লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ হেরে গেল আবার। তাদের হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করেছে আবাহনী। মোহামেডানকে হারিয়ে দুই নম্বর জায়গাটাও ধরে রেখেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সও। মিরপুরের ম্যাচে ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক।
রূপগঞ্জকে হারিয়ে শীর্ষেই আবাহনী
শীর্ষে আগেই ছিল আবাহনী। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৪ উইকেটে হারিয়ে তা আরেকটু পোক্ত করেছে ক্লাবটি। এ ম্যাচে তাদের জন্য স্বস্তির খবর, সেঞ্চুরি পেয়েছেন টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে রান না পাওয়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
বিকেএসপিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আবাহনীর সামনে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯২ রানের লক্ষ্য দেয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। দলটির হয়ে হাফ সেঞ্চুরি পান সাইফ হাসান ও মাহমুদুল হাসান। ১০৩ বল খেলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন সাইফ, ৫৪ বলে ৫৮ রান আসে মাহমুদুল হাসানের ব্যাট থেকে। আবাহনীর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মোসাদ্দেক হোসেন।
রান তাড়ায় নেমে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর জিসান আলমের সঙ্গে ১০৭ রানের জুটি গড়েন নাজমুল। ৪৬ বলে ৪৩ রান করে আউট হন জিসান। এরপর একদিকে উইকেট হারালেও আরেক দিকে সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল।
লিস্ট–এ ক্রিকেটে নিজের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১০৮ বলে ১০১ রান করে মেহেদি হাসানের বলে আউট হন নাজমুল। ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললেও মুমিনুল হক ৩২ বলে ৩৫ ও মাহফুজুর রহমান ২৫ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৪৮.৪ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আবাহনী।
জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সও
জয় পেয়েছে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে থাকা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সও। এ ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন গাজী গ্রুপের অধিনায়ক এনামুল হক। তাঁর ১৪৩ বলে ১৪৯ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রানের সংগ্রহ পায় গাজী গ্রুপ। ওই রান তাড়ায় নেমে ৪৮.১ ওভার খেলে ২৭১ রানে অলআউট হয় মোহামেডান।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন এনামুল হক ও সাদিকুর রহমান। তাঁদের ওই জুটি ভাঙান তাসকিন আহমেদ। ৭৫ বলে ৬০ রান করে সাদিকুর আউট হলেও এনামুল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। ১২ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংসে ১৪৩ বলে ১৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
গাজী গ্রুপের রানটা এত দূর নিয়ে যায় শেষ দিকে তোফায়েল আহমেদের ঝড়। ২৯ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৩ রান করেন তিনি। এদিন বল হাতে রান বিলানোর রেকর্ডই গড়ে ফেলেন মোহামেডানের তাসকিন। শাহাদাত হোসেনের ১০৪ রান ছাড়িয়ে আজ ১০ ওভারে ১০৭ রান দেওয়াই এখন বাংলাদেশের কারো লিস্ট–এ তে সবচেয়ে খরুচে বোলিং। ৩ উইকেটও অবশ্য পেয়েছেন তিনি।
বড় রান তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালোই হয় মোহামেডানের। ১০.৩ ওভারে গিয়ে যখন উদ্বোধনী জুটি ভাঙে, তখন স্কোরকার্ডে ৭২ রান। ৩৪ বলে ৪৮ রান করে আবু হাসিমের বলে আউট হয়ে যান তিনি।
তবে দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ৯০ বলে সর্বোচ্চ ৭৪ রান আসে ওপেনার রনি তালুকদারের ব্যাটে। এ ছাড়া ৪৬ বলে ৪৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম। চার উইকেট নেন গাজী গ্রুপের আব্দুল গাফফার। দুই উইকেট নেন আবু হাসিম।
ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক
রেকর্ড ৪২২ রান করার পরের দুই ম্যাচেই হেরে যায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। এরপর টানা দুই ম্যাচে হেরেছিল তারা। তবে ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়ে আবারও জয়ের পথে ফিরেছে প্রাইম ব্যাংক।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পুরো ৫০ ওভার খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৮ রান করে প্রাইম ব্যাংক। ওই রান তাড়ায় নেমে ৪৯.৫ ওভারে ২৫৩ রানে অলআউট হয় ধানমন্ডি ক্লাব।
প্রাইম ব্যাংকের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি পান চারজন ব্যাটসম্যান। ৭০ বলে ৫০ রান করেন ওপেনার সাব্বির হোসেন, ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৬ বলে ৬৪ রান করেন জাকির হাসানও। তবে প্রাইম ব্যাংকের রান তিন শ ছাড়িয়ে যায় মূলত ইরফান শুক্কুর ও শামীম হোসেনের অপরাজিত ৯৬ রানের জুটিতে। দুজনেই শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। ৫২ বলে ৭ চার ইরফান ৫৬ ও শামীম ৩৭ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৬২ রান। ধানমন্ডি ক্লাবের মঈন খান নেন ৩ উইকেট।
রান তাড়ায় নেমে ধানমন্ডির হয়ে ১০৪ বল খেলে সর্বোচ্চ ৭৯ রান করেছেন ফজলে মাহমুদ। ৫৬ বলে ৪৬ রান আসে ইয়াসির আলির ব্যাট থেকে। এ ছাড়া ৩০ বলে ৩৭ রান করেন সানজামুল ইসলামও। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে তিন উইকেট করে তুলে নেন হাসান মাহমুদ ও আরাফাত সানি।