বিপিএল: দুবাই–ফেরত মালিক আর মিরাজের ব্যাটে খুলনাকে হারাল বরিশাল
শেষ ৬ বলে ফরচুন বরিশালের দরকার ছিল ১৮ রান। দাসুন শানাকার প্রথম বলেই মেহেদি হাসান মিরাজের ৬। পরের বলে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইকে গেলেন শোয়েব মালিক। দুবাই ঘুরে আসা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান তৃতীয় বলে মারলেন চার, চতুর্থ বলে ছয়।
শেষের এই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২ বল হাতে রেখেই খুলনা টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। এটি এবারের বিপিএলে ছয় ম্যাচে বরিশালের তৃতীয় জয়। আর প্রথম চার ম্যাচেই জেতা খুলনা হারল এই প্রথম।
আগে ব্যাট করে খুলনা ৮ উইকেটে তোলে ১৫৫ রান। রান তাড়া করতে নামা বরিশাল ১৯.৪ বলে ৫ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৫ রান করে বরিশালকে জয়টি মূলত এনে দিয়েছেন মালিক-মিরাজ। বিপিএলে প্রথম দুই ম্যাচ খেলে দুবাই চলে যাওয়া মালিক ফিরে আসার ম্যাচে খেলেন ২৫ বলে ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস, মিরাজ ১৫ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৩১ রানে। দুজনই মেরেছেন তিনটি করে ছয়।
এর আগে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ইনিংস বড় করতে না পারায় জয়ের পথটা কঠিনই হয়ে উঠেছিল বরিশালের জন্য। আহমেদ শেহজাদ শূন্য রানে স্টাম্পিং হয়ে যাওয়ার পর তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার উইকেটে থিতু হতে পেরেছিলেন। তবে রানের গতি বাড়ানোর সময়টাতেই আউট হয়ে যান দুজনই। তামিম ফেরেন ১৮ বলে ২০ রান করে, একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া সৌম্য ২৩ বলে ২৬ রান করেন। পারেননি দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহও। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহ আউটের সময় বরিশালের রান ছিল ৫ উইকেটে ১০১। যেখান থেকে বাকি পথটা টেনে নেন মালিক-মিরাজ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার ইনিংসে ছিল দুটি ধারা। তাইজুল ইসলাম, মালিক আর মিরাজদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি খুলনার টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ১৬ ওভার যখন শেষ হয়, খুলনার রান ৭ উইকেটে ৮৮।
এক শর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা খুলনাকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন দুই পাকিস্তানি—মোহাম্মদ নেওয়াজ ও ফাহিম আশরাফ। অষ্টম উইকেট জুটিতে ২৪ বলে ৬৭ রান যোগ করেন এ দুজন। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইমরান, মাহমুদউল্লাহ ও খালেদ আহমেদের করা শেষ ৩ ওভার থেকে আসে ১৮ রান করে মোট ৫৪ রান।
২৩ বল খেলা নেওয়াজ ৪ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৮ রান করে। শেষ বলে রানআউট হওয়া ফাহিম ১৩ বলে ৫ চার আর ১ ছয়ে করেন ৩২ রান। ফাহিম পরে বল হাতেও ছিলেন দারুণ ছন্দে। কিন্তু মালিক-মিরাজের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের কারণে খুলনা আর জিততে পারেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (এনামুল ১২, পারভেজ ৩৩, হাবিবুর ২, মাহমুদুল ১৩, আফিফ ০, শানাকা ৬, নেওয়াজ ৩৮*, নাহিদুল ৫, ফাহিম ৩২; ইমরান ৩–০–২৫–১, মিরাজ ৪–০–২২–০, আকিফ ৩–০–২৭–১, মালিক ৪–০–২৪–২, খালেদ ২–০–২৬–০, তাইজুল ৩–০–৭–২, মাহমুদউল্লাহ ১–০–১৮–০)।
ফরচুন বরিশাল: ১৯.৪ ওভারে ১৫৬/৫ (তামিম ২০, শেজজাদ ০, সৌম্য ২৬, মুশফিক ২৭, মালিক ৪১*, মাহমুদউল্লাহ ৪, মিরাজ ৩১* ; নাসুম ৪–০–২৪–১, নাহিদুল ৩–০–৩০–১, ওয়াসিম ৪–০–৩৬–০, ফাহিম ৪–০–১৮–৩, নেওয়াজ ৩–০–২৩–০, শানাকা ১.৪–০–২৪–০)।
ফল: ফরচুন বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : শোয়েব মালিক।