আইপিএলে ধারাভাষ্যকার স্মিথ কি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে আর এই সংস্করণে ম্যাচ নেই অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজই ছিল সর্বশেষ। বিশ্বকাপের দল ঠিক করতে আইপিএলে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিবেচনা করার কথা তাই আগেই জানিয়েছেন কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড ও নির্বাচক জর্জ বেইলি।
কোচ ও নির্বাচকের এমন ভাবনায় অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথের বিপদ কি আরও বাড়ল? কারণ, তিনি তো আইপিএলে দলই পাননি। যদিও তিনি আইপিএলে থাকবেন, তবে সেটা ধারাভাষ্যকার হিসেবে। এখানের পারফরম্যান্স নিশ্চয় বিশ্বকাপ দলে থাকতে স্মিথকে সহযোগিতা করবে না। এমন পরিস্থিতিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
স্মিথের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার ততটা ভালো নয়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁকে যেভাবে টি-টোয়েন্টিতে একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে ভাবা হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন তিনি করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৫৫ ইনিংসে ২৪.৮৬ গড় ও ১২৫.৪৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১০৯৪ রান। ফর্মও তাঁর সঙ্গে নেই। সর্বশেষ ১৮ ইনিংসে ফিফটি মাত্র একটি। সেটিও গত নভেম্বরে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে বিশাখাপট্টনমের ব্যাটিং-স্বর্গে।
নিউজিল্যান্ড সফরে তাঁকে সুযোগ দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে সেই সিরিজেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন স্মিথ। ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়েও দুই ইনিংসে করেছেন ১১ ও ৪ রান। ২০১২ সালে প্রথমবার আইপিএল খেলা স্মিথ এবার এই টুর্নামেন্টে দলও পাননি।
স্মিথ বাস্তবতা বুঝছেন, তবে এরপরও আশা ছাড়ছেন না। ক্রিকেট ডটকম এইউকে দলে থাকবেন কি না—এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, অপেক্ষা করি, দেখি। আমি চাপ নিচ্ছি না, ক্যারিয়ারে যা যেভাবে আছে, যা করতে পেরেছি, তাতে আমি সন্তুষ্ট। যদি বিশ্বকাপে দলের অংশ হই, তাহলে দারুণ হবে, আমি হতে চাই। যদি না পাই, না পেলাম।’
স্মিথ যোগ করেন, ‘ধারাবাহিকভাবে আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে পারিনি, দলে অনেকে এই সংস্করণে এখন বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটার। আমি পরিস্থিতি বুঝেছি, এখন অপেক্ষা করে দেখি কী হয়।’
স্মিথ টাকার জন্য টি-টোয়েন্টি খেলে যাচ্ছেন—অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য নাইটলির এক কলামে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার মিচেল জনসন এমন ভাবনার কথা জানিয়েছেন। এই সংস্করণ বাদ দিয়ে তাঁর টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনোযোগী হওয়া উচিত, এ কথাও বলেছেন তিনি।
সরাসরি জনসনের কথার কোনা জবাব না দিলেও স্মিথ আরও কিছুদিন টি-টোয়েন্টি খেলে যেতে চান, ‘আমি আরও কিছুদিন খেলতে চাই। সত্যি বলতে, আমি দুটি ভালো বলে আউট হয়েছি (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে)। এটা আমার জন্য আদর্শ ব্যাপার ছিল না। আমি যদি টি-টোয়েন্টি আরও বেশি খেলতে পারি, তাহলে আরেকটি ছন্দে আসতে পারব। অনেক দিন না খেলার পর যখন আপনি একটি বা দুটি ম্যাচের জন্য দলে আসেন, তখন আপনি ছন্দই খুঁজতে থাকেন। এই সংস্করণে যত ধারাবাহিকভাবে খেলব, তত ভালো খেলব।’
সর্বশেষ দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও স্মিথ ভালো করতে পারেননি। ২০২১ সালের আসরে ৪ ইনিংসে মাত্র ৯৭.১৮ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৬৯ রান। পরের বছর ঘরের মাঠে আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেন। সেবারও এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে ব্যাট হাতে হতাশ করেন—আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ রান করে আউট হন। বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই পারফরম্যান্সও নিশ্চয়ই আলোচনায় থাকবে।
আইপিএলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ধারাভাষ্য দেবেন স্মিথ। যা নিয়ে স্মিথ বলেছেন, ‘এটা ভিন্ন কিছু, নতুন অভিজ্ঞতা। খেলা নিয়ে কথা বলা উপভোগ করি। নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে উন্মুখ আছি।’