বিপিএলে ব্যাটিং–স্বর্গ চায় বিসিবি
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনিতেই ব্যাটিং উইকেট দাবি করে। এ বছর যেহেতু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আছে, ১৯ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া এবারের বিপিএলে আরও বেশি করেই ব্যাটিং উইকেট চায় বিসিবি। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিপিএল টেকনিক্যাল কমিটির সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান রকিবুল হাসান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান মাহবুবুল আনাম।
সভা শেষে সাংবাদিকদের রকিবুল হাসান বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি তিন ঘণ্টার ক্রিকেট, মানুষ তিন ঘণ্টাই দেখতে চায়। দুই-আড়াই ঘণ্টা নয়। এটা বিনোদনের ক্রিকেট। আমরা কিউরেটর ও ভেন্যু ম্যানেজারদের বলেছি যেন এ বছরের উইকেট পুরোপুরি ব্যাটিং–বান্ধব হয়।’ টেকনিক্যাল কমিটির প্রত্যাশা, এবারের বিপিএলের প্রতি ম্যাচেই দুই শতাধিক বা দুই শর কাছাকাছি রান হবে।
গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান মাহবুবুল আনামও বলেছেন একই কথা, ‘টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদের খেলা। আমরা চাইব যেন প্রচুর রান হয়। ব্যাটসম্যানের দক্ষতা থাকতে হবে, বোলারেরও দক্ষতা থাকতে হবে।’ এ ছাড়া এবারের বিপিএলে ডিআরএস থাকবে সব প্রযুক্তি নিয়েই।
আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চোখ রেখেই বিসিবির চাওয়া, বিপিএলের ম্যাচগুলো হোক বড় রানের, ‘যে ধরনের উইকেট আইসিসি টুর্নামেন্টে থাকে, আগামী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সে রকম উইকেটই রাখার চেষ্টা করব। তবে আবহাওয়া, কন্ডিশন ইত্যাদির ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। চেষ্টা থাকবে উইকেট যেন আগামী বিশ্বকাপের সমতুল্য থাকে। যাতে আমাদের ব্যাটসম্যানরা বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে এই টুর্নামেন্টকে ব্যবহার করতে পারে।’
১৯ জানুয়ারি শুরু হয়ে বিপিএল শেষ হবে ১ মার্চ। ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের তিন মাঠে প্রায় দেড় মাসের এই টুর্নামেন্ট শেষ হতে না হতেই শুরু হবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। মেয়েদের ঘরোয়া ক্রিকেট, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটও চলবে একই সময়ে। আর নারী ও পুরুষ দলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো আছেই। মার্চেই বাংলাদেশে আসবে শ্রীলঙ্কা দল। এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। একই সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা।
যে কারণে আগামী ছয় মাস বাংলাদেশের কোনো মাঠই বিশ্রামের সুযোগ পাবে না। খেলার চাপ সামলানোর জন্য লাগবে অতিরিক্ত মাঠ। সেই চাপ সামলাতে বিসিবি মাঠ ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মাহবুবুল আনাম বলেছেন, ‘আগামী জুন পর্যন্ত আমাদের যত খেলা আছে, সব কটিকে যতটুকু সম্ভব ভালো উইকেটে আয়োজনের জন্য আমরা একটা সূচি করেছি। আমরা বেশ কিছু ভেন্যু চিহ্নিত করেছি, যেগুলো ব্যক্তিগত মালিকানার। বিসিবির তরফ থেকে সে ভেন্যুগুলো ভাড়া নিতে হবে। আমাদের যে পরিমাণ খেলা আছে, বিসিবির কাছে সে পরিমাণ মাঠ নেই।’
বিসিবির এমন উদ্যোগ নেওয়ার আরেকটা উদ্দেশ্য, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ওপর থেকে খেলার চাপ কমানো। গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে মিরপুরের উইকেট ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছিল। তবে আইসিসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিসিবি আপিল করার প্রক্রিয়ায় আছে বলে জানিয়েছেন গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, এই ডিমেরিট পয়েন্ট খুবই হতাশাজনক। আবহাওয়া আমাদের ভালো উইকেট করতে দেয়নি। খেলা শুরু হওয়ার ১০ দিন আগেও বৃষ্টি ছিল, ২ দিন আগে থেকেও বৃষ্টি ছিল। খেলা চলাকালেও আমরা কোনো সূর্যের আলো পাইনি। যে কারণে উইকেট প্রস্তুতি বিঘ্নিত হয়েছে। আমাদের এই পরিস্থিতি বিবেচনা করা হয়নি।’
মাহবুবুল আনাম আশাবাদী, সব দিক বিবেচনা করে আইসিসি শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ডিমেরিট পয়েন্ট তুলে নেবে, ‘আগেও এমন হয়েছে যে ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়ার পর যখন প্রমাণিত হয়েছে যে অন্যান্য পরিস্থিতির কারণে উইকেট প্রস্তুতি বিঘ্নিত হয়েছে, তখন ডিমেরিট পয়েন্ট তুলে নেওয়া হয়েছে।’