‘বাছা, সবই ঈশ্বরের খেয়াল’—দয়ালকে বার্তা রিংকুর

বেঙ্গালুরুকে জেতানোর পর ছুটছেন দয়াল, পেছনে সতীর্থরাএএফপি

মহেন্দ্র সিং ধোনি প্রথম বলেই ছক্কা মারার পর যশ দয়ালের নাকি ওই রাতটার কথা মনে পড়ছিল। গত বছরের ৯ এপ্রিল গুজরাট টাইটানসের হয়ে শেষ ওভার করতে এসেছিলেন বাঁহাতি পেসার দয়াল, আহমেদাবাদে লিগ পর্বের ম্যাচটিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৯ রান। সে রান ডিফেন্ড করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন দয়াল, ম্যাচের শেষ ৫ বলে ছক্কা মেরে কলকাতাকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছিলেন রিংকু সিং।

এরপর দয়ালকে নিজেই মেসেজ পাঠিয়েছিলেন রিংকু, ‘ক্রিকেটে এমন হয়েই থাকে।’

মাঝে দল পরিবর্তন করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে আসেন দয়াল, গতকাল চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে আবার করতে আসেন শেষ ওভার। জয়-পরাজয় তখন সমীকরণে নেই। প্লে-অফে যেতে চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ১৭ রান, এর কম হলে শেষ চারে যাবে বেঙ্গালুরু। এমন সমীকরণ সামনে রেখে প্রথম বলেই ধোনির কাছে ছক্কা খাওয়ায়র পর দয়ালের তো ওই রাতটার কথা মনে পড়বেই! যাঁরা দুটি ম্যাচই দেখেছেন, হয়তো তাঁদেরও ফিরে আসছিল ওই ৫ ছক্কার স্মৃতি।

আরও পড়ুন

ম্যাচ শেষে ২৬ বছর বয়সী দয়াল বলেছেন, ‘শেষবার (কলকাতার বিপক্ষে ২০২৩ সালের ম্যাচে) আমার সঙ্গে যা ঘটেছিল, স্নায়ুচাপের ব্যাপার ছিল। প্রথম বলে যখন মার খেলাম, অবচেতন মনে ওই জায়গাতেই পৌঁছে গিয়েছিলাম। তবে অতীতেও আমি ভালো করেছি, এরপরও ভালো করেছি, ফলে একটা ভালো বল করার ভাবনাই ঘুরছিল শুধু। স্কোরবোর্ড বা ফলের দিকে তাকাতে চাইনি। শুধু ভালো বল করতে চেয়েছি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’

সে রাতে কিছুই পক্ষে ছিল না দয়ালের
বিসিসিআই

সে আত্মবিশ্বাসের ছাপ দেখা গেল পরের বলেই। হাতের পেছন থেকে করা স্লোয়ারে নিলেন ধোনির উইকেট। এরপরও ক্রিজে ছিলেন শার্দুল ঠাকুর ও রবীন্দ্র জাদেজা, ৪ বলে ১১ রানের সমীকরণ তাদের পক্ষে মেলানো তেমন কঠিন ছিল না। গত মৌসুমের ফাইনালেই শেষ ২ বলে ১০ রান নিয়ে চেন্নাইকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন জাদেজা। তবে নিজের স্কিলের ওপর ভরসা রেখে দয়াল স্লোয়ার করে গেছেন, শেষ ৪ বলে দিয়েছেন মাত্র ১ রান।

আরও পড়ুন

অথচ শেষ ওভারটি নাকি করারই কথা ছিল না তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার শেষের আগের ওভারটি করার কথা ছিল। হুট করেই ডিকে (দীনেশ কার্তিক) ভাইয়া আর ফাফ একে অন্যের সঙ্গে কথা বলল, এরপর সিদ্ধান্ত এল যে লকি (ফার্গুসন) ১৯তম ওভারটি করবে আর আমি শেষটি। আমি অবশ্য যেকোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত ছিলাম।’

কলকাতাকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেওয়ার পর রিংকু সিংয়ের উচ্ছ্বাস, গত মৌসুমে গুজরাটের বিপক্ষে
বিসিসিআই

প্রথম আট ম্যাচে মাত্র একটি জেতা বেঙ্গালুরু এ মৌসুমে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দারুণভাবে, গতকালের আগে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে একসময় অসম্ভব মনে হওয়া প্লে-অফকে এনেছিল নাগালে। সব গিয়ে ঠেকেছিল দয়ালের করা ওই শেষ ওভারের ওপর। ধোনির শেষ ওভার দয়ালকে ফিরিয়ে নিয়েছিল আহমেদাবাদের দুঃসহ ওই রাতে।

কিন্তু গতকালের রাতটি ছিল আলাদা। গতকাল যে দয়াল উল্লাসে মাতাবেন ফাফ ডু প্লেসি-বিরাট কোহলিদের, যে উল্লাসে ম্লান হয়ে যাবে ধোনির রূপকথার মতো সম্ভাব্য এক শেষের সম্ভাবনা।

রিংকু যেমন ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দয়ালকে মেনশন করে তাঁর একটা ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘বাছা, সবই ঈশ্বরের খেয়াল।’