রুট বা কারও মতো নন, হ্যারি ব্রুক হতে চান হ্যারি ব্রুকের মতোই
নিজের সাফল্য তাঁর ওপর চড়ে বসুক, এমন চান না ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান হ্যারি ব্রুক। দেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়ার পর ২৫ বছর বয়সী ইংলিশ ব্যাটসম্যান বলেছেন, তিনি হতে চান হ্যারি ব্রুকের মতোই।
ট্রেন্ট ব্রিজে ব্রুকের ১০৯ রানের ইনিংস ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৪১ রানের জয় পেতে সহায়তা করেছে ইংল্যান্ডকে। আগামীকাল বার্মিংহামের এজবাস্টনে শুরু হতে যাওয়া তৃতীয় ম্যাচের আগে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকেরা। এটি ছিল ব্রুকের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি। এর আগের চারটি সেঞ্চুরিই এসেছিল দেশের বাইরে—পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
২৩ ইনিংস শেষে টেস্টে ব্রুকের গড় এখন ৬২.৫৪। ক্যারিয়ারে প্রথম ২৩ ইনিংস শেষে ব্রুকের চেয়ে বেশি গড় আছে শুধু ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যান ডন ব্র্যাডম্যানের (কমপক্ষে ১ হাজার রান)। তবে ব্রুক বলছেন, ‘আমি মাত্রই শুরু করেছি। এটি যেকোনো দিকেই মোড় নিতে পারে। আমি তো ২৫টি টেস্ট ইনিংসও খেলিনি এখনো। ফলে আগবাড়িয়ে কিছু ভাবতে চাই না।’
হ্যারি ব্রুকের মতে, ‘আমি শুধু টেস্ট ক্রিকেট উপভোগ করে যেতে চাই। আশা করি, এটিকে (গড়) উঁচুতেই রাখতে পারব। যদি না-ও পারি, তবে তাই হোক।’
ট্রেন্ট ব্রিজে ইয়র্কশায়ার সতীর্থ জো রুটের সঙ্গে ১৮৯ রানের জুটি গড়েন ব্রুক। রুটের এটি মৌসুমের প্রথম সেঞ্চুরি, ক্যারিয়ারে ৩২তম। আরেকটি হলেই ইংলিশদের মধ্যে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির তালিকায় অ্যালিস্টার কুককে ছুঁয়ে ফেলবেন রুট।
ব্রুককে ভাবা হয় ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ হিসেবে। টেস্টে এরই মধ্যে প্রায় ১২ হাজার রান করে ফেলা রুটের সঙ্গে তুলনাও তাই চলে আসে। ব্রুক বলছেন, ‘আমি নিজের মতোই একজন ব্যাটার হতে চাই। আমি হ্যারি ব্রুক হতে চাই, অন্য কেউ নয়।’
ব্রুক এটাও বলেছেন, ‘রুটি (রুট) সদ্যই টেস্ট রান সংগ্রাহকদের তালিকায় আটে এসেছে। ফলে তার ক্রিকেট জ্ঞান যদি না নিই, তাহলে তো আমি একটা বোকা।’
দেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে অবশ্য দারুণ খুশি ব্রুক, ‘আমি তো ওই পর্যায়ে চলেই গিয়েছিলাম, যেখানে ভাবনা চলে আসছিল, “ঈশ্বর, আমার ইংল্যান্ডে একটা সেঞ্চুরি দরকার!” গত বছর অ্যাশেজে বড় স্কোর গড়তে পারিনি, তবে পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি ছিলাম।’
সর্বশেষ অ্যাশেজে দেশের মাটিতে ৩৬৩ রান করেছিলেন ব্রুক। অমন পারফরম্যান্সের পর ভারত সফরেও দলের অন্যতম ভরসা হওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে পাঁচ টেস্ট সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন ব্রুক, পরে খেলেননি আইপিএলেও। যদিও প্রাথমিকভাবে ব্রুকের সরে যাওয়ার কারণ জানা ছিল না। পরে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ দাদির পাশে থাকতেই ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন ব্রুক। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সমর্থক দাদি পরে মারা যান।
ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরির পরও দাদি পলিনের কথাই আগে ভেবেছেন ব্রুক, ‘পরিবারের সামনে এটি আমার প্রথম সেঞ্চুরি এবং অবশ্যই অনেক ইংলিশ সমর্থকের সামনেও। দারুণ মুহূর্ত ছিল। আমি সেঞ্চুরির বড় উদ্যাপন নয়, শুধু মুহূর্তটা ধারণ করতে চাই। আমি দাদির জন্যই সব করেছি।’
এরপর ব্রুক বলেন, ‘সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের মুহূর্তেই মনে হয়েছে, “যাক, একটা সেঞ্চুরি।” কিন্তু একটু পর ভেতরে ভেতরে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি, যদিও সেটি দেখাইনি। আমি দাদির কথাই ভাবছিলাম।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাকি একটি টেস্টের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও তিনটি ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। তিন সংস্করণেই ইংল্যান্ড একাদশে নিয়মিত ব্রুকের কাছে টেস্ট ক্রিকেটই সবচেয়ে আগে, ‘আমি প্রতিটি টেস্ট ম্যাচই খেলতে চাই ইংল্যান্ডের হয়ে। টেস্ট ক্রিকেট এবং ইংল্যান্ডের হয়ে খেলাটা আমার কাছে সবার আগে।’