নাসুমের ৫ উইকেট, হাবিবুরের শতক

ম্যাচসেরা নাসুমফেসবুক/বিসিবি

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগে কারা জায়গা করে নিচ্ছে, সেটা অনুমান করা যাচ্ছিল আগে থেকেই। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্রত্যাশিতভাবেই সুপার লিগে জায়গা করে নিয়েছে। টানা চার জয়ে দুইয়ে উঠে আসা শাইনপুকুর আছে এর পরই। ওদিকে আজ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৫ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে পয়েন্ট তালিকার তিনে উঠে এসেছে মোহামেডান। সুপার লিগের চতুর্থ ও পঞ্চম দল শেখ জামাল ও প্রাইম ব্যাংক।

যা একটু কৌতূহল ছিল সুপার লিগের ষষ্ঠ দল নিয়ে—গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স, নাকি লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ? আজ সিটি ক্লাবকে হারিয়ে ষষ্ঠ দল হিসেবে সুপার লিগে জায়গা করে নিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। দিনের আরেক ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে হারিয়ে মুখোমুখি লড়াই ও নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে রেলিগেশন লিগ এড়িয়েছে পারটেক্স। পয়েন্ট তালিকার শেষ তিন দল গাজী টায়ার্স, সিটি ক্লাব ও রূপগঞ্জ টাইগার্স খেলবে রেলিগেশন লিগ।

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: মোহামেডান

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের ৫ উইকেটের সুবাদে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১৩৫ রানে অলআউট করে দেয় মোহামেডান। ছোট্ট এই লক্ষ্য মোহামেডান টপকে যায় ২৩.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে। ওপেনার ইমরুল কায়েস অপরাজিত ছিলেন ৯২ রানে। ম্যাচসেরা নাসুম।

নাসুমের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় দলের আরেক স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। প্রথমে ব্যাট করা ব্রাদার্সকে দাঁড়াতেই দেননি এই দুজন। নাসুম ৫ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২২ রানে। মিরাজ ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুজনের ঘূর্ণিতে ৩৪.৩ ওভারে থেমে যায় ব্রাদার্সের ইনিংস। মাহমুদুল হাসান ও রাহাতুল ফেরদৌস ৪৫ রান করে করেছেন।

১৩৫ রানের জবাবে মোহামেডানকে ভালো শুরু এনে দেন ইমরুল ও রনি তালুকদার। তাঁদের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৬ রান। মোহামেডানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুত খেলা শেষ করার চেষ্টা ছিল। সেটি করতে গিয়ে উইকেটও হারিয়েছে দলটি। তবে ইমরুল টিকে থেকে ম্যাচ শেষ করে আসেন। তাঁর ৯২ রান আসে ৭১ বলে। ইমরুলের ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো ইনিংসের সৌজন্যে ৫ উইকেটে জিতেছে মোহামেডান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৩৪.৩ ওভারে ১৩৫ (মাহমুদুল ৪৫, রাহাতুল ৪৫, জাকিরুল ২৫; নাসুম ৫/২২, মিরাজ ৩/২৮)

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ২৩.২ ওভারে ১৪০/৫ (ইমরুল ৯২*, রুবেল ১৪; নূর ২/৫১, ওয়ালিদ ১/২১, রাহাতুল ১/২৪)

ফল: মোহামেডান ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাসুম আহমেদ।

আরও পড়ুন

সিটি ক্লাব: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স

ফতুল্লায় রান তাড়ায় বিস্ফোরক ব্যাটিং করেছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মারকুটে ব্যাটসম্যান হাবিবুর রহমানও। সিটি ক্লাবকে ৪৯.৩ ওভারে ১৮০ রানে অলআউট করে সে রান হাবিবুরের শতকের সৌজন্যে ২ উইকেট হারিয়ে ২৪.১ ওভারেই টপকে যায় গাজী।

সেঞ্চুরি করেছেন হাবিবুর রহমান
ফেসবুক/বিসিবি

পাওয়ারপ্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সিটি ক্লাব। সেখান থেকে তাদের আর ঘুরে দাঁড়াতে দেননি এবারের লিগের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি রুয়েল মিয়া। ৩ উইকেট নিয়ে তিনি গাজীর সেরা বোলার। সিটি ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেছেন ওপেনিংয়ে নামা হাসান। শেষ দিকে রাফসান আল মাহমুদের ৩৭ রানের ইনিংসে সিটির রানটা দেড় শ ছাড়ায়।

গাজী ইনিংসের চতুর্থ ওভারে অধিনায়ক মেহেদী মারুফকে হারালেও তিনে নেমে ম্যাচের ছবিটা পাল্টে দেন হাবিবুর। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের দ্রুততম শতক করা এই ডানহাতির ব্যাট থেকে আসে ৮১ বলে অপরাজিত ১০২ রান। ১০টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। আরেক ওপেনার আনিসুল ইসলাম করেছেন ৫০ বলে ৬১।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিটি ক্লাব: ৪৯.৩ ওভারে ১৮০/১০ (হাসান ৩৮, রাফসান ৩৭, রায়হান ২৫; রুয়েল ৩/১৯, হুসনা ২/২৩, মঈন ২/২৯)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ২৪.১ ওভারে ১৮১/২ (হাবিবুর ১০২*, আনিসুল ৬১; মইনুল ২/৮৬)

ফল: গাজী গ্রুপ ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হাবিবুর রহমান।

আরও পড়ুন

রূপগঞ্জ টাইগার্স: পারটেক্স

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে পারটেক্স। রূপগঞ্জের ৮ উইকেটে ২৫৯ রান ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৮.৫ ওভারে টপকে যায় জয়ী দল। রোমাঞ্চকর জয়ে রেলিগেশন এড়ানোর উল্লাসে মাতেন দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা।

ম্যাচসেরা তানভীর
ফেসবুক/বিসিবি

আগে ব্যাট করা রূপগঞ্জ জসিম উদ্দিনের ৮১ ও সোহাগ গাজীর ৬৭ রানে লড়াই করার পুঁজি পেয়ে যায়। পারটেক্সের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মোহর শেখ ও মুক্তার আলী। রান তাড়ায় পারটেক্সের শুরুটা ভালো না হলেও তানভীর হায়দার আর আহরার আমিন অর্ধশত করে আশা বাঁচিয়ে রাখেন। আহরার ৫৮ বলে ৫৮ রান করে আউট হলেও তানভীরের ৮০ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংসে ৭ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই জিতে যায় পারটেক্স। গাজীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন আবু হাসিম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রূপগঞ্জ টাইগার্স: ৫০ ওভারে ২৫৯/৮ (জসিম ৮১, সোহাগ ৬৭, সালমান ৪২; মুক্তার ৩/৫১, মোহর ৩/৬০)

পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৮.৫ ওভারে ২৬২/৭ (তানভীর ৭২*, আহরার ৫৮, রাকিব ৩৭; হাশিম ৪/৪৩, মামুন ২/৩৪)

ফল: পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব ৩ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তানভীর হায়দার।