৪ রান না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তামিমও, চাইলেন নিয়মের পরিবর্তন
নিউইয়র্কের মন্থর উইকেটে প্রতিটি রান ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের শেষ দিকে ব্যাটসম্যানরা যখন ডট দিচ্ছিলেন, ধারাভাষ্যকাররা বারবার রানের গতি সচল রাখার গুরুত্বের কথা বলছিলেন। তাঁদের কথা ছিল এ রকম, একটি রানও এখানে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। আর এমন ম্যাচেই কিনা আম্পায়ারের ‘ভুল সিদ্ধান্তে’ বাংলাদেশ হারাল ৪টি মহাগুরুত্বপূর্ণ রান। পরে ম্যাচে বাংলাদেশের হারের ব্যবধানও ছিল সেই ৪ রানেরই।
ঘটনাটা ঘটেছিল বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ১৭তম ওভারে। পেসার ওটনিল বার্টম্যানের বল মাহমুদউল্লাহর পায়ে লেগে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। বার্টম্যানের আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার মাহমুদউল্লাহকে এলবিডব্লু দেন। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিভিউ নেন। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল ছিল স্টাম্পের বাইরে। আম্পায়ার সিদ্ধান্ত পাল্টিয়ে মাহমুদউল্লাহকে নটআউট ঘোষণা করেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর বল ডেড হয়ে যাওয়ায় লেগ বাই হিসেবে ৪ রান পায়নি বাংলাদেশ। অথচ সেই চার রান স্কোরবোর্ডে যোগ হলে বদলে যেতে পারত ম্যাচের ফলও।
এটা নিয়ে ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা। কেউ আম্পায়ারকে দুষছেন, কেউ আবার দায় দেখছেন আইসিসির। ম্যাচের পর ইএসপিএনক্রিকইনফোর এক আলোচনাতেও গুরুত্ব পেয়েছে বিষয়টি। যেখানে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, বাংলাদেশের তামিম ইকবাল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার মরনে মরকেল বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই মনে করেন, আইসিসির উচিত এই নিয়ম বদলানো। তামিম বলেছেন, এই ৪ রান পেলে বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে যেতে পারত।
আলাপের শুরুতে মাঞ্জরেকার বলেছেন, ‘এটা নিয়ে সমর্থকেরা অনেক কথা বলছেন। আমরাও এটা নিয়ে আলাপ করতে পারি। আম্পায়ার কি সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন না? আম্পায়ার চাইলে বলটা বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন এবং তারপর তাঁর আঙুল তুলতে পারেন বা বলতে পারেন যে আউট হয়নি। এরপর সেটা আপনি রেকর্ড করলেন এবং রিভিউর পর যা হওয়ার তা হবে।’
মাঞ্জরেকারের সঙ্গে একমত তামিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, আপনার কাছে যখন সময় আছে, আপনি কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন, বল কোথায় গেল। সেটা কি বাউন্ডারি হলো, নাকি হলো না! এরপর আপনি আপনার সিদ্ধান্ত জানান। যদি ব্যাটসম্যান আউট না হয়, আর বল যদি তার থাইপ্যাডে বা অন্য কোথাও লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে রান দেওয়া উচিত। যদি সে আউট না হয় আর কি। এটা আমি কঠিনভাবে বিশ্বাস করি।’
এই ৪ রান বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারত উল্লেখ করে তামিম আরও বলেছেন, ‘এই ৪ রান বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারত। এটা হতে পারত। আমি হয়তো সমর্থকদের মতো কথা বলছি। কিন্তু আপনি যদি ভাবেন, এই ৪ রান বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ধারাভাষ্যকক্ষেও সবাইকে এটা নিয়ে কথা বলতে শুনেছি। এটা এমন কিছু, যেখানে আইসিসি গুরুত্বের সঙ্গে মনোযোগ দিতে পারে। কারণ, এটা এমন কিছু নয় যেটা বদলাতে তাদের বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে।’
তামিমের সঙ্গে একমত দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মরকেলও, ‘আমি একমত। কোনো সন্দেহ নেই। এটা বদলানো জরুরি। আশা করি, বিশ্বকাপের পর তেমন কিছু হবে।’