এবার কাটার-স্লোয়ারে মনোযোগ ইবাদতের
মাস ছয়েক আগেও ইবাদত হোসেনের নামের আগে ‘টেস্ট পেসার’ পরিচয় জুড়ে দেওয়া যেত। কিন্তু গত বছর বাংলাদেশ দলের জিম্বাবুয়ে সফরে যখন একের পর এক ক্রিকেটার চোটে পড়ছিলেন, তখন অনেকটা বাধ্য হয়েই ইবাদতকে দেশ থেকে উড়িয়ে নিতে হয়। অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচেই ইবাদত চমকে দিয়েছেন সিকান্দার রাজার উইকেট নিয়ে। রাজাকে যে সেই সিরিজে এর আগে আউটই করা যাচ্ছিল না!
ইবাদত টি-টোয়েন্টি ক্যাপ পেয়ে যান পরের মাসেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেকেই নেন ৩ উইকেট। দুই মাস আগেই যিনি ছিলেন টেস্ট বোলার, সেই ইবাদত এখন তিন সংস্করণেই বোলিং করছেন।
লাইন-লেংথে নিয়ন্ত্রণ এনে ইবাদত টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্য পাওয়া শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্যটা এসেছে তাঁর হাত ধরেই। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ৪৬ রানে ৬ উইকেটের ম্যাচ জেতানো স্পেলটা কার না মনে আছে!
কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮টি সাদা বলের ম্যাচ এবং এবারের বিপিএল ইবাদতকে বুঝিয়ে দিয়েছে, সাদা বলে তাঁর আরও অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। ভালো উইকেটে ভালো করার জন্য তাঁকে অস্ত্রাগার আরও সমৃদ্ধ করতে হবে।
আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিজের বিপিএল দল ফরচুন বরিশালের অনুশীলন শেষে এ উপলব্ধির কথা জানিয়ে ইবাদত বলছিলেন, ‘ভালো উইকেটে খেলা হলে যে ফাস্ট বোলারের স্কিল যত ভালো, সে সেখানে তত ভালো বোলিং করবে। ঢাকার উইকেট এবার খুবই ভালো ছিল। চট্টগ্রাম তো বরাবরই ভালো। ভালো উইকেটে যদি আমরা ভালো করতে পারি, তাহলে সামনের বিশ্বকাপে সেটা সাহায্য করবে।’
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত ইবাদতের স্বপ্ন এখন বিশ্বকাপে খেলা। এ বছরের শেষের দিকে ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ তো আছেই, পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় থাকছে।
সেখানে ভালো করতে যা করণীয়, ইবাদত এখন ভাবছেন সেটা নিয়েই, ‘এমন উইকেটে ভালো করতে হলে আপনার স্কিল থাকতেই হবে। যদি ইয়র্কার করেন তাহলে সেটা একদম নিখুঁত হতে হবে। যদি স্লোয়ার করেন, তাহলে সেটা নিখুঁত হতে হবে। আমার শক্তি হচ্ছে, আমি জোরে বল করতে পারি। আর আমার ইয়র্কারে একটু পারফেকশন আছে। সঙ্গে আমি কাটার নিয়ে কাজ করছি। আমি দুটি কাটারই পারি, কিন্তু অ্যাকুরেসিটা যেন আরেকটু ভালো হয়, সেটা নিয়ে কাজ করছি।’
কাটার বললে ইবাদতের সতীর্থ মোস্তাফিজুর রহমানের নামও চলে আসে। পরামর্শ নিচ্ছেন মোস্তাফিজের কাছ থেকেও, ‘মোস্তাফিজ তো কাটার ভালো পারে। ওর কাছ থেকে শিখছিলাম। ও আমার স্লোয়ার বাউন্সারের গ্রিপ বদলে দিয়েছিল। এটাতে আমার উপকার হয়েছে।’