তিন দিন আগেও ইফতিখার আহমেদ ছিলেন ঢাকায়। বিপিএলে শুক্রবার রাতে ফরচুন বরিশালের হয়ে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে খেলেন ৩১ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ম্যাচ শেষে ছুটে যান বিমানবন্দরে। ইফতিখারের ওই তাড়াহুড়োর মূলে ছিল একটি প্রদর্শনী ম্যাচ।
রোববার পেশোয়ার জালমি বনাম কোয়েটা গ্লাডিয়েটরসের ম্যাচটিতে ওয়াহাব রিয়াজের এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরেছেন পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান। বিপিএলের ছন্দটা পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া ইফতিখার ৫৪ বলে করেছেন ৯৪ রান। মজার ছলে একজন তো এমনও টুইট করলেন, বিপিএলে হাত পাকিয়ে গেছেন ইফতিখার।
বিপিএলে তাঁর ছার–ছক্কার সংখ্যা কিন্তু ‘হাত পাকানো’র পক্ষেই বলছে। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ২৩ ছক্কা ইফতিখারেরই। আরেক পাকিস্তানি শোয়েব মালিক ছয় মেরেছেন ১৩টি। শুধু পাকিস্তানের এ দুই ব্যাটসম্যানই নন, বিপিএলে ছয় বেশি মারছেন বিদেশিরাই।
সর্বোচ্চ ছয়ের তালিকায় প্রথম পাঁচের চারজনই বিদেশি। কমপক্ষে ১০টি ছয় মারা ১৭ জনের মধ্যে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান আছেন মাত্র ৭ জন। তবে বিপরীত চিত্র চারের ক্ষেত্রে। সর্বোচ্চ চার মারার তালিকায় ৮ নম্বর পর্যন্ত সবাই বাংলাদেশের।
কোন দলের কত ছয়
এবারের বিপিএলে খেলছে ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। এখন পর্যন্ত খেলা ৩৬ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে মোট ৪৪০টি, যা বিপিএলের সর্বশেষ আসরের চেয়ে বেশি। গত বছর ৬ দল নিয়ে আয়োজিত বিপিএলে মোট ম্যাচই ছিল অবশ্য ৩৪টি, মোট ছয়ের সংখ্যা ছিল ৪০৩টি।
এবার ছয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় অবদান ফরচুন বরিশালের। ৭ দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৭টি ছয় সাকিব আল হাসানের দলের। আর তিনটি হলেই প্রথম দল হিসেবে ছক্কার তিন অঙ্ক স্পর্শ করবে দলটি। ইফতিখারের ২৩–এর পর দলটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০টি ছয় মেরেছেন অধিনায়ক সাকিব। সার্বিক হিসেবে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক আছেন ৩ নম্বরে।
ছয় মারায় সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান
ইফতিখারের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১টি ছয় জনসন চার্লসের। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটসম্যান খুলনার বিপক্ষে ১০৭ রানের ইনিংসে ১১টি ছয় মারেন। ইফতিখার পাকিস্তানে চলে গেছেন, চার্লস এখনো আছেন। কুমিল্লা সেরা দুইয়ে থেকে প্লে–অফে উঠলে সর্বোচ্চ ছয়ের কীর্তিটি হয়তো চার্লসেরই হয়ে যাবে।
সর্বোচ্চ ছয়ের প্রথম পাঁচে ৪ ও ৫ নম্বরে দুই পাকিস্তানি—শোয়েব মালিক ও আজম খান। রংপুরের হয়ে খেলা শোয়েব ১০ ইনিংসে ১৩টি আর খুলনার হয়ে খেলা আজম ৮ ইনিংসে ১২টি ছয় মেরেছেন।
বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাকিবের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছয় তৌহিদ হৃদয়ের। সিলেট স্ট্রাইকার্সে খেলা এই ওপেনারের ছয়ও ১২টি। এরই মধ্যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে যাওয়া হৃদয় চার মেরেছেন বেশি। ৮ ইনিংসে ২৫০ বল খেলে ৪০টি, গড়ে প্রতি ছয় বলে একটি করে।
চারের বাউন্ডারিতে দ্বিতীয় স্থানে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সিলেটের এই বাঁহাতির চার ৩৯টি, হৃদয়ের চেয়ে ২ রান কম নিয়ে তিনি এখন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।
চার মারায় সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৬টি চার রনি তালুকদারের। রংপুরের এই ব্যাটসম্যান ৯ ইনিংসে ২৮৯ রান করার পথে ৩৬টি চারের পাশাপাশি ৭টি ছয় মেরেছেন। চট্টগ্রামের হয়ে খেলা আফিফের চার ৩৫টি, বরিশালের হয়ে ২০ ছয় মারা সাকিবের চার ৩৪টি। ঢাকার নাসির হোসেন আর খুলনার তামিম ইকবালের চারের সংখ্যা ৩৩টি করে। বিদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮টি চার চট্টগ্রামে খেলা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উসমান খানের।