মাশরাফির দিকে ইঙ্গিত করে বিপিএল প্লেয়ার্স ড্রাফট নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন ইমরুল
কোনো রাখঢাক রাখলেন না ইমরুল কায়েস। বিপিএলে প্লেয়ার্স ড্রাফটে ‘সি’ শ্রেণিতে থাকা নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন বাংলাদেশের ওপেনার। আগামী বিপিএলের জন্য ৬টি শ্রেণিতে ১৮৮ জন স্থানীয় খেলোয়াড়ের নাম চূড়ান্ত করেছে বিসিবি।
সেখানে ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ‘বি’ শ্রেণিতে রাখলেও ‘সি’ শ্রেণিতে জায়গা পান ইমরুল। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মাশরাফি বিন মুর্তজার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন এই ক্রিকেটার।
আগামী বিপিএলে ‘এ’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ৬০ লাখ টাকা করে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের ড্রাফটের তালিকায় ‘এ’ শ্রেণির ১২ ক্রিকেটার লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ, শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল হোসেন, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ ও তাওহিদ হৃদয়।
‘বি’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ৪০ লাখ টাকা করে। এই তালিকায় আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, আফিফ হোসেন, এনামুল হক, হাসান মাহমুদ, জাকের আলী, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান, পারভেজ হোসেন, মেহেদী হাসান, তানভীর ইসলাম, তানজিদ হাসান ও তানজিম হাসান।
‘সি’ শ্রেণিতে থাকা ক্রিকেটারদের মূল্য ২৫ লাখ টাকা করে। এই তালিকায় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুমিনুল হকদের সঙ্গে আছেন ইমরুল, যা নিয়ে তিনি ক্ষোভ ঝেড়েছেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে।
তিনি লেখার শুরুটা করেছেন এভাবে ‘আসসালামু আলাইকুম। বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে ক্রিকেটারদের গ্রেডিং দেখে চিন্তা করছি, গ্রেডিংটা আসলে কিসের ভিত্তিতে করা হয়। জাতীয় দল, সারা বছরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স, বিপিএলের পারফরম্যান্স নাকি শুধু নাম দেখে করা হয়। বছরজুড়ে ক্রিকেটের আশপাশে না থাকা ক্রিকেটারের জায়গা হলো “বি” গ্রেডে।
অথচ গত বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা “সি” গ্রেডে। তবে কি শুধু নাম কিংবা চেহারা দেখেই বিপিএলের ড্রাফটের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়?’ ‘বি’ গ্রেডে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র মাশরাফিই এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত নন, আসলে বিপিএল ছাড়া কিছু খেলছেনই না।
বিপিএলে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইমরুল বলেছেন, ‘বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আমি ভালো করতে পারিনি। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের পর আমাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরে বিসিবির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা হলো, তখন বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বিপিএলে আমার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো ছিল না। যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি, তাই আমি কোন সংকোচ ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম।’
ইমরুল এরপর যোগ করেন, ‘তবে জাতীয় দলে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি। ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রানও করেছিলাম। কিন্তু এমন পারফরম্যান্সের পরও আমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। এমনকি জাতীয় দলের কোনো ক্যাম্পেও রাখা হয়নি। তবে কি বিপিএলে পারফর্ম না করলেই বাদ? কিন্তু পারফর্ম করলে, সেটাও তো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটের দুর্দিন কি তবে শেষ হবে না?’
গত মৌসুমে কুমিল্লার হয়ে ৫ ম্যাচে ১৫২ রান করেছিলেন ইমরুল। সব মিলিয়ে বিপিএলে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইমরুল। ১১১ ম্যাচে রান করেছেন ২৩৪০ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৭.২৯, গড় ২৩.৮৭। তবে এসবের বাইরে অন্য একটি পরিচয় আছে তাঁর। অধিনায়ক হিসেবে কুমিল্লাকে ৩টি শিরোপা জিতিয়েছেন এই ওপেনার।