কামিন্সের কাছে ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটি ‘ওয়ানডেতে সর্বকালের সেরা’
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গত রাতে অস্ট্রেলিয়া–আফগানিস্তান ম্যাচ শেষেই প্রশ্নটা উঠেছে—গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কি ওয়ানডেতে সর্বকালের সেরা ইনিংসটি খেললেন? ইনিংসটি কাটাছেঁড়া করে অনেক রকম উত্তরই দেওয়া হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এত ব্যাখ্যার ধার ধারেননি। ১২৮ বলে ম্যাক্সওয়েলের অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংসটিই কামিন্সের চোখে ‘ওয়ানডের সর্বকালের সেরা’।
আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। অথচ এই ম্যাচে কামিন্সের দল হার দেখছিল। ২৯২ রান তাড়া করতে নেমে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাক্সওয়েল–কামিন্স অষ্টম উইকেটে ১৭০ বলে অবিচ্ছিন্ন ২০২ রানের জুটিতে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। এই জুটিতে ম্যাক্সওয়েলের একার অবদানই ১০২ বলে ১৭৯!
কামিন্স ৬৮ বলে ১২ রান করে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন। আর অন্য প্রান্তে পায়ে ক্র্যাম্প (মাংশপেশিতে টান) নিয়েও ম্যাক্সওয়েল আফগান বোলারদের একাই শাসন করে এনে দেন অবিস্মরণীয় এক জয়। পায়ের ব্যথায় মাঠে বেশ কয়েকবার শুয়ে পড়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। পরবর্তী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতে প্রস্তুত ছিলেন অ্যাডাম জাম্পা। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল তাঁকে নামতে না দিয়ে ম্যাচ শেষ করে এসেছেন।
জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটি নিয়ে কামিন্স বলেছেন, ‘অদ্ভুত...জানি না, এটার বর্ণনা কীভাবে করব। ম্যাক্সি সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে গিয়েছিল। এটা অবশ্যই সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ইনিংস।’
ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারে বিপর্যয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনার সূচক একপর্যায়ে ০.২১ শতাংশে নেমে এসেছিল। ম্যাক্সওয়েলের ইনিংস এখান থেকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। যে জুটিতে এই স্মরণীয় জয়, তার অন্য প্রান্তে ছিলেন কামিন্স। স্টেডিয়ামের সেরা ‘আসন’ থেকে তিনি ঐতিহাসিক ইনিংসটি দেখেছেন। আর এই জুটিতে তাঁর অবদান ৬৮ বলে ১২। ক্র্যাম্পের কারণে বেশ কিছু সিঙ্গেল নেননি ম্যাক্সওয়েল। তখন দেখে মনে হয়েছে, সতীর্থের ওপর অধিনায়কের কত ভরসা! ম্যাক্সওয়েলের দুর্দমনীয় ব্যাটিং দেখে কামিন্স একপর্যায়ে অন্য প্রান্ত থেকে করতালিও দিয়েছেন। জুটিটি কীভাবে এগিয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তরে কামিন্স আগে ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসটির প্রশংসা করলেন, ‘এটা এমন একটা দিন, যেদিন সবকিছুই ঠিকমতো হয়। আর আমিও স্টেডিয়ামে ছিলাম। নিজেকে এ জন্য সৌভাগ্যবান মনে করি।’
কামিন্স এরপর জুটি নিয়ে বলতে গিয়ে কৌতুক করলেন, ‘আমি তো স্ট্রাইকই পাইনি! ম্যাক্সিকে তার কাজ করতে দেওয়াই তো আমার দায়িত্ব। মানে তার মতো কেউ থাকতে আমি কীভাবে ওটা বলতে (দায়িত্ব নিয়ে নেওয়া) পারি! সে অসাধারণ। রান তাড়া করার সময় তার একটা পরিকল্পনা থাকেই। এমনকি ২০০ রানে পিছিয়ে থাকতেও সে ম্যাচ জয়ের পথ বের করার চেষ্টা করেছে।’
ম্যাক্সওয়েলের ক্র্যাম্প নিয়েও কথা বলেছেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের একপর্যায়ে মনে হয়েছিল, ম্যাক্সওয়েল মাঠ ছেড়ে যেতে পারেন, ‘ভেবেছিলাম, সে বের হয়ে যাবে। এরপর আমাদের দুজন সাউথ ওয়েলসের সতীর্থ ছিল। তারাও হাল ছাড়ত না। জাম্পা সম্ভবত তিনবার (মাঠে) নামতে গিয়ে ফেরত গিয়েছে। ম্যাক্সওয়েল থাকতে চেয়েছিল।’