কোহলির রাগী উদ্যাপন এখন অতীত, কিন্তু কেন
সময় মানুষকে শেখায়। গত আড়াই বছরে বিরাট কোহলিও অনেক শিখেছেন। আইসিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক জানিয়েছেন, এই সময়ে তিনি অনেক পাল্টেছেন। সেই আগের কোহলি আর নেই।
কোন কোহলি? তিন-চার বছর আগের স্মৃতি স্মরণ করতে পারেন। মাঠে কোহলির শরীরী ভাষা ছিল ভীষণ আক্রমণাত্মক। ব্যাটিংয়ে, ফিল্ডিংয়ে এমনকি উদ্যাপনেও তীব্র আক্রমণাত্মক মানসিকতা দেখাতেন। ২০২১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে উইকেট পড়ার পর ‘ট্রামপেট’ (এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র) উদ্যাপন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। গত বছর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের লিটন দাস আউট হওয়ার পরের ব্যঙ্গাত্মক উদ্যাপন নিয়েও তৈরি হয় বিতর্ক।
২০২২ সালেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপ টাউন টেস্টের তৃতীয় দিনে রিভিউর সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে মাঠের স্টাম্প মাইকে গিয়ে বলেছিলেন যাচ্ছেতাই। ইতিহাস ঘাঁটলে কোহলির এমন অনেক বিতর্কিত উদ্যাপনই সামনে চলে আসবে। তবে এসব বিতর্কের অন্য পিঠে কিন্তু আরেকটি কথাও ছড়িয়েছে—কোহলি খেলাটা প্রচণ্ড ভালোবাসেন বলেই মাঠে সব সময় আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকেন।
কিন্তু সাম্প্রতিককালে সেই কোহলিকে কি মাঠে দেখা যাচ্ছে? একটা প্রচলিত কথা হলো, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ আরও শান্ত হয়। কোহলির ক্ষেত্রেও বয়সের প্রভাব হয়তো পড়েছে, তবে রূপান্তরের কাজটা তো নিজেকেই করতে হয়েছে! আইসিসির সঙ্গে আলাপচারিতায় সে কথাই বলেছেন কোহলি, ‘গত আড়াই বছরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। সেই রাগী উদ্যাপনগুলো এখন অতীত। অনেকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। লোকে বলেছে, আমি যা করছি সেটা ভুল।’
কোহলি জানিয়েছেন, তাঁর এই পাল্টে যাওয়াটা মনস্তাত্ত্বিক, ‘নিজের সেরা সময়ের সব ভিডিও আমি দেখেছি। বলের জন্য সেই একই প্রাথমিক নড়াচড়া, একই অ্যাপ্রোচ এবং যা কিছু আমার মাথার মধ্যে ঘটেছে চলেছে (বোঝার চেষ্টা করেছি)। আমি এটা কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারিনি।’
গত বছর সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করে তিন সংস্করণ মিলিয়ে দীর্ঘদিনের সেঞ্চুরি খরা ঘোচান কোহলি। এরপর ওয়ানডে ও টেস্টেও সেঞ্চুরি পেয়েছেন। আর তিনটি সেঞ্চুরি করলেই ওয়ানডেতে শচীন টেন্ডুলকারের (৪৯) রেকর্ড ভেঙে ফেলবেন কোহলি। সামনে যেহেতু ওয়ানডে বিশ্বকাপ তাই এই টুর্নামেন্টকেই পাখির চোখ করার কথা ভারতীয় তারকা। বদলে যাওয়া কোহলি টেন্ডুলকারের রেকর্ড এই বিশ্বকাপেই ভেঙে ফেলেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।