ব্যাটটা ছুড়ে মারলেন, ড্রেসিংরুমে ওঠার সিঁড়িতে ক্ষোভ ঝাড়লেন আরেকবার। যেভাবে আউট হয়েছেন, হারমানপ্রীত কৌরের অমন প্রতিক্রিয়া খুব একটা অতিরিক্ত মনেও হচ্ছিল না। ডাবলস নিতে গিয়ে ব্যাট ফেলেছিলেন, তবে পিচে আটকে যায় সেটি। ভারত অধিনায়কের ৩৪ বলে ৫২ রানের ইনিংস থামে তাতেই, ভারতের আশাও যেন শেষ ওখানেই।
কেপটাউনে প্রথম সেমিফাইনালে ১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা ভারতের হারমানপ্রীত যেন ফিরিয়ে আনছিলেন ২০১৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের স্মৃতি, যেদিন একাই তিনি খেলেছিলেন ১৭১ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত এবার হারমানপ্রীত পারেননি, ভারতও আটকাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াকে।
রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে ভারতকে ৫ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা সপ্তম ফাইনালে চলে গেছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে টানা তৃতীয় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে তারা মুখোমুখি হবে আগামীকাল ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে জয়ী দলের। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হেরেছিল ভারত, এবার থামতে হলো সেমিফাইনালেই।
রান তাড়ায় চতুর্থ ওভারের মধ্যেই ভারত হারায় ৩ উইকেট—শেফালি বর্মা, স্মৃতি মান্ধানার পর ফেরেন যস্তিকা ভাটিয়াও। তবে হারমানপ্রীত ও জেমিমার চতুর্থ উইকেট জুটিতে বেশ ভালো আশা জাগে ভারত। ডার্সি ব্রাউনের শর্ট বলে আপার কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে হিলির হাতে ধরা পড়েন জেমিমা, ২৪ বলে ৪৩ রানের দারুণ ইনিংস শেষ হয় তাতেই। আউট হওয়ার পর নিজের ওপরই ক্ষুব্ধ ছিলেন ভারতীয় ব্যাটার।
রিচা ঘোষকে নিয়ে অবশ্য ভারতকে টানছিলেন হারমানপ্রীত, সে জুটিতে ২৬ বলে উঠেছিল ৩৫ রান। তবে তাঁর উইকেটের পর দীপ্তি শর্মা ও স্নেহ রানার ইনিংস যথেষ্ট হয়নি ভারতের। শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২০ রান, তবে ভারত তুলতে পেরেছে ৫ রান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অ্যালিসা হিলি ও বেথ মুনির ওপেনিং জুটিতে শুরুটা একটু ধীরগতিরই হয় অস্ট্রেলিয়ার, পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রানের পর সে জুটিতে ৪৫ বলে ওঠে ৫২ রান। রাধা যাদবের বলে ২৬ বলে ২৫ রান করা হিলি স্টাম্পিং হলে ভাঙে সে জুটি। শিখা পান্ডেকে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ তোলার আগে অধিনায়ক মেগ ল্যানিংয়ের সঙ্গে মুনি যোগ করেন আরও ৩৬ রান। ৩৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংসে মুনি মারেন ৭টি চার ও ১টি ছক্কা।
মুনি অবশ্য আউট হতে পারতেন ৩২ রানে, তাঁর ক্যাচ সে সময় ফেলেন শেফালি বর্মা। ভারতের পিচ্ছিল ফিল্ডিংয়ের মাশুল দেওয়ার সেটিই অবশ্য শেষ নয়। ১ রানে দাঁড়িয়েই স্নেহ রানার বলে উইকেটকিপার রিচা ঘোষের হাতে জীবন পান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। ল্যানিং এদিন শুরু করেছিলেন বেশ ধীরে, প্রথম ২৭ বলে করেছিলেন মাত্র ২৮ রান। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন এরপরই, পরের ৭ বলে তোলেন ২১ রান।
অ্যাশলেই গার্ডনারের সঙ্গে ল্যানিংয়ের জুটিতে ৩৬ বলে ওঠে ৫৩ রান। ১৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে দীপ্তি শর্মার বলে বোল্ড হয়ে গার্ডনার ফিরলেও ল্যানিং অপরাজিত থাকেন শেষ পর্যন্ত। এলিস পেরির সঙ্গে তাঁর ৯ বলে ২৪ রানের জুটিতে একাই তোলেন ২১ রান। শেষ ২ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া তোলে ৩০ রান, শেষ ১০ ওভারে আসে ১০৩ রান।