পেনশনের টাকা সাবেক সতীর্থের ক্যানসারের চিকিৎসায় দিতে প্রস্তুত কপিল দেব
টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে একসঙ্গে খেলেছেন ৩৪ ম্যাচ। সাবেক সতীর্থের গুরুতর অসুস্থতার খবরে যে কারও মন কেঁদে ওঠার কথা।
ভারতীয় দলের সাবেক সতীর্থ অংশুমান গায়কোয়াড়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবরে কিংবদন্তি অধিনায়ক কপিল দেবেরও মন কেঁদে উঠেছে। তাই তো পেনশনের (অবসর ভাতা) টাকা গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও (বিসিসিআই) গায়কোয়াড়ের চিকিৎসায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও প্রধান কোচ অংশুমান গায়কোয়াড় এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত। বর্তমানে লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। সম্প্রতি গায়কোয়াড়কে দেখতে লন্ডনে গিয়েছিলেন তাঁর আরেক সাবেক সতীর্থ সন্দীপ পাতিল। ফিরে আসার পর গায়কোয়াড়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভারতীয় দৈনিক মিড–ডেতে কলাম লেখেন তিনি।
কলামে পাতিল জানান, লন্ডনে চিকিৎসা ব্যয় বহন করা গায়কোয়াড়ের পরিবারের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েছে। সেই কলামে গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার জন্য বিসিসিআইয়ের কাছে আর্থিক সহযোগিতারও আকুতি জানান পাতিল।
ভারতের ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক কপিল দেব পাতিলের সেই কলাম পড়েই গায়কোয়াড়ের ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছেন। ক্রীড়া সাময়িকী স্পোর্টস্টারকে তিনি বলেছেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশাজনক। অংশুর অসুস্থতার খবরে ব্যথিত। কারণ, আমি তার সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। তাকে এই অবস্থায় দেখার ব্যাপারটি সহ্য করতে পারছি না। আমরা তার চিকিৎসায় সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত। পরিবার চাইলে পেনশনের টাকা দিয়ে দিতে পারি।’
১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত গায়কোয়াড় ভারতের হয়ে ৪০ টেস্ট ও ১৫ ওয়ানডে খেলেছেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে দুই দফা ভারতীয় দলের প্রধান কোচও ছিলেন। তাঁর অধীনে ভারত ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রানার্সআপ হয়। একই বছরে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সময় তিনিই ছিলেন ভারতের প্রধান কোচ।
কপিলের বিশ্বাস, অংশুমানের জীবন বাঁচাতে সবাই এগিয়ে আসবে, ‘আমরা কাউকে বাধ্য করছি না। অংশুর জন্য যেকোনো সাহায্য আপনার হৃদয় থেকে আসতে হবে। সে কয়েকজন ভয়ংকর ফাস্ট বোলারকে সামলাতে গিয়ে মুখে ও বুকে আঘাত পেয়েছিল। এখন আমাদের সময় এসেছে তার পাশে দাঁড়ানোর। আমি নিশ্চিত, আমাদের ক্রিকেট ভক্তরা তাকে হতাশ করবে না। তার সুস্থতার জন্য সবার প্রার্থনা করা উচিত।’
সাবেক ক্রিকেটারদের অর্থকষ্টে ভোগার পেছনে বিসিসিআইয়ের ব্যবস্থাপনা ঘাটতির বিষয়টি সামনে এনেছেন কপিল, ‘দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের (অর্থ সংগ্রহের) কোনো ব্যবস্থা নেই। এখনকার প্রজন্মের ক্রিকেটাররা বিপুল অর্থ আয় করে। সাপোর্ট স্টাফের সদস্যরাও ভালোই বেতন পেয়ে থাকে। আমাদের সময়ে বোর্ডের এত টাকা ছিল না। এখন যেহেতু বোর্ডের অনেক টাকা, তাই সাবেক সিনিয়র ক্রিকেটারদের দেখভাল করা উচিত।’
সাবেক ক্রিকেটারদের জন্য বিসিসিআইয়ের কল্যাণ তহবিল না থাকার আক্ষেপও ঝরেছে কপিলের কণ্ঠে, ‘মানুষ তাদের জন্য কোথায় টাকা পাঠাবে? যদি একটা ট্রাস্ট গঠন করা হয়, তাহলে সেখানে টাকা রাখা যেত। কিন্তু আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই। আমাদের একটি ট্রাস্ট গড়ে তোলা উচিত। আমার মনে হয় বিসিসিআই সেটা করবে।’