জাতীয় দল হোক কিংবা বয়সভিত্তিক দল—জেতা ম্যাচ প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু নয়। পুরোনো রোগটা আজ নতুন করে দেখা দিল বাংলাদেশের যুবাদের দলে।
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হুড়মুড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। ৪৯ রানে শেষ ৭ উইকেট খুইয়ে জিততে থাকা ম্যাচটা আজিজুল হাকিমের দল হারল ৭ রানে। আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দলটি তাই ‘বি’ গ্রুপে রানার্সআপ হলো।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.২ ওভারে ২২৮ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। লক্ষ্য তাড়ায় একপর্যায়ে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ৬৬ বলে দরকার ছিল মাত্র ৫৭ রান। ওপেনার কালাম সিদ্দিকী তখন সেঞ্চুরির অপেক্ষায়।
কিন্তু ৪০তম ওভারের প্রথম বলেই কালামকে (৯৫) ফেরান লঙ্কান অধিনায়ক বিহাস তেওমিকা। একই ওভারে চতুর্থ বলে তিনি রিজান হোসেনকে (০) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। ৩ ওভার পর আরেক সেট ব্যাটসম্যান দেবাশীষ সরকারও (৩১) আউট হলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।
ফরিদ হাসান ও সামিউন বশিরের চেষ্টায় এরপরও বাংলাদেশ ম্যাচে ছিল। কিন্তু ৪৭তম ওভারে সামিউন (১৪) আউট হলে যুবাদের জয়ের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে যায়। রাফি উজ্জামান ও আল ফরহাদ ফরিদকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি।
শেষ ওভারে ১ উইকেট হাতে নিয়ে দরকার ছিল ১০ রান। বোলিংয়ে আসেন মাতুলান কুগাতাস। তাঁর প্রথম ২ বল থেকে আসে ২ রান। তৃতীয় বলে ফরিদ (২৪) শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রানআউট হলে ২২১ রানে থামে বাংলাদেশ। ফরিদ ছাড়াও রানআউট হন বাংলাদেশের আরও তিন ব্যাটসম্যান।
এর আগে বিমত দিনসারার সেঞ্চুরিতে ২২৮ রান করে শ্রীলঙ্কা। আল ফাহাদ ৪ ও রিজান ৩ উইকেট নেন। আজকের হারে নিজেদের গ্রুপে দ্বিতীয় হলো বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা হলো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
‘এ’ গ্রুপের এখনো দুটি ম্যাচ বাকি। শারজায় আগামীকাল ‘অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনালে’ ভারতের মুখোমুখি স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুবাইয়ে অন্য ম্যাচে জাপানের প্রতিপক্ষ আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা পাকিস্তান। এই ম্যাচে সন্দেহাতীতভাবে যোজন-যোজন ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান। বড় ধরনের অঘটন না ঘটলে জাপানকে সহজেই হারাবে পাকিস্তান, তা অনুমান করাই যায়।
জাপানকে হারালে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবে পাকিস্তান। সেমিফাইনালে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ বাংলাদেশকে।
নেপালের রুদ্ধশ্বাস জয়
শারজায় আজ দিনের অন্য ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১ উইকেটে হারিয়েছে নেপাল। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৫.৪ ওভারে ১২৩ রানে গুটিয়ে যায় আফগান যুবারা।
জবাবে আল্লাহ গজনফর ও খাতির স্তানিকজাইয়ের দারুণ বোলিংয়ে ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে নেপালের যুবারা। এরপর নরেন সৌদ, অভিষেক তিওয়ারি ও অধিনায়ক হেমন্ত ধামির দৃঢ়তায় ১ উইকেট ও ৫১ বল বাকি রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় হিমালয়ের দেশের ছেলেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৯.২ ওভারে ২২৮
(দিনসারা ১০৬, তেওমিকা ২২, আবেইসিংহে ২১; ফাহাদ ৪/৫০, রিজান ৩/৪০)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৯.৩ ওভারে ২২১
(কালাম ৯৫, দেবাশীষ ৩১, জাওয়াদ ২৪, ফরিদ ২৪; তেওমিকা ৩/৩৭)।
ফল: শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৭ রানে জয়ী।