বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর হোটেল রুমে শেবাগের সঙ্গী ছিল ‘প্রিজন ব্রেক’
১৬ বছর পেরিয়ে গেছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গ্রুপ পর্বেই ভারতের বিদায়ের ক্ষতটা যেন এখনো তরতাজা বীরেন্দর শেবাগের মনে। ওভাবে বিদায়ের পর দুদিন নাকি হোটেল রুম থেকেই বের হননি শেবাগ, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমন বলেছেন ভারতের সাবেক ওপেনার। তাঁর সময় কেটেছিল ‘প্রিজন ব্রেক’ দেখে।
২০০৩ বিশ্বকাপের রানার্সআপ ভারত পরের বিশ্বকাপে গিয়েছিল বেশ বড় আশা নিয়েই। তবে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের কাছে হেরে বসে দলটি। ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ‘হেভিওয়েট’ ব্যাটিং লাইনআপ, সে ম্যাচটি তারা হারে ৫ উইকেটে। পরের ম্যাচে বারমুডাকে উড়িয়ে দিলেও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬৯ রানে হেরে নিশ্চিত হয় ভারতের বিদায়।
২০০৩ সালে ফাইনালে হার নাকি ২০০৭ সালে গ্রুপ পর্বে বিদায়—কোনটি শেবাগকে বেশি পীড়া দেয়, ‘ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়ন’ নামের এক ইউটিউব শোতে এসে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘২০০৭ বিশ্বকাপ বেশি পীড়া দেয়। কারণ ২০০৭ সালে আমাদের দলটি বিশ্বের সেরা দল ছিল। কাগজে-কলমে বিশ্বকাপের আগে-পরে আপনি এমন দল খুঁজে পাবেন না।’
আগের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হেরেছিল ভারত, আর ২০১১ সালে দেশের মাটিতে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। মাঝে ২০০৭ সাল থেকে গ্রুপ পর্বে বিদায় তাই ভারতের ইতিহাসেরই অন্যতম বাজে ফল ছিল। শেবাগ ব্যাখ্যা করেছেন সেটিই, ‘আগের আসরে ফাইনালে খেলেছি, পরের আসরে বিশ্বকাপ জিতেছি। কিন্তু এ দলটি নিয়ে নয়। কারণ আমরা ৩টি ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই হেরেছিলাম, এরপর বিদায় নিয়েছিলাম।’
সেবার চার দলের গ্রুপ থেকে দুটি করে দল গিয়েছিল সুপার এইট পর্বে। ভারতের গ্রুপ থেকে পরের পর্বে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পরও যন্ত্রণার শেষ ছিল না শেবাগদের জন্য, ‘আরও বেশি পীড়া কী দেয় জানেন, সবাই ভেবেছিল ভারত পরের পর্বে যাবে। যখন গ্রুপ পর্ব শেষ হলো, দুদিনের বিরতি ছিল। কিন্তু যেহেতু হেরে গেছি, আমাদের টিকিট ছিল না। দুদিন আমাদের ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোব্যাগোতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কোনো কাজ ছিল না, অনুশীলন ছিল না, কিছুই করার ছিল না।’
বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল বিক্ষুব্ধ। কয়েকজন খেলোয়াড়ের বাসভবনেই হামলা হয়েছিল। তবে ত্রিনিদাদে শেবাগরা ছিলেন রুমবন্দী, ‘আমি রুমে কোনো রুম সার্ভিস ডাকিনি, হাউসকিপিংয়ের সার্ভিসও নেইনি। রুম থেকে বেরই হইনি। আমেরিকায় আমার এক বন্ধু ছিল, তার কাছ থেকে “প্রিজন ব্রেক” পেয়েছিলাম। ২ দিনে পুরো শো দেখে ফেলেছিলাম। অন্য কারও মুখ দেখিনি।’
২০০৭ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ভারতের সঙ্গে বিদায় নিয়েছিল পাকিস্তানও। বাণিজ্যিক দিক ক্ষতির মুখে পড়া আইসিসি এরপর থেকে বদলে ফেলে বিশ্বকাপের ফরম্যাটই। ২০১৯ সাল থেকে তো হচ্ছে ১০ দলের বিশ্বকাপ। এ বছরের বিশ্বকাপ হবে ভারতেই।