টি–টোয়েন্টি আসার পর রব উঠেছিল, ওয়ানডে ক্রিকেট থাকবে তো? কিন্তু ৫০ ওভারের সংস্করণ এখনো টিকে আছে। যদিও গত জুলাইয়ে ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) ২০২৭ বিশ্বকাপের পর ‘ছেলেদের ওয়ানডে’ ক্রিকেট কমিয়ে নিয়ে আসার সুপারিশ করেছিল। বিশ্বকাপের বাইরে ওয়ানডের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছিল এমসিসির ক্রিকেট কমিটি। এবার এমসিসির নতুন সভাপতি মার্ক নিকোলাস বললেন, ওয়ানডে খেলা হোক শুধু বিশ্বকাপেই।
এমসিসি সভাপতি হিসেবে স্টিভেন ফ্রাইয়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের সাবেক অধিনায়ক ও খ্যাতিমান ধারাভাষ্যকার নিকোলাস। গত জুলাইয়ে এমসিসির ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি বিশ্বকাপের বাইরে ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ ওয়ানডে কমিয়ে আনার যে সুপারিশ করেছিল, তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট ‘এ’ মিলিয়ে ২৫ হাজারের বেশি রান করা নিকোলাস।
ক্রিকইনফোকে এ নিয়ে নিকোলাস বলেছেন, ‘আমরা জোরালোভাবে বিশ্বাস করি, ওয়ানডে শুধু বিশ্বকাপেই খেলা উচিত। এই সংস্করণের সার্থকতার জন্য দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলো কঠিন হয়ে উঠছে। অনেক দেশেই গ্যালারি ভরছে না। আর এখন টি–টোয়েন্টির ক্ষমতাও অতিপ্রাকৃত।’
নিকোলাস এরপর বিষয়টি বুঝিয়ে বলেছেন এভাবে, ‘বিষয়টি শুধু টিকিট বিক্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ না। এখন অনেকেই ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনতে চায়। প্রচুর দেশ টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায়। প্রচুর খেলোয়াড় বৈশ্বিকভাবে আলোচনায় থাকতে চায়। এই মুক্তবাজারে যার টাকা বেশি, সেই জিতবে। আর পার্থক্যটা এখানেই। খেলোয়াড়েরাও এই বাজারের অংশ হতে চায়—এটাই টি–টোয়েন্টির অসাধারণ ক্ষমতা। আর এর পাশাপাশি ৫০ ওভারের সংস্করণও চালিয়ে গেলে সেটি ওয়ানডে ক্রিকেটকে মৃত্যুর দিকেই ঠেলে দেবে।’
নিকোলাস মেনে নিয়েছেন, ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের আগে তাঁর এই মন্তব্য আইসিসির ভাবনাচিন্তায় তেমন প্রভাব ফেলবে না। তবে নিজেদের যতটুকু ক্ষমতা আছে, সেটুকু ব্যবহার করেই এমসিসি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন নিকোলাস। যদিও খেলাধুলার প্রশাসনিক কাজে এমসিসির সরাসরি অংশগ্রহণের দিনগুলো অনেক আগেই ফুরিয়েছে।
নিকোলাস তবু বুঝিয়ে বললেন এভাবে, ‘এমসিসি এ বিষয়ে আর কতটা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে? বৈশ্বিক ক্রিকেটে আমাদের (এমসিসি) প্রাসঙ্গিকতা হারানোর ঝুঁকি কি আছে? আমরা কি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটিকে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি? সমস্যা হলো, আইসিসি এখন আমাদের কিছুটা হুমকি বলেই মনে করে। যখনই আমরা আওয়াজ জোরালো করেছি তখন আইসিসির ভাবখানা এমন যে “শান্ত হও, খেলাটা আমরা পরিচালনা করি।” তাই আইসিসির সঙ্গে আমাদের একীভূত হওয়াটা আরও ভালোভাবে করতে হবে।’