‘গোমূত্র–পোস্টে’র জন্য ক্ষমা চাইলেন পাকিস্তানি নারী সঞ্চালক
মুখ খুললেন জয়নাব আব্বাস। পাকিস্তানি ক্রিকেট সঞ্চালক জয়নাব ‘এক্সে’ এক বার্তায় জানিয়েছেন কেন তাঁকে বিশ্বকাপের মধ্যে ভারত ত্যাগ করতে হলো।
ক্রিকেট বিশ্বের পরিচিত মুখ জয়নাব আব্বাস। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের টেলিভিশন সম্প্রচারে মাইক্রোফোন হাতে সঞ্চালনা করতে দেখা যায় তাঁকে। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ কাভার করতে স্টার স্পোর্টসের হয়ে ভারতে এসেছিলেন এই পাকিস্তানি নারী। কিন্তু তিন দিনের মাথায় তাঁকে ভারত ছাড়তে হয়। ভারতের এক আইনজীবী বিনীত জিন্দাল তাঁর বিরুদ্ধে সাইবার আইনে ‘হিন্দুবিরোধী ও ভারতবিদ্বেষী’ মন্তব্যের অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও আইসিসি জানিয়েছিল, জয়নাব ভারত ছেড়েছেন ব্যক্তিগত কারণে।
পাকিস্তানে ফিরে গিয়ে ভারত ছাড়ার কারণ জানিয়েছেন জয়নাব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জয়নাব গতকাল এ ব্যাপারে একটা পোস্ট দিয়েছেন। নিজের অতীতের সেই পোস্টের জন্য ক্ষমা চেয়ে জয়নাব লিখেছেন, ‘আমাকে ভারত ছাড়তে বলা হয়নি, ভারত থেকে বেরও করে দেওয়া হয়নি। এমনকি আমার ওপর কোনো নিরাপত্তা হুমকিও ছিল না। তবে আমার পরিবার ও সীমান্তের দুই প্রান্তের বন্ধুবান্ধবেরা আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ও বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে যা ঘটেছে, সেটির ওপর আলোকপাত করার জন্য আমার কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়েছিল।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে পোস্টের জন্য এত কিছু, সেটি নিয়ে দুঃখই প্রকাশ করেছেন জয়নাব, ‘আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে অনেকেই ব্যথিত হয়েছেন, সে জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি স্পষ্ট করতে চাই, আমি মনেপ্রাণে যা বিশ্বাস করি, আমি ব্যক্তি হিসেবে যা, তা এই পোস্টে প্রতিফলিত হয়নি।’
তবে সে পোস্ট যে অনুচিত ছিল, সেটি স্বীকার করেছেন জয়নাব, ‘এ ধরনের ভাষা কিংবা বক্তব্যের কোনো জায়গা কোথাও হতে পারে না। সেই পোস্টে যাঁরা আঘাত পেয়েছেন, আমি তাঁদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। একই সঙ্গে আমার এই কঠিন সময়ে যাঁরা আমার নিরাপত্তা নিয়ে ভেবেছেন, যাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
জয়নাব ৯ বছর আগে টুইটারে করা এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘নয়াদিল্লির গন্ধ গোমূত্রের মতো।’
এ পোস্টকেই সামনে নিয়ে এসে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল দিল্লির একটি আদালতে সাইবার আইনে অভিযোগ করেন। ৫ অক্টোবর করা সেই অভিযোগে জিন্দাল বলেন, ভারত ও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন জয়নাব আব্বাস। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং আইসিসিকেও ব্যাপারটি জানিয়েছেন বিনীত। তিনি জয়নাবকে বিশ্বকাপের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ করেন। দিল্লি পুলিশকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ, ২৯৫, ৫০৬, ১২১ ধারায় জয়নাবের বিরুদ্ধে এফআইআর করার অনুরোধ করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭ ধারাও প্রয়োগ করতে বলেছেন।
জয়নাব ভারত ত্যাগের পর জিন্দাল এক্সে লেখেন, ‘অনেক বড় জয় পেয়েছি। জয়নাব আব্বাসকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ জিন্দাল ‘দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য’ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন।