ডি লিডির অস্বস্তি কাটিয়ে বড় জয়ে শুরু পাকিস্তানের

নেদারল্যান্ডসকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে পাকিস্তানএএফপি

পাকিস্তান: ৪৯ ওভারে ২৮৬ (রিজওয়ান ৬৮, শাকিল ৬৮, নেওয়াজ ৩৯; ডি লিডি ৪ / ৬২, অ্যাকারম্যান ২ / ৩৯)

নেদারল্যান্ডস: ৪১ ওভারে ২০৫ (ডি লিডি ৬৭, বিক্রমজিত ৫২; রউফ ৩ / ৪৩, হাসান ২ / ৩৩)

ফল: পাকিস্তান ৮১ রানে জয়ী

১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপে যখন প্রথমবারের মতো নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান, টিম ডি লিডি ১৯ বল খেলে রান করতে পারেননি কোনো। পরে বোলিংয়ে ৪ ওভারে থেকেছিলেন উইকেটশূন্য। পাকিস্তান সে ম্যাচ জিতেছিল ৮ উইকেটে। ২০০৩ সালে যখন আবার মুখোমুখি দুই দল, ৯৭ রানে হারা ম্যাচে ডি লিডি নিয়েছিলেন ২ উইকেট, ব্যাটিংয়ে করেছিলেন ৩৫ বলে ১৫ রান।

২০২৩ সালে ১২ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরা নেদারল্যান্ডসকে হায়দরাবাদে ৮১ রানের বড় ব্যবধানেই হারাল পাকিস্তান। তবে ম্যাচের বড় একটা সময় তাদের অস্বস্তিতে রেখেছিলেন আরেক ডি লিডি-টিমের ছেলে বাস। বোলিংয়ে ৪ উইকেটের পর ৬৮ বলে ৬৭ রান-বাস ছিলেন দুর্দান্ত। তবে তাঁর এমন পারফরম্যান্স যথেষ্ট হয়নি নেদারল্যান্ডসের জন্য। ডাচ-শঙ্কা কাটিয়ে পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ে শুরু করেছে বিশ্বকাপ।

আরও পড়ুন

২৮৭ রানের লক্ষ্য সহজ হবে না পাকিস্তানের বিপক্ষে, সেটি অনুমিতই ছিল। প্রথম পাওয়ার প্লেতে অবশ্য ম্যাক্স ও’ডাউডের উইকেটটি হারায় নেদারল্যান্ডস, হাসান আলীর শর্ট বলের জবাব দিতে পারেননি তিনি। ১২ তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ইফতিখার আহমেদ বোল্ড করেন কলিন অ্যাকারম্যানকে, তাতে চাপ বাড়ে নেদারল্যান্ডসের। ডি লিডি ও বিক্রমজিত সিংয়ের জুটি এরপর অস্বস্তিতে ফেলে পাকিস্তানকে।

ফিফটি করার পথে বাস ডি লিডি
এএফপি

৭৬ বলে ৭০ রানের সে জুটি ভাঙেন শাদাব খান, ৬৭ বলে ৫২ রান করা বিক্রমজিতকে ফিরিয়ে। পাকিস্তানের স্পিনারদের পারফরম্যান্স আলোচনায় ছিল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই, তবে তাঁরাই আজ এনে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট। ডি লিডিকে থামিয়েছেন মোহাম্মদ নেওয়াজ, করেছেন বোল্ড। ডি লিডি অবশ্য আউট হয়েছেন সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে। বিক্রমজিতের পর কেউই সে অর্থে তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেননি। মাঝে উইকেটের দরকার থাকলেও শাহিন শাহ আফ্রিদি বা হারিস রউফদের দ্রুত আনেননি বাবর। পরে এসে অবশ্য তাঁরা ডাচদের দাঁড়াতে দেননি আর। ডি লিডি ছাড়া মিডল অর্ডারে নেদারল্যান্ডসের কেউই সুবিধা করতে পারেননি। ৪১ ওভারেই গুটিয়ে যায় তারা।

বোলিংয়ে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স সমন্বিতই ছিল। ব্যাটিংয়ে মূল অবদান সেখানে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিলের পর শাদাব ও নেওয়াজের। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামার আগে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বলেছিলেন, তাঁদের লক্ষ্য ২৯০ থেকে ৩০০ রানের মতো। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর পর সেটি মনে হচ্ছিল অনেক দূরের পথ। রিজওয়ান ও শাকিলের ১১৪ বলে ১২০ রানের জুটিতে সেটি চলে এসেছিল নাগালে। এরপর ৩০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে আবার চাপে পড়া, শাদাব খান ও মোহাম্মদ নেওয়াজের জুটিতে আবার আশা পাওয়া। ২৫২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও অবশ্য পাকিস্তান যায় ২৮৬ রান পর্যন্ত, সেটি আফ্রিদির ১২ বলে ১৩ ও রউফের ১৪ বলে ১৬ রানের ইনিংসে।

রিজওয়ান ও শাকিল দুজনই ফিফটি পান
এএফপি

আলোচনায় থাকা পাকিস্তানের টপ অর্ডার সফল হয়নি আজও। ফখর জামান, ইমাম-উল-হক ও বাবর আজম চলে যান ৩৮ রানের মধ্যেই। শুরুতে চাপে পড়লেও রিজওয়ান ও শাকিল ছিলেন দারুণ ইতিবাচক। প্রিয় হয়ে ওঠা চার নম্বরে এ বছরের ষষ্ঠ ফিফটিটি পেতে রিজওয়ানের লাগে ৫৮ বল। শাকিল ব্যাটিং করেছেন আরও দ্রুত গতিতে, তাঁর ফিফটি করতে লাগে মাত্র ৩২ বল। দুজনের জুটির সময় নেদারল্যান্ডসকে মনে হচ্ছিল ক্লান্ত।

তবে ঠিকই ঘুরে দাঁড়ায় ডাচরা। ৫২ বলে ৬৮ রান করা শাকিলকে ফিরিয়ে আরিয়ান দত্ত সে জুটি ভাঙার পর হায়দরাবাদে চলে ডি লিডির শো। একই ওভারে ৬৮ রান করা রিজওয়ান ও ইফতিখার তাঁর শিকার। ১৮৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন শাদাব ও নেওয়াজ। ৭০ বলে দুজন যোগ করেন ৬৪ রান। শাদাবের পর হাসানকে পরপর ২ বলে থামিয়েছিলেন ডি লিডি। তবে হায়দরাবাদকে ঠিক নিজের করে নিতে পারেননি তিনি।