চট্টগ্রামে সমীকরণ মিলিয়ে বিপিএল এখন ঢাকায়
বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্ব মানে রান-উৎসব। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোরের প্রথম ৮টিই সেখানে। এবারের আসরও ব্যতিক্রম নয়, এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্কোরের প্রথম দুটিই এসেছে চট্টগ্রামে। ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচেই বিপিএলের রেকর্ড ২৩৯ রান তুলেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে), ঠিক পরের ম্যাচেই রংপুর রাইডার্স ২১৯ রান তুলেছিল খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে।
সর্বোচ্চ স্কোরের তালিকায় প্রথম দুটি নাম যেমন রংপুর ও গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার, চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকাতেও তা–ই। দুই দলই চট্টগ্রামে গিয়েছিল প্লে-অফে এক পা রেখে। চট্টগ্রামেও জয়ের ধারা ধরে রেখে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফের পর কোয়ালিফায়ারও নিশ্চিত করে ফেলে রংপুর। টানা ৮ ম্যাচ জয়ের পর গতকাল চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে কুমিল্লার কাছে ৬ উইকেটে হারাটাও তাই তাদের গায়ে লাগছে না। কালকের জয়ে কোয়ালিফায়ারে উঠে গেছে কুমিল্লা, যেখানে কালকের ম্যাচে দুই দলই মুখোমুখি হবে আবারও। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৬৫ রানে হারিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এলিমিনেটরে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বরিশাল ফরচুন একরকম নিশ্চিতই বলা যায়।
চট্টগ্রাম পর্বে প্লে-অফে দুটি জায়গার জন্য মূলত ফরচুন বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনার মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই ছিল। টানা হারের মধ্যে থাকা দুর্দান্ত ঢাকা ও গতবারের রানার্সআপ সিলেট স্ট্রাইকার্সের সম্ভাবনা ছিল খাতা-কলমেই। সে সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি তারা। রংপুর ও কুমিল্লার পর চট্টগ্রামও প্লে–অফ নিশ্চিত করে ফেলায় কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেছে বরিশালও। প্লে-অফের আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের দুটি ম্যাচ তাই এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতার! রংপুরকে টপকে কুমিল্লা পয়েন্ট তালিকার ১ নম্বরে যেতে পারে কি না, এ নিয়েই যা কৌতূহল।
গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে চট্টগ্রামের সমীকরণ ছিল এমন—জিতলে প্লে-অফ নিশ্চিত, হারলে পড়ে যেতে হবে অনেক ‘যদি-কিন্তু’র সমীকরণের মধ্যে। এমন চাপের ম্যাচে তানজিম হাসানের শতকে ১৯২ রান তোলা চট্টগ্রাম পর খুলনাকে আটকে দেয় ১২৭ রানেই। প্লে-অফে যেতে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না খুলনার, সেখানে বোলিং-ব্যাটিং কোনোটিতেই সুবিধা করতে পারেনি তারা। প্রথম ৪ ম্যাচ জিতে বিপিএল শুরু করেছিল খুলনা, কিন্তু পরের ৭ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ১টিতে।
এই হারের পর খুলনার প্লে-অফে যাওয়ার সম্ভাবনা কার্যত কাগজে-কলমেই। বরিশালের পয়েন্ট ১২, খুলনার ১০। দুই দলেরই বাকি ১টি করে ম্যাচ। নেট রানরেটেও খুলনা (-০.৪০০) বরিশালের (+০.৪৩৪) চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে। চট্টগ্রামের কাছে বড় ব্যবধানে হার নেট রানরেটেও ভালো প্রভাব ফেলেছে। ফলে খুলনাকে প্লে-অফে যেতে কুমিল্লার কাছে বরিশালকে হারতে হবে বিশাল ব্যবধানে, পরে সিলেটের বিপক্ষে খুলনাকে জিততে হবে বড় ব্যবধানে। তার ওপর বরিশাল আছে দারুণ ফর্মে। প্রথম ৪ ম্যাচের ৩টি হারলেও পরের ৭ ম্যাচে ৫টিই জিতেছে তামিম ইকবালের দল। সব মিলিয়ে খুলনার কাজটা যে প্রায় অসম্ভব, কালকের হারের পর তা মেনে নিয়েছেন খুলনার অধিনায়ক এনামুল হকও।
প্লে-অফের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম দুটি দল খেলবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। ২৬ ফেব্রুয়ারির সেই ম্যাচে জয়ী দল সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে, পরাজিত দলের সুযোগ থাকবে আরেকটি। তখন তারা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে এলিমিনেটরে জয়ী দলের সঙ্গে। গতকাল রংপুরের কাছে হারলেও প্রথম কোয়ালিফায়ারে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কুমিল্লার, এমনকি পরের ম্যাচে হেরেও শীর্ষ দুইয়ে যেতে পারত তারা।