ডাবল সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল প্রথম ইনিংসে। আফগানিস্তান দলের নির্বিষ বোলিংয়ে সেটি না করতে পারায় ১৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেও নাজমুলকে শুনতে হয়েছে এমন প্রশ্ন, ‘আরেকটু ভালো করা যেত না?’
নাজমুল অবশ্য এসব প্রশ্নের উত্তরে ঘুরেফিরে একটা কথাই বলেছেন, ‘যা হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট।’
কথাটা হয়তো বলার জন্যই বলা। কারণ, দ্বিতীয় ইনিংসে আরও একবার আফগান বোলারদের খেলার সুযোগ পেয়ে যে নাজমুলকে দেখা গেল, তাতে এই বাঁহাতির রানের ক্ষুধাটা আরও স্পষ্ট। আগের দিন ৬৪ বলে ৫৪ রানে দিন শেষ করা নাজমুল আজও দ্রুতগতিতে এগিয়েছেন তিন অঙ্কের দিকে। ১১৫ বল খেলে সেঞ্চুরি তুলে নেন, নাজমুলের এই সেঞ্চুরিতে চার ছিল ১৩টি, স্ট্রাইক রেট ৮৬.৯৬।
টেস্ট ক্রিকেটে নাজমুলের এটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। তাঁর চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ আশরাফুল, মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হকের। নাজমুল দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে একই ম্যাচে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন। মুমিনুল হক ২০১৮ সালে এই কীর্তি গড়েছেন। সেই জোড়া সেঞ্চুরির একটা ইতিহাসও আছে। মুমিনুলের সেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এসেছিল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর আগে যখন বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন হাথুরুসিংহে, তাঁর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল মুমিনুলের।
বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছাড়ার পর শ্রীলঙ্কার কোচ হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসে সেই মুমিনুলই জোড়া সেঞ্চুরিতে হাথুরুসিংহেকে জবাব দিয়েছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, আজ নাজমুল যখন সেঞ্চুরির উদ্যাপনে হাওয়ায় উড়লেন, তখন বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম থেকে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানালেন সেই হাথুরুসিংহে।
নাজমুলের প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরির সঙ্গে দ্বিতীয়টির বেশ মিল। প্রথম ইনিংসের মতোই যা খুশি তা করার মানসিকতা নিয়ে খেলেছেন এই বাঁহাতি। রান করার ধরনের ছিল অদ্ভুত মিল। প্রথম ইনিংসে কাভার ড্রাইভ আর পুল শটে সিংহভাগ রান করেছিলেন, আজও তাই। মিড উইকেট ও স্কয়ার লেগ থেকে নাজমুল ৪৩ রান করেছেন, কাভার ড্রাইভে এসেছে ২৫।
নাজমুল এই ইনিংস আরও বড় করার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ দল মিরপুর টেস্টে নিশ্চিত জয়ের পথে এগোচ্ছে। দলগত অর্জন যখন নিশ্চিত, তখন ব্যক্তিগত অর্জনের লক্ষ্যে খেলাই যায়। ভুল না করলে নাজমুল ছাড়িয়ে যেতে পারেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২১ সালে খেলা নিজের ক্যারিয়ার সেরা স্কোর ১৬৩ রানের ইনিংসকে। কে জানে, নাজমুল হয়তো সে লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন।