প্রয়াত কিংবদন্তি লেগ স্পিনার আবদুল কাদিরের ছেলে উসমান কাদির। কাদিরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ২০২০ সালে জাতীয় দলে সুযোগ পান উসমান। বন্ধুর ছেলে বলে তদবিরের প্রয়োজন পড়েনি, ঘরোয়া প্রতিযোগিতার পারফরম্যান্সও বিবেচনা করা হয়নি—সে সময় এমন কথা শুনতে হয়েছে উসমানকে।
এখন আবার উসমানের পাকিস্তান দলে সুযোগ পাওয়ার পেছনে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। পাকিস্তান দলের অধিনায়ক বাবর আজমের ছোটবেলার বন্ধু উসমান। ২৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার একই সঙ্গে বাবরের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। উসমানের বোনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উমর আকমলের। আকমল আবার বাবরের চাচাতো ভাই।
স্বজনপ্রীতি কিংবা পক্ষপাতিত্বের কারণে পাকিস্তান দলে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন উসমান। উল্টো তাঁকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলে খেলা ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ক্রিকেট পাকিস্তানের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উসমান বলেছেন, ‘চকচক করলেই সোনা হয় না। বাইরে থেকে যেমনটা মনে হয়, ভেতরটা তেমন নয়। আমি কখনোই বাবরের কাছে গিয়ে বলিনি, আমাকে দলে নাও। সে অধিনায়ক হিসেবে পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করছে। দলের সব ভার বহন করছে। পুরো দেশ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। ওকে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটা খুব কঠিন কাজ।’
বাবরের চাওয়ায় নয়, বরং মিসবাহ উল হক তাঁকে প্রথমবার দলে ডেকেছিলেন বলে জানান উসমান, ‘মানুষ প্রায়ই দাবি করে বাবরের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কারণে আমি সুযোগ পাই। কিন্তু সবাইকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাবর আমাকে পাকিস্তান দলে নিয়ে আসেনি। ২০১৯ সালে মিসবাহ উল হক নির্বাচক ছিলেন। তিনিই আমাকে দলে ডাকেন।’
বন্ধুত্বের সম্পর্ক ভুলে দলের জন্য অবদান রাখতে খেলতে নামেন বলে মন্তব্য উসমানের, ‘সবার বোঝা উচিত, কেউ অধিনায়ক হলেই ক্ষমতা দেখাতে পারে না। চাইলেই নিজের পছন্দের খেলোয়াড়কে দলে নিতে পারে না। বাবর আমার বাল্যবন্ধু। তবে সেটা মাঠের বাইরে। খেলার সময় পূর্বপরিচিত বলে কিছু নেই। এ ধরনের (স্বজনপ্রীতির) অভিযোগ মানুষের মনে বাজে ধারণার জন্ম দেয়। দক্ষতা বা প্রতিভার কারণে নয়, বন্ধুত্বের কারণে দলে কাউকে দলে জায়গা দেওয়া হয়েছে—এমন দোষারোপ করা মোটেও ভালো ব্যাপার নয়।’
মিসবাহ ২০১৯ সালে প্রথমবার দলে ডাকলেও অভিষেকের জন্য আরও এক বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে উসমান কাদিরকে। পাকিস্তানের হয়ে এ পর্যন্ত ২৩ টি–টোয়েন্টি ও একটি ওয়ানডে খেলেছেন কাদির। রঙিন পোশাক–সাদা বলের দুই সংস্করণ মিলিয়ে নিয়েছেন ৩০ উইকেট। ২৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনারের দাবি, তাঁকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়নি। নিয়মিত একাদশে থাকলে আরও অবদান রাখতে পারতেন, ‘আমাকে নিয়মিত সুযোগ দেওয়া হয়নি। এক বা দুই ম্যাচ খেলিয়েই বসিয়ে রেখেছে। দলে সুযোগ পাওয়ার আশা আর করি না। আমি খেলা চালিয়ে যাব কি না, তা–ও জানি না।’