। টসে জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ে নামলে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বল তুলে দেন সোহাগ গাজীর হাতে।

যিনি এর আগে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিও খেলেননি। ১৯০৯ সালের পর (ইংল্যান্ডের ডগলাস কার) সেটিই ছিল অভিষিক্ত স্পিনার দিয়ে টেস্টে আক্রমণ শুরুর প্রথম ঘটনা।মুশফিক গাজীর হাতে বল তুলে দিয়ে চমক সৃষ্টি করার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা চমকে দেন ক্রিস গেইল। প্রথম বলটিকেই তুলে মারেন লং অনের ওপর দিয়ে—৬।

আরও পড়ুন

টেস্টের প্রথম বলেই ছয়। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বলেই কোনো বোলারের ছক্কা খাওয়ার প্রথম ঘটনা এটি। টেস্টের প্রথম বলে ছক্কাও ছিল সেই প্রথম। এখন পর্যন্ত একমাত্রও।এর ৯ দিন পরই অবশ্য এই বিব্রতকর অভিজ্ঞতায় একজন সঙ্গী পেয়ে যান সোহাগ গাজী। তবে নামটি ফাফ ডু প্লেসি বলেই হয়তো তা সেভাবে আলোচিত নয়। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক তো আর নিয়মিত বোলার ছিলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে অনেকটা আচমকাই ডু প্লেসির হাতে বল তুলে দেন গ্রায়েম স্মিথ।

হার্টলে ও সোহাগ গাজীর সঙ্গী ফাফ ডু প্লেসিও
এএফপি

লাঞ্চ বিরতি শেষে কেবল দ্বিতীয় সেশন শুরু হয়েছে। ডেভিড ওয়ার্নার আর মাইকেল ক্লার্কের তৃতীয় উইকেট জুটির রান পেরিয়েছে ৬৭। এমন সময়ে খণ্ডকালীন লেগ স্পিনার ডু প্লেসির হাতে বল। প্রথম বলটিই ফুল টস। ওয়ার্নার কি আর এই সুযোগ ছাড়ার লোক! স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে এত দূরে বল পাঠান যে বলটা আর ফেরতই আনা যায়নি। নতুন বল এনে খেলা শুরু করতে হয়।ফাফ ডু প্লেসি টেস্ট ক্যারিয়ারে বোলিংই করেছেন মোট ১৩ ওভার। সেটিও ৫ ইনিংস মিলিয়ে।

আরও পড়ুন

যে কারণে টেস্টে নিজের প্রথম বলে ছক্কা খাওয়ার কথা বললে সোহাগ গাজীর কথাই বেশি মনে হতো সবার। হার্টলির কল্যাণে সোহাগ গাজীর সঙ্গে এখন আলোচনায় উঠে এসেছেন ডু প্লেসি। ইংল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার অবশ্য একটি জায়গায় এগিয়ে গেছেন। সোহাগ গাজীর প্রথম বলে ছয় হজম করা ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল। ডু প্লেসির প্রথম বলে ছক্কার ম্যাচ শেষ হয়েছিল ড্রতে। যেখানে হার্টলি মাঠ ছেড়েছেন জয়ের হাসি নিয়ে। স্মরণীয় যে জয়ের অন্যতম নায়কও তিনি।