টানা ৪ ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্ট শুরু করা খুলনার বিদায়ের তিন কারণ
কী দুর্দান্ত শুরু! এনামুল হকের খুলনা টাইগার্স এবারের বিপিএল শুরু করেছিল টানা ৪ ম্যাচে জিতে। অথচ এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে খুলনার জয় মাত্র ১টি!
টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচে এখন খেলছে খুলনা। এই ম্যাচের জয়-পরাজয় তাদের কোনো কাজে আসবে না। যা হওয়ার আগেই হয়েছে। দিনের আগের ম্যাচে বরিশাল জেতায় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে খুলনা। কেন এমন দারুণ শুরুর পরও খুলনার এ দশা?
স্থানীয় ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা
এ ক্ষেত্রে সবার আগে আসবে আফিফ হোসেনের নাম। খুলনার আস্থার প্রতিদান রাখতে পারেননি এই ক্রিকেটার। আজ খুলনা-সিলেটের ম্যাচের আগপর্যন্ত এবার বিপিএলে ১১ ইনিংসে আফিফ রান করেছেন ২৫.১১ গড়ে ২২৬। স্ট্রাইক রেটটাও টি-টোয়েন্টিসুলভ নয়—১১৫.৮৯। সেটাও ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ২১ বলে ৪৩ রানের ইনিংসের কল্যাণে। ফিফটি নেই একটিও।
এবারের বিপিএলে শীর্ষ ১০ রান সংগ্রাহকের মধ্যে খুলনার একমাত্র প্রতিনিধি অধিনায়ক এনামুল, ১১ ইনিংসে যিনি ৩৫.৭৫ গড় ও ১২১.১৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৮৬ রান। খুব আহামরি নয়। তবে মাহমুদুল হাসান ও পারভেজ হোসেনদের মধ্যে কেউ যদি এটুকু অবদানও রাখতে পারতেন, হয়তো খুলনাকে এতগুলো ম্যাচ হারতে হতো না।
উইকেটশিকারির অভাব
ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ জেতান, বোলাররা জেতান টুর্নামেন্ট। ক্রিকেটে এ রকম একটা কথা আছে। খুলনার ব্যাটসম্যানরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি, আর বোলাররা তো একেবারেই ব্যর্থ। টুর্নামেন্টে শীর্ষ ১০ উইকেটশিকারি দূরে থাক, শীর্ষ ২০–এর মধ্যেই নেই খুলনার কোনো বোলার। ৮ উইকেট নিয়ে ২১তম স্থানে আছেন খুলনার পাকিস্তানি পেসার ফাহিম আশরাফ, যিনি বিপিএলে সর্বশেষ খেলেছেন ৭ ফেব্রুয়ারি।
তরুণ পেসার মুকিদুল ইসলাম ৯ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৮টি, ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৯.০৩ করে। নাসুম আহমেদও নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। ১০ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৮টি। এমন বোলিং দিয়ে কি আর বিপিএলের সেরা ৪ দলের একটি হওয়া যায়!
বিদেশি বিকল্পের অভাব
ওয়াসিম জুনিয়র, মোহাম্মদ নেওয়াজ, দাসুন শানাকা, ফাহিম আশরাফরা বিপিএল ছাড়ার পরই মূলত খুলনা আর ভালো করতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ এভিন লুইস ১০ ইনিংসে রান করেছেন ২০৭, স্ট্রাইক রেট ১৬২.৯৯। তবে তাঁর ম্যাচ জেতানো ইনিংস মাত্র একটি, বরিশালের বিপক্ষে (২২ বলে ৫৩ রান)।
ওইয়েন পারনেল, জেসন হোল্ডার, শাই হোপদের মতো পরে আসা বিদেশি খেলোয়াড়েরা দলকে জেতানোর মতো কিছু করতে পারেননি। অবশ্য বিদেশিদের অনেকেই যখন এসেছেন, তত দিনে খুলনা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। পার্থক্য গড়ে দেওয়ার যথেষ্ট সময়ও পাননি তাঁরা।