ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বৈরী অবস্থার শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ ঘিরে। এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই ‘না’ বলে এসেছে ভারত। পাকিস্তানও ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে না যাওয়ার পাল্টা হুমকি দিয়ে রেখেছে।
শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রস্তাব মেনে নিয়ে ‘হাইব্রিড মডেলে’ হতে চলেছে এশিয়া কাপ। পাকিস্তানের সঙ্গে টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা। ভারত ছাড়া প্রথম চার ম্যাচ পাকিস্তানে আর ভারতসহ টুর্নামেন্টের বাকি অংশ হওয়ার কথা শ্রীলঙ্কায়।
ভারত এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে না যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি) এখন চাচ্ছে, বিশ্বকাপে বাবর-রিজওয়ানদের ম্যাচগুলো যেন নিরপেক্ষ ভেন্যুতে রাখা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে আইসিসির বার্ষিক সভায় এ প্রস্তাব দেওয়ার কথা পিসিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাকা আশরাফের।
দুই দেশের সরকার ও ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে যতই বৈরী অবস্থা থাক, মিসবাহ–উল–হকের চাওয়া বিশ্বকাপ খেলতে আফ্রিদি–শাদাবদের ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত।
মিসবাহর মতে, রাজনৈতিক কারণে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের খেলা দেখা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না। করাচিতে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক কোচ ও অধিনায়ক বলেছেন, ‘দুই দেশ অন্য খেলাগুলোকে মুখোমুখি হতে পারলে ক্রিকেটে কেন নয়? ক্রিকেটকে কেন রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে? সমর্থকেরা তাঁদের দলকে মুখোমুখি হতে দেখতে চান। খেলা দেখার সুযোগ থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা অন্যায় হবে। পাকিস্তান বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে না গেলে সমর্থকদের প্রতি বড় অবিচার করা হবে।’
মিসবাহ মনে করেন, ভারত–পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নিয়মিত হওয়া উচিত, ‘আমি ভারতে বহুবার খেলেছি। ভারতীয় সমর্থকে পরিপূর্ণ মাঠের চাপ আমরা উপভোগ করেছি। এটা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ভারতের কন্ডিশনের সঙ্গেও আমরা সহজে মানিয়ে নিতে পারি। আমাদের দলেরও (বাবর–রিজওয়ানদের) সেখানে ভালো করার সামর্থ্য আছে।’
বাইরের ঘটনায় কান না দিয়ে উত্তরসূরিদের খেলায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মিসবাহ, ‘ওদের বলয়ের বাইরে কী চলছে, তা নিয়ে চিন্তা করা উচিত নয়। ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে ভালো করার চাবিকাঠি হলো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে নির্দিষ্ট দলের জন্য সঠিক একাদশ বাছাই করা।’
শুধু মিসবাহ নন, শহীদ আফ্রিদিরও চাওয়া বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাক পাকিস্তান। সাবেক তারকা অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘মানুষ বলছে, ভারতে বিশ্বকাপ আমাদের বয়কট করা উচিত। কিন্তু আমি পুরোপুরি এর বিরোধী। ভারতে খেলতে গেলে চাপ থাকবেই; তবে বেশ মজাও হয়।’
বিশ্বকাপের লিগ পর্বে পাকিস্তানের ৯ ম্যাচ রাখা হয়েছে ভারতের পাঁচ ভেন্যুতে। হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও কলকাতায় দুটি করে ম্যাচ আছে বাবর–রিজওয়ানদের। অন্য ম্যাচটি আহমেদাবাদে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে।