চেন্নাইয়ে ৯০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নাজমুল যেখানে দ্বিতীয়
লাল মাটির পিচ—কথাটা ভাবলেই চোখের সামনে যেন চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের ২২ গজ ভেসে ওঠে। এ ধরনের পিচ বরাবরই স্পিন–সহায়ক; বল বেশ ধীরে ও নিচু হয়ে আসে। তবে পিচে আর্দ্রতা থাকলে বলও ওঠে সকালের সেশনে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পিচ ভাঙতে শুরু করে। তাই চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।
এ কারণেই চেন্নাইয়ে টেস্ট মানেই ‘টস জিতে আগে ব্যাটিং করো’ ব্যাপারটা প্রথায় পরিণত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিল, সেখানে আজ শুরু বাংলাদেশ-ভারত প্রথম টেস্টেও যে দল টস জিতবে, আগে ব্যাট করবে। কিন্তু নাজমুল হোসেন দীর্ঘ ৪২ বছরের রীতি ভেঙে যেন সবাইকে চমকেই দিলেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক টস জিতে নিলেন ফিল্ডিং!
সর্বশেষ কোনো অধিনায়ক চেন্নাইয়ে টেস্টে টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর ‘সাহস’ দেখিয়েছিলেন সেই ১৯৮২ সালে, ইংল্যান্ডের কিথ ফ্লেচার। সুনীল গাভাস্কার-কপিল দেব-রবি শাস্ত্রীদের ভারতের বিপক্ষে সেই টেস্ট ড্র করেছিল ইংলিশরা।
এই ভেন্যুতে ৯০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে টস জিতে বোলিং নেওয়ার প্রথম ঘটনাও ছিল সেটি। নাজমুলের আজকের সিদ্ধান্তটি দ্বিতীয়। অবশ্য ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও জানিয়েছেন, আজ তিনিও টসে জিতলে ফিল্ডিং নিতেন।
কারণটা এতক্ষণে সবার বুঝে ফেলার কথা। চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের এ ম্যাচের পিচ পুরোপুরি স্পিনারদের সহায়তা করার জন্য বানানো হয়নি। সে কারণে দুই দলই একাদশে ৩ জন করে পেসার রেখেছে। বাংলাদেশের পেসাররা পিচ থেকে কিছুটা বাউন্সও পাচ্ছেন।
চেন্নাইয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট ম্যাচ হয়েছিল ১৯৩৪ সালে। এই ভেন্যুতে আজ শুরু হওয়া বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট ম্যাচটি ৩৫তম। প্রতি ম্যাচেই খেলেছে স্বাগতিক ভারত। আগের ৩৪ ম্যাচের মধ্যে ২২টিতে জয়-পরাজয় নির্ধারণ হয়েছে, ড্র হয়েছে ১১টি, অন্যটি টাই। অর্থাৎ ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে যে দুটি ম্যাচ টাই হয়েছে, তার একটি হয়েছে এ মাঠেই। ১৯৮৬ সালে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সেই টেস্টও হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে।
ভারত এ মাঠে ৩৪ ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতে জিতেছে, জয়ের হার ৪২ শতাংশ। হেরেছে ৭টিতে, ড্র করেছে ১১ ম্যাচ আর একটি টাইয়ের কথা তো আগে বলাই হলো। এই ভেন্যুতে কোনো দল টস জয়ের পাশাপাশি ম্যাচও জিতেছে ১২ বার। সর্বশেষ টস জিতেও ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ড, ২০১৬ সালে।