স্ত্রী হিলির ব্যাট দিয়েই খেলছেন স্টার্ক
স্ত্রীর ব্যাট দিয়ে টেস্ট খেলা—এমন সৌভাগ্য কজন পুরুষেরই–বা হয়! মিচেল স্টার্কের সেটি হয়েছে এবং সেটি বেশ কিছুদিন ধরেই।
ক্রিকেটে অন্যতম আলোচিত যুগল মিচেল স্টার্ক ও অ্যালিসা হিলি। এ মুহূর্তে দুজনই আছেন ইংল্যান্ডে। অস্ট্রেলিয়া পুরুষ দলের হয়ে অ্যাশেজ সিরিজে খেলছেন স্টার্ক, নারীদের অ্যাশেজে তো অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্বই দিচ্ছেন তাঁর স্ত্রী হিলি। এ অ্যাশেজেও স্টার্কের কাছে আছে হিলির একটি ব্যাট।
ব্যাটটি দিয়ে সাত মাস ধরেই টেস্ট খেলছেন স্টার্ক, এমনটি নিজেই জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া পেসার। কেন হিলির ব্যাট বেছে নিয়েছেন, সে ব্যাখ্যাও দিয়ে এ বাঁহাতি বোলার বলেছেন, ‘এটা একটু হালকা।’
আগে যে ব্যাটটি ব্যবহার করছিলেন, সেটি একটু ভারী ছিল। কেন হালকা ব্যাটের প্রয়োজন পড়ল, স্টার্ক তাঁর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘(দক্ষিণ আফ্রিকার) আনরিখ নর্কিয়া গ্রীষ্মজুড়েই বেশ দ্রুতগতিতে বোলিং করছিল। ফলে হালকা একটি ব্যাট ব্যবহার করেছি।’
হিলির ব্যাটটি অবশ্য ঠিক চেয়ে নেননি স্টার্ক। ঘরে থাকা কিছু ক্রিকেট কিটের ব্যাগ পরিষ্কার করছিলেন স্টার্ক, সে সময় কোনো একটি সফরে বাইরে ছিলেন হিলি। সেখানেই হিলির ব্যাগে তিনটি ব্যাট খুঁজে পান স্টার্ক, যেগুলোর খবর নাকি হিলি জানতেনও না। স্টার্ক এরপর হিলিকে ফোন করে বলেন, ‘তুমি কি জানো ব্যাগে তিনটি ব্যাট আছে?’ হিলি তা জানতেন না।
এরপরই বার্তাটি দেন স্টার্ক, ‘এখন দুটি আছে তোমার ব্যাগে। আরেকটি আমার ব্যাগে!’
হিলির ব্যাট ব্যবহার ভালোই কাজে দিয়েছে স্টার্কের। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, চার বছরের মধ্যে টেস্টে যেটি সর্বোচ্চ ইনিংস তাঁর। এরপর অ্যাশেজে লর্ডস টেস্টে ৭২ বলও খেলেন।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যাট আদান-প্রদান অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগে স্টার্কের ব্যাট নিয়ে ২০১৬-১৭ মৌসুমে বিগ ব্যাশে খেলেছিলেন হিলি। ওই ব্যাট দিয়ে ৩৮ বলে ৫৫, ৩১ বলে ৪৬ রানের ইনিংসও খেলেছিলেন। স্টার্ক তা–ই মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার একটি ব্যাট নিয়েছিল সে। ফলে এখন ১-১ হলো।’
স্টার্ক ও হিলি—দুজনেরই স্পন্সর কুকাবুরা বলে সেদিক থেকেও কোনো ঝামেলা নেই। শুধু বাড়তি একটা গ্রিপ লাগিয়ে নিতে হয়েছে স্টার্কের। তবে হিলি যখন নিয়েছিলেন, তখন ব্যাটের হাতলের একটা অংশ কেটে ফেলেছিলেন। চাইলেও তাই পরে আর সেটি ব্যবহার করতে পারেননি স্টার্ক।
ইংল্যান্ডে ভিন্ন সূচির কারণে স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে থাকা হচ্ছে না তাঁদের। তবে দেখা তো হয়েছেই। আজ যেমন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলছেন হিলিরা। সেটি দেখতে ব্রিস্টলে যাওয়ার কথা স্টার্কের। এর আগে ট্রেন্ট ব্রিজে একমাত্র টেস্টের প্রথম দুই দিনও মাঠে ছিলেন স্টার্ক। অন্যদিকে স্টার্কদের প্রথম তিন ম্যাচের কিছু অংশে মাঠে ছিলেন হিলি।
হেডিংলি টেস্টের পর ভালো একটা বিরতিই পেয়েছে দুই দল। এ সুযোগে ইউরোপ ভ্রমণে গেছেন কেউ কেউ। ডেভিড ওয়ার্নার যেমন গেছেন প্যারিসে। এ ছাড়া উইম্বলডনে টেনিস দেখতে যাওয়ার কথা আছে স্টিভেন স্মিথের।
শুক্রবার ম্যানচেস্টারে অস্ট্রেলিয়ার ঐচ্ছিক অনুশীলন। পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন শুরু হবে আগামী রোববার। ১৯ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে শুরু চতুর্থ টেস্ট। অ্যাশেজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া।