ডি ককের জন্য ফাইনালের মঞ্চটা তৈরি 

ব্যাটিং অনুশীলনে কুইন্ট ডি ককরয়টার্স

২০২১ সালে আচমকাই বিদায় বলেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটকে। সর্বশেষ বিশ্বকাপ দিয়ে বিদায় বলেছেন ওয়ানডেকেও। হয়তো চাইলেই ১০০ টেস্ট খেলতে পারতেন, সেটির ইতি টেনেছেন ৫৪ টেস্টেই। হয়তো ওয়ানডেতে ১০ হাজার রান সম্ভব ছিল, সেটি থমকে গেছে ৬৭৭০ রানেই। অথচ আগামী ডিসেম্বরে গিয়ে কুইন্টন ডি কক পূর্ণ করবেন ৩২ বছর!

এ যুগে ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বা দু-একটি সংস্করণ আগেভাগে ছাড়া এখন নিয়মিতই। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের জন্য তো সেটি পুরোনোই। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর দাপটের বেশ আগে থেকেই তো একসময়ের কলপ্যাক চুক্তির কারণে কম ক্রিকেটার হারায়নি দেশটি। ডি ককের ঘটনাটি তাই হয়তো একেবারে নতুন কোনো ভাবনার খোরাক জোগায়নি।

সেই ডি কক আজ নামছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পুরুষ দলের প্রথম কোনো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে। ক্যারিয়ারের শুরুতেই অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, মার্ক বাউচারের মতো কিংবদন্তি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের সঙ্গে তুলনা করা হতো ডি ককের।

একসময় তিন সংস্করণেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম পছন্দের উইকেটকিপার ছিলেন এই বাঁহাতি। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৫ ও ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারা দলের অংশ ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনাল-গেরো অবশেষে খুলেছে, ডি কক সেদিক থেকে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন।

এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান ডি ককের
আইসিসি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফাইনালে তুলতে অধিনায়ক এইডেন মার্করামের নামটি স্বাভাবিকভাবেই সামনে আসছে বারবার। তবে ডি কক দলের অন্যতম অভিজ্ঞ সদস্য, যদিও গ্রুপ পর্বে ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি সেভাবে। কিন্তু সুপার এইটে এসে জ্বলে ওঠেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪০ বলে ৭৪ রানের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮ বলে করেন ৬৫ রান। দুটিতেই ম্যাচসেরা তিনি। সেমিফাইনালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছোট রান তাড়ায় অবশ্য আউট হন শুরুতেই।

ওয়ানডে অবসরের ঘোষণার সময় জানা গিয়েছিল, অন্তত এ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। তবে আজকের ম্যাচের পর এ সংস্করণে তাঁর ভবিষ্যৎটাও ঠিক নিশ্চিত নয়। তবে আজ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অন্যতম বড় ভূমিকা রাখতে পারেন এই ওপেনার।

আরও পড়ুন

ফাইনালের মতো মঞ্চে স্বাভাবিকভাবেই ভালো একটা শুরু চাইবে যেকোনো দলই, দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ভরসা সেখানে ডি কক। শুরুতে তাঁর একটি ইনিংস বদলে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথ। এমনিতে ভারতের বিপক্ষে এ সংস্করণে ডি ককের রেকর্ড বেশ ভালোই। ক্যারিয়ার গড় যেখানে ৩১.৪১, ভারতের বিপক্ষে সেটি ৪৪.৫৭। ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেটও বেড়ে যায় ভারতের সঙ্গে। ১০ ইনিংসে আছে ৪টি ফিফটি।

আজকের ফাইনালই দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে কুইন্টন ডি ককের শেষ ম্যাচ হতে পারে
আইসিসি

অবশ্য ১০ বছর আগে মিরপুরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ৪ বল খেলেই। তবে এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা দল আলাদা, অন্তত ফাইনালে উঠে সেটিই প্রমাণ করেছে তারা। ডি ককও নিশ্চয়ই চাইবেন শেষে এসে অন্য এক অভিজ্ঞতা পেতে। বিশ্বকাপের ফাইনাল, প্রতিপক্ষ ভারত—মঞ্চটা তো তৈরিই আছে।