ভারতকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া
আগাম টিকিট কেনা দর্শকরা চিন্তায় ছিলেন, খেলাটা দেখতে পারবেন কিনা!
সেই চিন্তা ছিল বৃষ্টির কারণে ম্যাচ হওয়া নিয়ে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় যে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়াল, সেটি বরং না হলেই ভালো হতো বলে ভাবতে পারেন তারা। বিশাখাপত্তমের ম্যাচটিতে যে ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্রেফ উড়ে গেছে।
ব্যাটিংয়ে নেমে মিচেল স্টার্ক আর শেন অ্যাবোটদের তোপে ২৬ ওভারে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের ইনিংস। এর পর মোহাম্মদ শামি-সিরাজদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়ে মিচেল মার্শ-ট্রাভিস হেডরা ম্যাচ বের করে নেন মাত্র ১১ ওভারে!
৩৯ ওভার হাতে রেখে অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে। বল বাকি থাকার দিক থেকে এটিই ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হার। এর আগে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরেছিল ১৪.৪ ওভারের মধ্যে।
১০০ ওভারের ম্যাচ ৩৭ ওভারের মধ্যে জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১–১ সমতা এনেছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে বুধবার চেন্নাইয়ে।
বিশাখাপত্তমের ম্যাচটিতে ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় প্রথমার্ধেই। টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর মাত্র ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। শুরুটা হয় স্টার্কের করা প্রথম ওভারে শুবমান গিলের আউট দিয়ে।
শরীরের বাইরে বল খেলতে গিয়ে পয়েন্টে লাবুশেনের হাতে ক্যাচ দেন গিল। একইভাবে স্টার্কের অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন অধিনায়ক রোহিতও। জোড়া ধাক্কা সামলাতে নামা সূর্যকুমার প্রথম বলেই পড়েন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। খানিক পর একই পরিণতি হয় আগের ম্যাচে ৭৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা লোকেশ রাহুলেরও।
অপর প্রান্তে অ্যাবোট এসে হার্দিক পান্ডিয়াকেও তুলে নিলে ৮.৪ ওভারে ৪৮ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় ভারত। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম পাওয়ার প্লের ভেতরে চার বার তার বেশি উইকেট হারিয়েছে ভারত।
তবে কোহলিকে কেন্দ্র করে তখনো ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় ছিল ভারত। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের জায়গায় সুযোগ পাওয়া নাথান ইংলিস সে আশায় গুঁড়েবালি দেন। প্রথমে কোহলিকে ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে, এর পর রবীন্দ্র জাদেজাকে ফেরান অ্যালেক্স ক্যারির ক্যাচ বানিয়ে। কোহলি ৩৫ বলে ৩১ আর জাদেজা ৩৯ বলে ১৬ রান করে যান। ভারতের রান সংখ্যার এক শর ঘর পার করান মূলত অক্ষর প্যাটেল। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি ২ ছয় ১ চারে ২৯ বলে ২৯ রান করেন।
মোহাম্মদ সিরাজের স্টাম্প ভেঙে ম্যাচে ৫ উইকেট পূর্ণ করে নেন স্টার্ক।
ম্যাচে পাঁচ উইকেটের দিক থেকে স্টার্ক এখন ওয়ানডে ইতিহাসে যৌথভাবে তৃতীয়। ব্রেট লি ও শহীদ আফ্রিদির তাঁর ম্যাচে ৫ উইকেট এখন ৯টি। ১৩ ও ১০টি নিয়ে প্রথম দুইয়ে যথাক্রমে ওয়াকার ইউনিস ও মুত্তিয়া মুরালিধরন।
বোলিংয়ের দুরন্ত গতি ব্যাটিংয়েও ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার মার্শ ও হেড দুজনই ব্যাট চালিয়েছেন দ্রুত শেষ করার তাড়ায়। ১১তম ওভারের শেষ বলে জয় নিশ্চিত করার সময় মার্শ অপরাজিত ৩৬ বলে ৬৬ রানে, হেড ৩০ বলে ৫১ রানে।
৬টি করে ছয় ও চারে গড়া ইনিংসের কারণে ম্যাচসেরা হন মার্শ।