২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

যে লেখা পড়তে চাইবেন না মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ

প্রচারের আলো থেকে নিজেদের দূরে রাখার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহপ্রথম আলো ফাইল ছবি

তাঁদের দুজনের জীবনের দুটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। কাদের কথা বলছি, সেটা শিরোনাম দেখেই বুঝে ফেলার কথা। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।

প্রথম ঘটনা প্রথমজন, মানে মুশফিকের। ২০১৩ সালে মুশফিকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গেল জিম্বাবুয়েতে সিরিজ খেলতে। বুলাওয়েতে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে আসেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। একটু পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে মুশফিকও হাজির। সিরিজ নিয়ে কথা বলার পর সবাইকে আরও একবার বিস্ময়ের সাগরে ভাসিয়ে মুশফিক বলে বসলেন, আর অধিনায়কত্ব করবেন না। অধিনায়ক হিসেবে ওটাই তাঁর শেষ সিরিজ।

হারের জ্বালা তো ছিলই; সঙ্গে বাইরের সমালোচনা, রাগ, ক্ষোভ, অভিমান মিলিয়েই ছিল মুশফিকের ওই ঘোষণা। কিন্তু একটা সফরের মধ্যে অধিনায়কের এমন কাণ্ড তো বিদ্রোহ করার মতোই ব্যাপার! মুশফিক তাতে সমালোচিত হলেন, কিন্তু পাল্টা জবাব দিলেন না।

২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ হারার পর অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন মুশফিকুর রহিম
এএফপি

পরের ঘটনাটা সেদিন মুশফিকের পাশে বসে থাকা মাহমুদউল্লাহর। এটাও জিম্বাবুয়েতে, ২০২১ সালের সফরে। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে এসে ড্রেসিংরুমেই সতীর্থ-সমাবেশ ডেকে বলে দিলেন, আর নয় টেস্ট ক্রিকেট। গুডবাই রেড বল।

মাহমুদউল্লাহর রাগটা মূলত ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর। তবু মাহমুদউল্লাহর আকস্মিক ঘোষণা সমালোচনার আগুন জ্বালল। বলা নেই, কওয়া নেই, তাঁর মতো অভিজ্ঞজন কী করে পারলেন খেলার মধ্যে এমন কাজ করতে!

দুটি আচরণের কোনোটিই পেশাদার ক্রিকেটারদের সঙ্গে যায় না। কোনো কারণে কারও মনে ক্ষোভ, হতাশা আসতেই পারে। কিন্তু সেসব উগরে দেওয়ার এ কোন ‘পলিসি’! মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ তবু সে পথেই হেঁটেছিলেন এবং সেটা এমন কাণ্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনেও।

২০২১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন মাহমুদউল্লাহ
বিসিবি

লেখার মূল বিষয় মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে নতুন করে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো নয়। তাঁদের ক্যারিয়ারের এটুকু ‘ফ্ল্যাশব্যাক’–এর প্রয়োজন পড়েছে আসলে এটা মনে করিয়ে দিতে যে বাংলাদেশ দলকে দেড় যুগেরও বেশি সার্ভিস দিয়ে যাওয়া এই দুই ক্রিকেটার ওই দুটি ঘটনা ছাড়া আর কখনো খুব বড় বিতর্ক বা আলোচনার জন্ম দেননি। কখনো তাঁদের নিয়ে হওয়া সমালোচনার পাল্টা নিতে তাঁরা ফোঁস করে ওঠেননি। মুশফিক দু-একবার সরব হলেও নীরব হতেও সময় লাগেনি। বিশেষ করে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে তো মনে হয় কোনো বিষয়েই তাঁর কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

বিতর্ক-সমালোচনার বাউন্সারের পাল্টা জবাব দিতে এখন ব্যাটটাকেই ভরসা মানেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। তাঁদের প্রশংসা করবেন? সেটাও তাঁদের খুব বেশি ছুঁয়ে যায় বলে মনে হয় না।

মাহমুদউল্লাহ আরও চুপ। ফর্ম নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা, দল থেকে বাদ পড়া, হঠাৎ টেস্ট খেলা ছেড়ে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক—এসব বিষয়ে তাঁর মুখ থেকে কোনো জবাব, কোনো অভিযোগ কখনো ব্যক্তিগত আড্ডার বাউন্ডারি পেরিয়ে যায়নি। আসলে কয়েক বছর ধরে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের ক্রিকেটের নীরব প্রতিনিধি হয়েই আছেন। বাজে পারফরম্যান্স, ব্যর্থতা, সিনিয়রদের ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব—এসব নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট যে মাঝেমধ্যেই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময় পার করে, এ দুজন যেন সচেতনেই সেসব থেকে নিজেদের দূরে রাখেন। ডানে-বাঁয়ে না তাকিয়ে তাঁদের দৃষ্টি থাকে কেবলই সামনের মাঠে। দলের মধ্যেও তাই তাঁদের নিয়ে বিতর্ক নেই।

আরও পড়ুন

সমালোচনার কথা বাদ দিন, ইতিবাচক আলোচনাতেও যেন আজকাল এই দুই ভায়রাভাই তেমন উৎসাহ বোধ করেন না। নীরবে নিজেদের কাজটুকু করতে পারলেই তাঁরা তৃপ্ত। আর তা করতে না পারলে বেদনা তো বেশি তাঁদেরই হয়। কাজেই হাততালি ও গালমন্দ—কোনোটাই কানে না তুলে পরের দিনের কথা ভাবেন।

ব্যক্তিজীবনের বাইরের ব্রহ্মাণ্ডে অনুশীলন আর খেলা ছাড়া এই দুই ক্রিকেটারের জগৎ খুব বেশি বড় নয়। তাঁদের সদা সরব হয়ে থাকাও তাই চোখে পড়ে না। দুজনের কেউ–ই এখন পর্যন্ত সংসদ সদস্য হতে চান বলে শোনা যায়নি। তাঁদের সঙ্গে দলের কারও বিবাদ নেই। ড্রেসিংরুমে কার পেছনে কতজন অনুসারী আছে, সেই গুনতিও করেন বলে মনে হয় না। বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জন্য হাপিত্যেশ নেই। ‘এই সিরিজ খেলব না, ওই সফরে যাব না’ বলা ‘চুজি ক্রিকেটারদের’ কাতারে দুজনের কাউকেই ফেলা যাবে না।

এবারের বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ
প্রথম আলো

টেলিভিশন-বিলবোর্ডের কিছু বিজ্ঞাপনে তাঁদের চেহারা দেখা যায় বটে, তাই বলে ক্রিকেটার থেকে ‘মডেল’ হয়ে যাননি মুশফিক বা মাহমুদউল্লাহ। খেলোয়াড়ি জীবনের পরের জীবনের কথা ভেবে খেলার বাইরে যদি তাঁদের আয়ের কোনো উৎস থেকেও থাকে, সেগুলো এখন পর্যন্ত সংবাদের উপজীব্য বিষয় হয়ে ওঠেনি। ক্রিকেটার চেহারার বাইরে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর আর কোনো চেহারা তাই সাধারণের চোখে ভেসে ওঠে না।

এত বছর নির্ভরতার প্রতীক হয়ে খেলে, জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে এবং তারকাখ্যাতি নিয়েও তাঁরা আজ পর্যন্ত কেবলই ক্রিকেটার। তাঁদের জীবনের ব্রত শুধুই ক্রিকেট। মুশফিক বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পরিশ্রমী এক মানুষের চেহারা, অনুশীলন আর ফিটনেস ওয়ার্কও যাঁর অবসরের বিনোদন বলা যায়।

আরও পড়ুন

আর মাহমুদউল্লাহ মানে লড়াকু এক মানুষ, হার না–মানা মূর্তি। গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেটা তিনি দেখিয়েছেন। দেখাচ্ছেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও। এক বছরেরও বেশি সময় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির বাইরে থাকার পরও বিপিএলের খেলা দেখে তাঁকে ধরা হচ্ছে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে ‘অটোমেটিক চয়েস’। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে নির্বাচকদের ভাবনার তারে বেজে উঠেছে নতুন সুর।

ফিটনেসের ঘাটতি নিয়েও এবারের বিপিএলে খেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা
প্রথম আলো

এবার একটু মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর সমসাময়িক অন্য ক্রিকেটারদের দিকে তাকানো যাক। সোজা কথায় যদি বলি, ‘পঞ্চপাণ্ডব’–এর বাকি তিন পাণ্ডবের কথাই ভাবুন না! মাশরাফি আরও আগে থেকেই রাজনীতিতে, এ নিয়ে সংসদ সদস্য হলেন দুবার। সঙ্গে আবার খেলছেনও। তবে বিপিএলের চারবারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক এবার কিছুটা বিতর্কেই ফেলে দিয়েছেন নিজেকে। প্রশ্ন উঠেছে, এই ফিটনেস নিয়েও তিনি কেন খেলে যাচ্ছেন!

সাকিব আল হাসান তো যেখানে গিয়ে দাঁড়ান, সেখানেই একটা হুলুস্থুল বাধে। একে তিনি মহাতারকা; ফেসবুকে সাকিবের প্রবল সমালোচকও তাঁকে সামনে পেলে সেলফি তোলার সুযোগ ছাড়ে না। জীবনে বহুবার সোজাসাপটা কথা বলে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। বিজ্ঞাপনের বাজারে চড়া মূল্য তাঁর। কখনো কখনো তো ক্রিকেটার সাকিবের চেয়ে ‘মডেল’ সাকিবকেই বেশি ব্যস্ত দেখা যায়।

সাকিব আল হাসান সম্প্রতি রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। মাগুরা–১ আসন থেকে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছেন
প্রথম আলো

ব্যবসায়ী সাকিবই–বা বাদ যাবেন কেন! তামিমের সঙ্গে তিক্ত হয়ে পড়া সম্পর্কটাও মাঝেমধ্যেই তাঁকে নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দেয়। বেছে বেছে সিরিজ খেলতে চান বলে সাকিবকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঝামেলায় পড়তে হয় বিসিবিকে। এর মধ্যে আবার ঢুকেছেন রাজনীতিতে। সঙ্গে মাঠের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে সাকিবের ওপর থেকে পাদপ্রদীপের আলো কখনোই সরে যায় না। শত বিতর্ক আর চাপের মধ্যেও মাঠের পারফরম্যান্সে ঠিক রাখতে পারার গুণটা অবশ্য কেবল তাঁর মধ্যেই দেখা যায়।

তবে এবারের বিপিএল ব্যতিক্রম। চোখের সমস্যার কারণে ঠিকভাবে খেলতেই পারছেন না। অবশ্য তাতেও সাকিবের ওপর থেকে ক্যামেরা সরছে কই! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলে তো দেখা যাচ্ছে তাঁর জুতাও এখন একটা মহাখবর! ওয়ার্মআপে ফুটবল খেলছেন, সেই ফুটবলের বিশ্লেষণধর্মী ‘ম্যাচ রিপোর্ট’ চলে আসছে ফেসবুকে।

আরও পড়ুন

মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর দল ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালও যে বিপিএলটা মনের মতো খেলতে পারছেন, তা নয়। ওপেনার হয়েও এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ১২৯ রান করেছেন ১১৬.২১ স্ট্রাইক রেটে। আর খেলার বাইরে আলোচনা-সমালোচনা তাঁকে নিয়েও আছে। সাবেক কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর পর বর্তমান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গেও তামিমের সম্পর্ক তেমন উষ্ণ নয়।

সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা, বিশ্বকাপের আগে অবসরের ঘোষণা, নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎটাকে অস্পষ্ট রেখে দেওয়া—খেলার সমান্তরালে তামিম মানে এসব নিয়েও আলোচনা এবং সেসব আলোচনা প্রীতিকর হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রচারের আলো আর বিতর্কের কাঁটা তাই তাঁকেও কখনো ছাড়ে না।

এবারের বিপিএলে মুশফিক–মাহমুদউল্লাহর দল ফরচুন বরিশালকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তামিম ইকবাল
প্রথম আলো

সে তুলনায় মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে বলতে হয় ভিনগ্রহের মানুষ। ক্রিকেটীয় প্রতিভা আর সামর্থ্যে যদি অন্যদের চেয়ে তাঁরা কিছুটা পিছিয়েও থাকেন, অধ্যবসায়ী চেষ্টা আর শুধুই খেলাটার দিকে মনোযোগ ধরে রেখে সে সীমাবদ্ধতাকে তাঁরা অতিক্রম করে ফেলেন। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটার মিলিয়েও তাই এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রান (৫ ম্যাচে ২০২) মুশফিকের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছেড়ে দিলেও খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৩৯ বলে অপরাজিত ৬৮ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ৪৪ বলে ৬৩ রানের ইনিংস দুটিতে মুশফিক দেখিয়েছেন, এই সংস্করণের খেলাটা ভুলে যাননি এখনো।

পরশু সর্বশেষ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ২৪ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসে মাহমুদউল্লাহও জানান দিয়েছেন, বয়স যতই ৩৭ হয়ে যাক, টি-টোয়েন্টিতে এখনো বাতিলের খাতায় চলে যাননি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৬৫.০৭ হয়ে যাওয়ায় যদিও এই ম্যাচের ভূমিকাই বেশি, তবে টুর্নামেন্টের প্রথম দুই ম্যাচেও ব্যাট করেছেন পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে। মাহমুদউল্লাহর এবারের বিপিএল-ব্যাটিংয়ে নির্বাচক হাবিবুল বাশারের চোখে যেটা বিশেষভাবে ধরা পড়ছে, বড় শটগুলো এখনো তিনি মাঠের বাইরে নিতে পারছেন অনায়াসে।

নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশ সচেতন মাহমুদউল্লাহ
প্রথম আলো

দারুণ ফিটনেস লড়াকু মাহমুদউল্লাহর আরেকটি জবাব। দল থেকে যখন বাদ পড়েন, সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ছিল তাঁর ফিটনেস নিয়েই। পরিশ্রমের বিনিময়ে সেই প্রশ্ন তুচ্ছ প্রমাণ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের সম্ভাব্যদের সামনের সারিতে এখন মাহমুদউল্লাহ। আরেকজন মুশফিক, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দিয়েও ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার ক্ষুধা নিয়ে বেঁচে আছে তাঁর ক্রিকেটসত্তা।

প্রশ্ন হতে পারে, তাঁরা এত যে ভালো খেলছেন, ফরচুন বরিশালের তাতে লাভটা হচ্ছে কী? পাঁচ ম্যাচে মাত্র দুটিই তো জয়! হ্যাঁ, দলীয় ব্যর্থতার ভাগ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে কিছুটা নিতেই হবে। তবে সঙ্গে এটাও জেনে রাখা ভালো, বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের মতো ফরচুন বরিশালের ড্রেসিংরুমেও এ দুজনই তরুণদের জন্য সবচেয়ে বড় আদর্শ। কেবল ক্রিকেটকেই ধ্যানজ্ঞান করে এত বছর ধরে সামর্থ্যের পুরোটা নিংড়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যাওয়া চরিত্র যে বাংলাদেশের ক্রিকেটেই খুঁজে পাওয়া কঠিন!

বিতর্ক-সমালোচনার বাউন্সারের পাল্টা জবাব দিতে এখন ব্যাটটাকেই ভরসা মানেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। তাঁদের প্রশংসা করবেন? সেটাও তাঁদের খুব বেশি ছুঁয়ে যায় বলে মনে হয় না। আসলে কোথায় কী লেখা হলো, টক শোতে কে কী বলল—এসবে মনোযোগ দিলে যে নিজেরই ক্ষতি, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে অন্যদের দেখেও সেটা ভালো করে বুঝে গেছেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ।

ব্যাট দিয়েই যেন সবকিছুর জবাব দিতে চাইছেন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ
ফরচুন বরিশাল

এই যে দুজনকে নিয়ে এত বড় একটা লেখা, হয়তো এটি পড়তেও তাঁরা তেমন আগ্রহবোধ করবেন না। কারণ তাঁরা জানেন, ‘প্রচারেই প্রসার’ আর যা–ই হোক একজন ক্রিকেটারের বিজ্ঞাপনের ভাষা তো হতে পারে না! সেই ভাষা কেমন হতে পারে, অনেক আগে এই প্রতিবেদককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহমুদউল্লাহর বলা কথাতেই তা ছিল। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সেবার মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, আকাশে চাঁদ উঠলে তো সবাই এমনিতেই দেখবে।

আসলেই কি তা নয়?