ওকস স্পিনার হয়ে ওঠার দিনে ধনাঞ্জয়া–কামিন্দুর প্রতিরোধ
প্রথম ডেলিভারিটি অফ স্পিন করে ভেতরে ঢুকল। ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস মিড উইকেটে পাঠিয়ে ১ রান নিলেন। পরের বলটি হলো লেগ স্পিন। অফ স্টাম্পের এত বাইরে গেল যে, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি হলে নির্ঘাত ওয়াইড ডাকতেন আম্পায়ার। এই দেখে স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের মুখে হাসি থামে না। মাঠে কী সব ঘটে চলেছে দেখতে বাড়তি মনোযোগী হয়ে উঠলেন দর্শকেরাও।
ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা কেনিংটন ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের ঘটনা এটি। বল অফ স্পিন হবে, লেগ স্পিন হবে, ওয়াইডও হবে। তবু এ নিয়ে বাড়তি ঔৎসুক্যের কারণ বোলারের নাম ক্রিস ওকস। ইংল্যান্ডের ৩৫ বছর বয়সী এই বোলারকে ওভারের মাঝপথে পেসার থেকে স্পিনার হয়ে উঠতে হয়েছে। যা ম্যাচে জন্ম দিয়েছে হাস্যরসের।
দিনের শেষ বেলায় অবশ্য আলোচিত চরিত্র হয়ে উঠেছেন শ্রীলঙ্কার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা–কামিন্দু মেন্ডিসরা। এ দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতেই ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের ৩২৫ রানের বিপরীতে ৫ উইকেটে ২১১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা।
ওকসের স্পিনার হয়ে ওঠার ঘটনাটি শ্রীলঙ্কার ইনিংসের সপ্তম ওভারের। দ্বিতীয় বলে লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে রানআউট হওয়ার পর দুই আম্পায়ার জোয়েল উইলসন ও ক্রিস গ্যাফানি জানান এই আলোতে পেস বোলিং করা যাবে না। শুধু স্পিন বোলিং চলবে।
এ ধরনের ঘটনায় অধিনায়কেরা স্পিনারদের হাতে বল তুলে দিয়ে থাকেন। কিন্তু ওকসের ওভার তখনো শেষ হয়নি। চার বল বাকি। অগত্যা ওকস স্পিন করতে শুরু করেন। চার বলের মধ্যেই অফ স্পিন, লেগ স্পিন সবই করতে চেয়েছেন তিনি। দুটি বল পড়েছে প্রায় মাঝ পিচে। এর একটিতে চার তুলে নেন পাতুম নিশাঙ্কা। সব মিলিয়ে স্পিনার ওকসের চার বল থেকে শ্রীলঙ্কা নেয় ৬ রান। ওকসের ওভার শেষে আকাশ একটু পরিষ্কার হওয়ার পর অবশ্য গাস অ্যাটকিনসনকে পেস বোলিং করার অনুমতি দেন আম্পায়াররা।
এর আগে দিন শুরু হয় ইংল্যান্ডের ৩ উইকেটে ২২১ রান নিয়ে। আগেই দিনই সেঞ্চুরি পেয়ে যাওয়া পোপ আরও ৫১ রান যোগ করে ফেরেন ১৫৪ রানে। ইংল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের ১৫৬ বলের ইনিংসটি সাজানো ১৯ চার ও ২ ছক্কায়। আজ ব্যাট করা অন্যদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান আসে হ্যারি ব্রুকের ব্যাট থেকে। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৫৬ রানে ৩ উইকেট নেন মিলন রত্নায়েকে।
দিনের বাকি অংশে ৪৫ ওভার ব্যাট করেছে শ্রীলঙ্কা। ধনাঞ্জয়া–কামিন্দু জুটি গড়ার আগে ৯৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় সফরকারীরা। এ দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে যোগ করেন ১১৮ রান। অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া অপরাজিত ৬৪ রানে, কামিন্দু ৫৪–তে।
তিন টেস্টের সিরিজে ২–০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ১ম ইনিংসে ৩২৫ (পোপ ১৫৪, ডাকেট ৮৬, ব্রুক ১৯, স্মিথ ১৬; রত্নায়েকে ৩/৫৬, ধনাঞ্জয়া ২/১৮, বিশ্ব ফার্নান্দো ২/৪৬)।
শ্রীলঙ্কা: ১ম ইনিংসে ৪৫ ওভারে ২১১/৫ (ধনাঞ্জয়া ৬৪*, নিশাঙ্কা ৬৪, কামিন্দু ৫৪*; স্টোন ২/২৮, হাল ১/২৬)।