হেড-স্মিথদের পর অস্ট্রেলীয় পেসারদের তোপে চাপে ভারত
ট্রাভিস হেড যা করেছিলেন রবীন্দ্র জাদেজাও শুরু করেছিলেন সেভাবেই। চাপে পড়া দলকে টেনে তুলতে চেয়েছিলেন প্রতি-আক্রমণে। ক্রিকইনফোর ডেটা অনুযায়ী, হেডের নিয়ন্ত্রণ ছিল মাত্র ৬৯ শতাংশ। তবে দিনশেষে তাতে কিছু যায় আসেনি, হেডের ১৬৩ রান অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গেছে ৪৬৯ রানের দারুণ এক স্কোরে। আর জাদেজা থেমেছেন ৪৮ রানেই। ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দ্বিতীয় দিনও তাই নিয়ন্ত্রণ অস্ট্রেলিয়ার হাতেই। ১৫১ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে ভারত, দ্বিতীয় দিনশেষে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে তারা এখনো ৩১৮ রানে পিছিয়ে।
সকালের সেশনে অস্ট্রেলিয়ার ৪ উইকেট নিয়ে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিতই দিয়েছিল ভারত। হেডের বিপক্ষে শর্ট বলের পরিকল্পনা সফল হয়, ১৭৪ বলে ১৬৩ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে থামেন এ বাঁহাতি। শর্ট বলে অফ স্টাম্পের দিকে সরে গিয়ে খেলতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড হন তিনি। তাতেই ভাঙে স্মিথের সঙ্গে তাঁর ২৮৫ রানের জুটি, ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার যেটি চতুর্থ সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়া দিনটা শুরু করেছিল ৩ উইকেটে ৩২৭ রান নিয়ে। হেড ফেরেন দলকে ৩৬১ রানে রেখে।
মধ্যাহ্নবিরতির আগে ক্যামেরন গ্রিন, স্মিথ ও মিচেল স্টার্কও ফেরেন, তবে ২৩ ওভারে এ সময় ৯৫ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়া। আগের দিন ৯৫ রানে অপরাজিত স্মিথ অবশ্য ঠিকই ক্যারিয়ারের ৩১তম সেঞ্চুরিটা তুলে নেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে এটি তাঁর সপ্তম সেঞ্চুরি, ভারতের বিপক্ষে নবম। মধ্যাহ্নবিরতির পর অস্ট্রেলিয়াকে ৪৫০-এর ওপরে নিয়ে যায় অ্যালেক্স ক্যারি ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ৫১ রানের অষ্টম উইকেট জুটি। ১ রানের মধ্যে শেষ ২ উইকেট নেন সিরাজ, ইনিংসে যিনি নিয়েছেন ৪ উইকেট।
উইকেটে অসম বাউন্স অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের ঝামেলায় ফেলেছে, পরে সমস্যায় ফেলেছে ভারতীয়দেরও। রোহিত শর্মা ও শুবমান গিল শুরুটা আক্রমণাত্মক করলেও সে আক্রমণ টেকেনি বেশিক্ষণ। ৪ ওভারে ভারত তুলেছিল ২৪ রান। তবে রোহিতকে এলবিডব্লু করে প্রথম ব্রেকথ্রুটা দেন কামিন্স।
গিল ও চেতেশ্বর পূজারা—ভারতের পরের দুই ব্যাটসম্যানই বোল্ড হন বল ছেড়ে দিয়ে। গিল স্কট বোল্যান্ডের শিকার, অফ স্টাম্প নিরাপদ ভেবে বল ছেড়ে দিলেও বোল্যান্ডের সিম মুভমেন্টে ফিরতে হয় তাঁকে। পূজারা প্রায় একইভাবে ফেরেন ক্যামেরন গ্রিনের বলে। আর মিচেল স্টার্কের বাড়তি বাউন্সে ভড়কে যাওয়া বিরাট কোহলি ক্যাচ দেন স্লিপে। এরপর ফিরতে পারতেন রাহানেও, কামিন্সের বলে এলবিডব্লু হয়েছিলেন তিনি। তবে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের পা পপিং ক্রিজের বাইরে থাকায় সে দফা বেঁচে যান রাহানে।
রাহানের সঙ্গে জাদেজার জুটিই ভারতের পুনর্গঠনের কাজ করে একটু। পঞ্চম উইকেটে ১০০ বলে দুজন যোগ করেন ৭১ রান। এরপরই দৃশ্যপটে আসেন নাথান লায়ন। তাঁর টার্ন ও বাউন্সে পরাস্ত জাদেজা, স্লিপে স্মিথ নেন ইনিংসের দ্বিতীয় ক্যাচ। দিনের বাকিটা সময় রাহানে ও শ্রীকর ভরত অবিচ্ছিন্ন থেকেই পার করেন, তবে ভারতকে নিরাপদে নিয়ে যেতে তাঁদের যেতে হবে এখনো বেশ খানিকটা পথ।