কোহলির পঞ্চাশে আলোচনায় সেই ভক্ত
তারিখটা ২২ জুলাই ২০১২। আগের দিন হাম্বানতোতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২তম শতক তুলে নেন বিরাট কোহলি। সিজু বলনান্দ পরদিন (২২ জুলাই ২০১২) ফেসবুকে কোহলির ছবিসহ একটি পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে লেখেন, ‘শচীনের ওয়ানডেতে শতকের রেকর্ড ভাঙবে বিরাট।’ পোস্টটি দেখে তখন অনেকেই হেসেছেন। তির্যক খোঁচাও মেরেছেন।
কিন্তু ১১ বছর পর সেই ভক্তের আশা পূরণ করেছেন কোহলি। গতকাল বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টেন্ডুলকারের ৪৯ শতকের রেকর্ড ভেঙে ৫০তম শতক তুলে নেন ৩৫ বছর বয়সী ভারতীয় তারকা। এমন আনন্দের ক্ষণে কোহলির পাঁড় ভক্ত সিজু বলনান্দের কোনো পোস্ট নেই! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোহলির রেকর্ড উদ্যাপনের পাশাপাশি তাঁর এই ভক্তকেও স্মরণ করছেন অনেকে। সিজু এখন কোথায়, সে প্রশ্নও উঠেছে। আর এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ করতে গিয়েই জানা গেল মর্মান্তিক ব্যাপারটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই অনেকে জানিয়েছেন সে খবর। সিজু বলনান্দকে নিয়ে লিখেছে ভারতের সংবাদমাধ্যমও।
ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮–এর তামিল সংস্করণ জানিয়েছে, সেই পোস্টের পর অনেকেই রসিকতা করায় সিজু বলনান্দ একটি কাজ করেছিলেন। কোহলির প্রতিটি ওয়ানডে শতকের পর সেই পোস্টে তাঁর হিসাব রেখে মন্তব্য করতেন সিজু। এভাবে হিসাব রাখতে রাখতে সেই পোস্টে সিজু সর্বশেষ মন্তব্যটি করেছিলেন ৫ বছর আগে, কোহলির ৩৫তম ওয়ানডে শতকের পর। কিন্তু এরপর কোহলি আরও ১৫ শতক পেলেও সিজুর পোস্ট দেখা যায়নি। কারণ, কেরালার এই ক্রিকেটপ্রেমী ২০১৮ সালেই মারা যান।
এরপর সিজুর কাজটি করে গেছেন তাঁর বন্ধুবান্ধব ও স্বজনেরা। সিজু মারা যাওয়ার পর ওয়ানডেতে কোহলির প্রতিটি শতকের পর তাঁর সেই পোস্টে মন্তব্য করে হিসাব রাখছেন তাঁরা। গতকাল কোহলির ৫০তম শতকের পর প্রচুর মন্তব্য এসেছে তাঁর সেই পোস্টে। কেউ কেউ ‘৫০’ লিখে তার পাশে মন্তব্য করেন, ‘তোমাকে মিস করছি, ভাই।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘আজ সেই দিন।’
সিজুর শতকের হিসাব রাখার এই পোস্টে কোহলির ৫০তম শতক–পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৮১টি মন্তব্য করা হয়েছে, পোস্টটি শেয়ার হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। এক ক্রিকেটভক্ত পোস্টটি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, ‘কান্না পাচ্ছে। সিজু বলনান্দ বিরাট কোহলির সত্যিকার ভক্ত। (পোস্টের) মন্তব্যে যান, সে প্রতিটি শতকের হিসাব রেখেছে। মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তার বন্ধুরা (শতকের) হিসাব রাখতে শুরু করে। এখন তার (সিজু) কথাই সত্যি হলো!’