বাজবল ‘মাথামোটা’ ক্রিকেট নয়—ইংল্যান্ডকে আরেকবার প্রমাণ করতে বললেন হুসেইন
‘বাজবল’ মানে যে ‘স্মার্ট’ ক্রিকেট, মোটেও ‘মাথামোটা’ কিছু নয়—ইংল্যান্ডের সেটি আবার প্রমাণের সময় এসে গেছে বলে মনে করেন নাসের হুসেইন। আজ রাঁচিতে ভারতের বিপক্ষে শুরু হওয়া চতুর্থ টেস্টে নিজেদের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় অটল থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন সাবেক অধিনায়ক ও এখনকার ধারাভাষ্যকার-বিশ্লেষক।
রাঁচিতে ইংল্যান্ড নেমেছে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে। সিরিজে টিকে থাকতে গেলে এ ম্যাচটি জিততেই হবে তাদের। বিশাখাপট্টনমের পর রাজকোটেও হারে বেন স্টোকসের দল বেশ কোণঠাসা অবস্থায়। বিশেষ করে রাজকোটে রেকর্ড ব্যবধানে হারের পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে বেশ সমালোচনা চলছে।
তবে হুসেইন বলছেন, ব্যাপারটি মানসিকতা বদলানোর নয়। ডেইলি মেইলে লেখা এক কলামে তিনি বলেছেন, ‘ভারতে রান করতে গেলে আপনাকে ইতিবাচকই হতে হবে। কখন আক্রমণের পথ বেছে নেবেন, সেটি খুঁজে বের করাই গুরুত্বপূর্ণ। রাজকোটে তৃতীয় দিন সকালে আউট হয়ে গেছে বলে জো রুটের রিভার্স স্কুপ বাজে শট হয়ে যায়নি। তবে তার সে শট খেলার সময়টা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। এ জায়গাতেই ইংল্যান্ডকে আরও স্মার্ট হতে হবে।’
সেটি ইংল্যান্ড আগেও করে দেখিয়েছে, তা মনে করে দিয়েছেন হুসেইন, ‘অ্যাশেজের কথা ভাবুন, লর্ডসে ধসের পর তারা শর্ট বলের বিপক্ষে উন্নতি করেছিল। তারা যেমনটি বলে থাকে, বাজবল স্মার্ট ক্রিকেট। মাথামোটা ক্রিকেট নয়। এখন আবার সেটি প্রমাণ করতে হবে তাদের।’
কেন স্টোকসদের এমন সমালোচনা হচ্ছে, হুসেইন বুঝতে পারছেন সেটি, ‘অমন ব্যবধানে একটি ম্যাচ হারের পর বাজবল-যুগে যা কিছু ভালো হয়েছে, সব ভুলে যাওয়া সহজ। কিন্তু এ সময়ে ইংল্যান্ড ২১টির মধ্যে ১৪টি টেস্ট জিতেছে, অন্য যেকোনো দলের চেয়ে জয় ও হারের অনুপাত যাদের বেশি। ওভারপ্রতি ৪.৭১ রান করেছে, যেটিও অন্য যে কারও চেয়ে বেশি। তারা সফল হয়েছে, বিনোদনমূলক ক্রিকেট খেলেছে। একটি বাজে ম্যাচ দিয়ে এ কৌশল ব্যর্থ হয়ে যায় না।’
স্টোকসদের তাই নিজেদের খেলাটিই চালিয়ে যেতে বলছেন ইংল্যান্ডকে ৪৫টি টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া হুসেইন, ‘শুক্রবারে টেস্ট শুরুর সময় ইংল্যান্ডের চ্যালেঞ্জ হবে স্টোকস ও ম্যাককালামের অধীনে যে পদ্ধতি ও কৌশল অনুসরণ করে এত সাফল্য পেয়েছে, সেটিতে অটল থাকা। বিশাখাপট্টনম ও রাজকোটে যা হয়েছে, এ কারণে নিজেদের ভেতর সংশয় ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আমার মনেও হয় না তারা সেটি করতে দেবে।’
তবে এরপর তিনি বলেছেন, ‘এর মানে এ-ই না যে তারা আরও স্মার্ট হতে পারবে না। “আমরা এভাবেই খেলি”, বসে থেকে এই মন্ত্র জপলে শুধু হবে না। টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, বিশেষ করে ভারতে। যেখানে এক রাতেই পিচের ধরন বদলে যেতে পারে।’
এ কারণে বড় স্কোরের সুযোগ মোটেও হাতছাড়া করা যাবে না, এমন পরামর্শও দিয়েছেন হুসেইন, ‘ইংল্যান্ডে প্রথম ইনিংসে ৭০ রানে আউট হলেও হয়তো ভালো একটা পিচে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪০ রান করার সুযোগ পাবেন। তবে সে বিলাসিতা ভারতের উইকেট সব সময় দেয় না। প্রথম ইনিংসে ৫০ রানের ইনিংসগুলো ইংল্যান্ডকে ১০০-তে রূপ দিতে হবে, খাটুনির কাজটি তখনই করতে হবে।’